ভোলার লালমোহন সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দিন এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়বের পদত্যাগ ও তাদের দূর্ণীতির বিচার দাবীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল । সোমবার(১৯ আগস্ট) সকালে ওই দুই শিক্ষকের পদত্যাগ ও তাদের দূর্ণীতির বিচার দাবিতে ভোলা - চরফ্যাশন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন লালমোহন সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। এখবর পেয়ে স্কুলের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুল ইসলাম স্কুলে এসে তাদের কথা শোনেন এবং তিনি বলেন এটা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এখতিয়ার নয়। তার নিকট কোন লিখিত অভিযোগ আসলে তা নিয়ম অনুযায়ী বরিশাল ডিডি বরাবর লিখিত পাঠানো হলে তারা মন্ত্রনালয়ে পাঠালে মন্ত্রনালয় যে নির্দেশনা দিবে সে নির্দেশ মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করে নিয়ম অনুযায়ী সমস্যার সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন ‘দফা এক-দাবি এক, দুই শিক্ষকের পদত্যাগ’ করে তাদের দূর্ণীতির বিচার দাবী করেন।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা জানান, সরকারি বিদ্যালয় হওয়ার পরেও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর চেয়ে বিভিন্ন সময় অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে।ক্লাসে নিয়মিত ক্লাস করে না।কিছু শিক্ষক কোচিং-এ করে সেখানে পড়তে বাধ্য করেন। বিদ্যালয়ের জায়গা জমি, ল্যাবের প্রয়োজনীয় সামগ্রীও বিক্রি করে ফেলেছেন ওই দুই শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের জমি বিক্রি এবং লিজ দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তাদের দাবি; যোগ্যতা না থাকা স্বত্তেও দুর্ণীতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ হয়েছে। ভাস্কর নামে এক শিক্ষকের চাকরি থাকা সত্বেও তাকে চাকরিচ্যুত দেখিয়ে সহকারী প্রদান শিক্ষক তৈয়বের জামাই নাজমুল কে দীর্ঘ ১০ বছর পূর্বের নিয়োগ দেখিয়ে জামাইকে চাকরি দেয়। অথচ তার জামাই গত কয়েক মাস পূর্বেও এক মাদ্রাসা থেকে বেতন উত্তোলন করে। এ ছাড়া অনেকের কাছ থেকে চাকরি দিবে বলে চাকরি দেই নাই আবার অনেকের টাকাও ফেরত না দেয়ার অভিযোগ করছে ভুক্তভোগীরা। স্কুলের ঘড় থেকে ভাড়ার টাকা নিয়ে তারা দুইজন কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। তাই এখন তাদের পদত্যাগ করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগের ব্যাপারে মুঠোফোনে লালমোহন সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা এ কাজ করেছে। তিনি বরিশাল ডিডি অফিসে ছুটির দরখাস্ত দিয়েছেন।১৬ তারিখ থেকে স্কুলের শিক্ষক নাজিম মাওলানার নিকট লিখিতভাবে দায়িত্ব পালনের কথা জানান। সহকারী প্রধান শিক্ষ তৈয়বের জামাই নাজমুল কে সহকারী শিক্ষ হিসেবে অবৈধ নিয়োগের ব্যাপারে বলেন এটা তৎকালীন সভাপতি বাদল পাঞ্চায়েত সহ কিভাবে নিয়োগ দিযেছে তা তারা জানে।
অপরদিকে সহকারী প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়বের বক্তব্য জানতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। যার জন্য তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। স্কুল খোলার পর থেকে তারা দুই জন স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
এদিকে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের সাথে আলাপ করলে তারাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে প্রধান শিক্ষক যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পিয়ন পদে চাকরি করেছে তাকে কিভাবে স্থানীয় এমপির আত্বীয় বলে এই লালমোহনের মত ঐতিহ্যেবাহী স্কুলে নিয়োগ দিয়ে স্কুলের লেখাপড়া ধ্বংস করে দিয়েছে।আবার এমপির আরেক আত্বীয়কে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের নিয়োগের পরই স্কুলে লেখাপড়াতো হয়ই না তারা স্কুলের জায়গা, সম্পতি বিক্রি করে ঢাকায় লালমোহন বিশাল ধন সম্পদের মালিক বনে গেছেন। এমপির আত্বীয় হওয়ায় এতদিন কিছু বলতে না পারলেও এখন তাদের দূর্নীতি এখন সবার মাঝে আলোচনার বিষয়। স্থানীয় জনগন অন্তর্বতী সরকারের নিকট সঠিক তদন্তের মাধ্যমে স্কুলের সকল দূর্নীতির বিষয়ে ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন বলে দাবী করেন। উল্লেখ শিক্ষার্থীরা গত ১৫ তারিখ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত এ আন্দোলন করে আসছে পুরন না হলে আবারো আন্দোলন করার কথা জানিয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র স্কুলের সভাপতি মোঃ তৌহিদুল ইসলাম জানান এ বিষয়ে বরিশাল ডিডিকে জানানো হয়েছে তাদের নির্দেশ মোতাবেক ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।