বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ওয়ান ইলেভেনের সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল মাইনাস ফর্মুলা বাস্তবায়ন করার জন্য। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। ১০ মাস ২৫ দিন কারাবরণের পর ২০০৮ এর ১১ জুন অর্থাৎ আজকের দিনে মুক্তি পান তিনি। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আর এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে ক্রীড়ানকের ভূমিকা পালন করেছিলেন সে সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত অন্তত ১০ জন। শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের নীলনকশায় ভূমিকা রাখা সেই ষড়যন্ত্রকারীদের নিয়েই এই প্রতিবেদন-
জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ
জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ সে সময় সেনাপ্রধান ছিলেন। প্রথম দিকে তার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের খায়েশ ছিল। এজন্যই তিনি মাইনাস ফর্মুলা তৈরি করেছিলেন। এই ফর্মুলার মূল টার্গেট ছিলেন শেখ হাসিনা। এর অংশ হিসেবেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ওয়ান ইলেভেনের পুরো নীল নকশাটা তৈরি হয়েছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে। তিনিই দুই নেত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার প্রধান স্বপ্নদ্রষ্টা বলে অনেকে মনে করেন।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন তৎকালীন উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনিই শেখ হাসিনাকে আগে গ্রেপ্তার করা এবং দ্রুত গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
নূর আলী
ব্যবসায়ী নূর আলী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে গ্রেপ্তার করার পটভূমি তৈরীর ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছিলেন। সেটার কারণেই তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকার শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের সুযোগ পায়।
আজম জে চৌধুরী
ইস্টকোস্ট গ্রুপ এবং তৎকালীন প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরীও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির হাস্যকর, মিথ্যা এবং কুৎসিত মামলা দায়ের করেছিলেন। শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের নীলনকশায় তারও ভূমিকা রয়েছে।
মতিউর রহমান
সে সময় অধিকাংশ গণমাধ্যম একপেশে অবস্থান নিয়েছিল। এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকায় ছিল দুটি পত্রিকা। তারা বিরাজনীতিকরণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। দুটি পত্রিকা এবং এর একটির সম্পাদক মতিউর রহমান স্বনামে দুই নেত্রীকে সরে যেতে হবে বলে নিবন্ধ ছেপেছিলেন। শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা ছিল অনেক।
মাহফুজ আনাম
ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অসত্য, বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করেছিলেন যাচাই বাছাই ছাড়াই। এ সমস্ত খবরের কারণেই শেখ হাসিনার গ্রেপ্তার ত্বরান্বিত হয়েছিল।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজলুল বারী
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজলুল বারী সে সময় ডিজিএফআই এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারের বাস্তবায়নকারী চক্রের অন্যতম ছিলেন তিনি।
মেজর জেনারেল এ টি এম আমিন
মেজর জেনারেল এ টি এম আমিন বিহারি আমিন নামে পরিচিত। তিনিও শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের বাস্তবায়নকারী টিমের অন্যতম সদস্য ছিলেন।
জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরী
জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনিই দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হাস্যকর এবং কাল্পনিক কতগুলো মামলা দায়েরের উদ্যোগ নেন। শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের পেছনে তারও ভূমিকা আছে।
এই সমস্ত কুশীলবরা রাজনীতি থেকে শেখ হাসিনাকে চির বিদায় দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই লড়াইয়ে তারা পরাজিত হয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হয়নি। শেখ হাসিনা রাজনীতি থেকে বিদায় নেননি। বরং রাজনীতিতে তিনি আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছেন।