দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) শুরু হয়েছে গণহারে পদত্যাগ। এতে শূণ্য হয়ে পড়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। দেশের সর্বোত্তরের সর্ব্বোচ এ বিদ্যাপীঠে ক্লান্তিলগ্ন চলছে। ৫১টি পদের বিপরীতে থাকা শিক্ষকদের মধ্যে ৪৯ জন ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন।
সর্বশেষ পদত্যাগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রেজিস্ট্রারের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি। তার পদত্যাগের ফলে একেবারেই প্রশাসন শূন্য হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
রেজিস্ট্রারের পদ থেকে পদত্যাগের বিষয়টি স্বীকার করে শনিবার দুপুরে প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, 'তিনি বৃহস্পতিবার ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। যেহেতু ভাইস চ্যান্সেলর নেই। সেহেতু ভাইস চ্যান্সেলরের পিএসের কাছে পদত্যাগপত্রটি জমা দিয়েছেন তিনি। পরে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে যিনি যোগদান করবেন তার কাছেই জমা হবে এ পদত্যাগপত্র।'
হাবিপ্রবি সূত্রে জানিয়েছে, রেজিস্ট্রারের পদত্যাগপত্রটি বর্তমানে ভাইস চ্যান্সেলর কার্যালয়ের সহ-রেজিস্ট্রার মহিউদ্দীন আহমেদের কাছে রয়েছে।
প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান বলেন, 'ভিসির পদত্যাগের পর অন্যান্য শিক্ষকরা প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করতে শুরু করায় আমিও পদত্যাগ করতে চেয়েছিলাম; কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাকে অনুরোধ জানায়, যাতে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত আমি পদত্যাগ না করি। আমি আবাসিক হলগুলোকে নিরাপদ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলে তুলে দিয়েছি। এরপর আমি পদত্যাগ করেছি।'
বৃহস্পতিবার হাবিপ্রবির বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আরও চার শিক্ষক। এরা হচ্ছেন- আইআরডির পরিচালক প্রফেসর ড. হারুন-উর রশিদ, গণসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. শ্রীপতি শিকদার, আইকিউএসইর পরিচালক প্রফেসর ড. বিকাশ চন্দ্র সরকার এবং পরিবহন শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. খালিদ হোসেন।
এ নিয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ৪৯ শিক্ষক।
এর আগে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর ওই রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যান হাবিপ্রবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান। পরে তিনি ৯ আগস্ট ভিসির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ থেকে গণহারে পদত্যাগ করতে শুরু করেন শিক্ষকরা।
প্রসঙ্গগত:গত দু'দিনে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে আইন-শৃংখলা বাহিনী তিনটি আবাসিক হলে অভিযান পরিচালনার করে। সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রায় পাঁচ শতাধিক দেশীয়(হাসুয়া,তলোয়ার,বল্লম,রামদা,চাপাতি,দা,কুড়াল,লোহার রড,লাঠি) অস্ত্র ও বেশকিছু নেশাজাতীয় দ্রব্য।
তার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী,শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।