দিনাজপুর ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্ডেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক সেলিম হোসেন ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগে পিটিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের করে থানায় সোপর্দ করেছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম থেকে টেনে হেঁচড়ে লাঞ্ছিত ও শারীরিক নির্যাতন করে কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা।
অভিযুক্ত শিক্ষক সেলিম হোসেন দিনাজপুর সদরের কণাই গ্রামের বাসিন্দা ও ২০১৬ সালে এনটিসিআর এর মাধ্যমে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন।
বিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায় ২০২০/২১ অর্থবছরে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি কোচিং করানোর কথা বলে তৎকালীন অষ্টম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ছাত্রীর সাথে অসামাজিক কাজের জড়িয়ে পড়ার ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে ম্যানেজিং কমিটি সহ অন্যান্য শিক্ষকরা ইংরেজি শিক্ষক সেলিম হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। বরখাস্ত হওয়ার পর শিক্ষক সেলিম হোসেন আদালতের শরণাপন্ন হয়। চলতি বছরের প্রথম দিকে উক্ত শিক্ষককে যোগদান করানোর জন্য আদালত নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের আদেশ পাওয়ার পর প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ অভিযুক্ত শিক্ষক সেলিম হোসেনকে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে দেয়।
শিক্ষক সেলিম যোগদান করলেও বিদ্যালয়ের কোন ক্লাস তাকে দেওয়া হয় নাই। তবে বিদ্যালয়ে তখন থেকেই সে হাজিরা বইতে স্বাক্ষর করে চলে যেত। গত ৬ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ায় পর বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের কে জিম্মি করে ক্লাস তাকে দিতে বাধ্য করে। তখন থেকে নিয়মিত ক্লাস করে। এই ঘটনার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ধারণ করে বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা এবং অভিভাবকরা একত্রিত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সেলিম হোসেনকে ক্লাসরুম থেকে বের করে শারীরিক নির্যাতন সহ লাঞ্ছিত করে পার্শ্ববর্তী কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করে।
প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের সাথে কথা বলে জানা যায় ২০২০/২১ অর্থবছরে অভিযুক্ত শিক্ষক সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পাওয়া যায়। তাকে সেই সময় থেকে সাময়িক দরখাস্ত করা হয়েছিল। তারপর সে আদালতের আদেশ নিয়ে বিদ্যালয়ে যোগদান করলেও তাকে ক্লাস দেওয়া হয় নাই। সে জোর করে ক্লাস নিত তাকে আজকে ছাত্রীরা বিক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ে স্লোগান দিয়ে তাকে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছে। তার ব্যবহারিত একটি মোটরসাইকেল বিক্ষিপ্ত শিক্ষার্থীরা জ্বালিয়ে দেয়।
কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ হোসেন বলেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেলিম হোসেন নামক একজন শিক্ষককে থানায় সোপর্দ করে গিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি শিক্ষার্থীরা মামলা দিলে অবশ্যই মামলা নেওয়া হবে।