বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির ও স্বেচ্ছাচারিতা অভিযোগে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শাহিনুর রহমান চৌধুরী শাহিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ১২ ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ( ২৭ আগস্ট) বিকাল ৪ টায় বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান ফরজ আলীর নেতৃত্বে ইউপি সদস্যগন উপস্থিত হয়ে অনাস্থা প্রস্তারে স্বাক্ষরিত অভিযোগটি দাখিল করেন।
অভিযোগে জানা যায়, মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহিনুর রহমান চৌধুরী শাহিন নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর আমলে টিআর, কাবিখা, জিআর, কাবিটা, ভিজিডি, ভিজিএফ, এডিবি, লজিক, ইজিপিপি, পরিষদের রাজস্ব ইজারার অর্থ, ইউপি ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ফি, হাটবাজার, ১ শতাংশ খাতের অর্থ নিজের খেয়ালখুশি মতো ব্যবহার করে থাকেন। পরিষদের সদস্যের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে নিজের ইচ্ছামতো খরচ করেন। ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষর নকল করে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ তাঁর পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে দেন।
ইউপি সদস্যরা বীরগঞ্জ প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে জানান, সম্প্রতি মাটিয়াকুড়া আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের পুরাতন টিনের ঘর ভেঙ্গে নতুন করে বাড়ি নির্মানের কালে ৫৩ টি বাড়ির যাবতীয় টিন পিলার ১০ লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করে আত্মসাত করেছেন। বর্তমান সরকার আসার পর বিএনপি সমথিত এই চেয়ারম্যান নিজেকে অনেক কিছু ভেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে যখন তখন যাকে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, চড় থাপ্পড় সহ শারিরিক ভাবেও লাঞ্চিত করেন। ক্ষমতা দেখিয়ে আত্রাই নদী হতে অবৈধ ভাবে বালু বিক্রয়কে কেন্দ্র করে গত ২৭ আগষ্ট জনগনের সামনে গ্রাম পুলিশ মারধর করে আহত করেন।
লিখিত অভিযোগ দেওয়ার সময় ইউপি সদস্য মো: ফেরদৌস আলী, মো: হামিদুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান রায়হান, মো: শফিউল ইসলাম, মো: নিজামুদ্দিন, মো: এনামুল হক, মো: মাজিদুল ইসলাম, মো: আতিয়ার রহমান, সংরক্ষিত আসনের মহিলা ইউপি সদস্যা মোছা: নাসরিন আরা, মোছা: শাহিদা বেগম, মোছা: শাম্মি আক্তারসহ ইউপি সদস্য ও মহিলা সদস্যা গন উপস্থিত ছিলেন।
মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান শাহিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি এবং মুঠোফোনও রিসিভ করেন নাই।
বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে এলাহী মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির কথা নিশ্চিত করে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হয়।
আর ওই তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও ঘটনার সত্যতা সাপেক্ষে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
চেয়ারম্যান কর্তৃক গ্রাম পুলিশকে মারধর করার অভিযোগ পেয়ে ৩ সদস্যর কমিটি ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে।