প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার সাড়ে আটমাস হলো। এরই মধ্যে ভাইরাসটি হানা দিয়েছে বিশ্বের ৩ কোটির বেশি মানুষের দেহে। আর প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৯ লাখ ভুক্তভোগী। যার অধিকাংশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ব্রাজিলের নাগরিক। তবে, আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থতা লাভ করেছেন দুই-তৃতীয়াংশ রোগী।
বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের নিয়মিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে ৩ লাখ ৭ হাজার ৪৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে করে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ৩ কোটি ২৫ হাজার ৬০৭ জনে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে নতুন করে প্রাণহানি ঘটেছে ৬ হাজার ২২০ জনের। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৭০৭ জনে ঠেকেছে।
অন্যদিকে, গত একদিনে সুস্থতা লাভ করেছেন ২ লাখ ৬১ হাজার ৭০৭ জন রোগী। এতে করে বেঁচে ফেরার সংখ্যা ২ কোটি ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ছুঁই ছুঁই।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম মানবদেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর দেশটিতে এ ভাইরাসে অস্বাভাবিকভাবে প্রাণহানি ঘটে। এরপরই চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউরোপের দেশগুলোতে সংক্রমণ মাত্রা ছাড়ায়। যেখানে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে এখনও ক্রমশ বেড়েই চলছে প্রাণহানি। আর ১১ মার্চ করোনাকে মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এখন পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে ভাইরাসটির শিকার ৬৮ লাখ ২৮ হাজারের বেশি মানুষ। এর মধ্যে না ফেরার দেশে ২ লাখ ১ হাজার ৩৪৮ জন ভুক্তভোগী।
সংক্রমণে দুইয়ে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতে গত একদিনেই ৯৭ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ লাখ ১৬ হাজার ছুঁই ছুঁই। প্রাণহানি বেড়ে ৮৩ হাজার ২৩০ জনে ঠেকেছে।
তৃতীয় সর্বোচ্চ করোনাক্রান্ত দেশ ব্রাজিলে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ লাখ ২১ হাজারের বেশি। প্রাণহানি বেড়ে ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়ায় সংক্রমিতের সংখ্যা ১০ লাখ ৭৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার ৯১৭ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনায়।
পেরুতে আক্রান্ত ৭ লাখ ৪৪ হাজারের বেশি। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৩১ হাজার ৫১ জন।
কলম্বিয়ায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৩৬ হাজারের অধিক মানুষের শরীরে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ৪৭৮ জনের।
উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোয় আক্রান্ত ৬ লাখ ৮১ হাজারের কাছাকাছি। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রাণ গেছে ৭১ হাজার ৯৭৮ জন মানুষের।
আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় সংক্রমিতের সংখ্যা ৬ লাখ ৫৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আর মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৭০৫ জনের।
নিয়ন্ত্রণে আসা স্পেনে আক্রান্তের ৬ লাখ ১৪ হাজার পেরিয়েছে। প্রাণ গেছে সেখানে ৩০ হাজার ২৪৩ জনের।
আর্জেন্টিনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৮৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। প্রাণ হারিয়েছেন ১২ হাজার ১১৬ জন ভুক্তভোগী।
চিলিতে করোনা হানা দিয়েছে ৪ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষের দেহে। এর মধ্যে ১২ হাজার ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামী প্রজাতান্ত্রিক দেশ ইরানে করোনার শিকার ৪ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ। প্রাণহানি ঘটেছে ২৩ হাজার ৬৩২ জনের।
ফ্রান্সে করোনার ভুক্তভোগী ৪ লাখ ৫ হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে প্রাণ গেছে ৩১ হাজার ৪৫ জনের।
যুক্তরাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ লাখ ৭৮ হাজার ছাড়িয়েছে। যেখানে মৃত্যু হয়েছে ৪১ হাজার ৬৮৪ জনের।
আর বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, গতকাল বুধবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৪২ হাজার ৬৭১ জন। এর মধ্যে প্রাণহানি ঘটেছে ৪ হাজার ৮২৩ জনের।