ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
দিনাজপুরে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর
  • দিনাজপুর প্রতিনিধি:
  • ২০২৪-০৮-২৮ ০৪:৪৬:৩০

ভাইয়ের স্ত্রীর মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে  পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে দিনাজপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী  মো. আগা খাঁন। তার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ভূমি দখল, ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অভিযোগ মিথ্যে বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন। মৃত ছোট ভাই আজম খানের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী খন্দকার রুমানা ফেরদৌস যা কিছু রটাচ্ছে তা সত্য নয় বলেও তার দাবি।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন মৃত আজম খানের বড় ভাই মো. আগা খান। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি জেলা শহরের একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। আমার ছোট ভাই মৃত আজম খান ২০২০ সালে রংপুর প্রিজন সেলে সিভিল জেলখানায় থাকা অবস্থায় মারা যান। শহরের মালদহপট্টি উত্তরা ব্যাংক শাখায় আজম খানের ১১ কোটি ৭১ লাখ টাকার লোন ছিল। সেই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে ক্লাসিফাইড হয়। আমার বাড়ির পাশে অবস্থিত তার ১৬৪ শতক সম্পত্তি ও শহরের রাজবাটিতে অবস্থিত ১৯৯ শতক সম্পত্তি এবং অটোমেটিক রাইস মিল দিনাজপুর যুগ্ম জেলা জজ আদালত হতে ২০২১ সালের পর পর তিনবার নিলাম হয়। প্রথম ও দ্বিতীয়বার নিলামে খরিদ্দার পাওয়া যায় নাই। তৃতীয়বার আমি এবং আজিজুল ইকবাল চৌধুরী বৈধভাবে নিলাম খরিদ করি। আমরা সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছি। 

এই নিলামে অংশ নেওয়ার আগে মৃত আজম খানের স্ত্রী রুমানা ফেরদৌসী ও তার নাবালক পুত্র কন্যাদের বারবার নিজে এবং লোক মারফত ডাকি। রুমানা ফেরদৌসী বলে যে আমি আজম খানকে তালাক প্রদান করেছি এই নিলামে আমি অংশ নিবো না। আগা খান বলেছেন, আমার ছোট ভাই আজম খান জীবিত থাকা অবস্থায় রুমানা ফেরদৌসী আজম খানকে তালাক দিয়ে স্কুল পড়–য়া নাবালক নাবালিকা এক কন্যা ও এক পুত্রকে ফেলে স্বামীর বাড়ি হতে ১৫০ ভরি সোনা দানা ও ৫০ লাখ টাকা নিয়ে পিতার বাড়িতে চলে যায়। বৈধভাবে বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ আদালতের ৯০/১৭ অর্থ ঋণ মামলা ও ডিগ্রি জারি মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ও ব্যবস্থাপনায় নিলাম খরিদের পর ব্যাংক আমার ও ইকবাল চৌধুরী বরাবরে তপশীল বর্ণিত সম্পত্তি বৈধভাবে রেজিস্ট্রি প্রদান করেন। যার দলিল নং ১০৪, তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০২২। অতঃপর আমার ও ইকবাল চৌধুরী নামে সহকারী কমিশনার ভূমি অফিস হতে নামজারি হয়। এরপর ডিসিআর হয়, খাজনা প্রদান করি। অতঃপর অন্তত ১০ থেকে ১২ জনের নিকট এই সম্পত্তি বিক্রয় করি। আবার কারো কারও কাছে রেজিস্ট্রি ও রেজিস্ট্রি বায়না নামা সম্পাদন করি। যার দলিল নাম্বার ১০৫, তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০২২। পরবর্তীতে আজম খানের স্ত্রী রুমানা ফেরদৌসী পরপর পাঁচটি রিট মাননীয় হাইকোর্টে দাখিল করে। মাননীয় হাইকোর্ট তাকে বারবার টাকা পরিশোধের সুযোগ দেওয়ার পরও লোন পরিশোধ করিতে না পারায় ও আইনি জটিলতায় এখনো ২৯৫/২০২২ নং রিট মাননীয় হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। রুমানা ফেরদৌসী ওইসব রিটে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে, ইতিমধ্যে নিলাম যুগ্ম জেলা জজ আদালত মাধ্যমে হয়ে গিয়েছে তা রিট মামলায় বলেন নাই, তিনটি রিটের কথা স্বীকার করেছেন বাকি দুইটি রিটের কথা গোপন রেখেছেন। প্রত্যেকটি রিটে রুমানা ফেরদৌসী উল্লেখ করেছেন যে নিলাম প্রক্রিয়াধীন। বিজ্ঞ নিম্ন আদালতের মাধ্যমে নিলাম সম্পন্ন হওয়া সম্পত্তি ২/৩ বার হাত বদল হয়েছে বা হস্তান্তরিত হয়েছে। ক্রেতাগণ উক্ত সম্পত্তিতে ২০২২ সালের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস বা দোকানপাট করছে ইত্যাদি কথা রিটে উল্লেখ করেন নি। এছাড়াও দিনাজপুর শহরের নিমতলা মোড়ে খান হোটেল নামে একটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। উক্ত হোটেলের আমি আগা খান অর্ধেক এবং আমার ছোট ভাই মৃত আজম খান অর্ধেক অংশের মালিক। অথচ গুন্ডা প্রকৃতির মহিলা রুমানা ফেরদৌসী গোটা হোটেল এককভাবে দখল করে আছে, আমাকে বেদখল করে রেখেছেন তিনি। এদিকে গেল ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর রমানা ফেরদৌসী ও তাদের দোসররা ওই জমির খরিদ্দার জজ কোর্টের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। সেইসাথে বাড়ির মালামাল লুটপাট করে যা তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনীকে জানানো হয়। সবশেষে গেল ২৪ আগস্ট রুমানা ফেরদৌসী তার ছেলে মেয়ে ও তার সহযোগীরা প্রেসক্লাবে যে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন বা যে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি উক্ত সংবাদ সম্মেলনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি। 

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, নিলামের সম্পত্তি সম্পর্কে দেশের সর্বোচ্চ বিজ্ঞ আদালত হতে যে আদেশ আসবে সেই আদেশ আমি বা আমার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা তারা মানতে বাধ্য। বাধ্য না থাকবার কোনো কারণ নেই। জোর করে কেউ কারো সম্পত্তির মালিক হতে পারে না। রুমানা ফেরদৌসী এপিলেট ডিভিশন পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ে জিতলে আমরা সকলে জমির দখল ছেড়ে দিব। 

পরিশেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমারও সাথে থাকে ছেলে মেয়ে নাবালক নাবালিকা। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে সে ঢাকায় থাকে। আমি বা আমার সংশ্লিষ্ট কেউ জোর করে কারো সম্পত্তির মালিক হতে পারবে না। আমরা আইন মান্যকারী ব্যক্তি। আমি আগা খান এবং আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যগণ আমাদের যতটুকু সহায়তা করছেন জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে আরো বেশি সহায়তা দরকার। আমি আগা খান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও আদর্শের প্রতিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দসহ দেশের সচেতন ছাত্র সমাজের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মো. ইয়াসিন কবির, রক্তিম বসাক, রাকিবুল ইসলাম, সুলতান বাচ্চু।

পুলিশের অসাদাচরনের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
 শিশু রুকাইয়া রহমান আনহাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন
নীলফামারীর চিলাহাটিতে পেকিন হাঁস  পালন বিষয়ক খামার দিবস অনুষ্ঠিত