বরিশাল থেকে অপহৃত চতুর্থ শ্রেণির তিন মাদ্রাসাছাত্রীকে অক্ষত অবস্থায় মাদারীপুরে উদ্ধার হয়েছে। রবিবার (২৮ জুলাই) রাত ১১টার দিকে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে তাদের উদ্ধার করে হাইওয়ে থানা পুলিশ।
এর আগে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের আমানতগঞ্জের বেলতলা এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া মাহমুদিয়া মাদ্রাসা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। অপহৃতরা হলো বরিশালের গৌরনদীর হাবিবুর রহমানের মেয়ে হাবিবা আক্তার (১২), বাকেরগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণকাঠি গ্রামের টুটুল মৃধার মেয়ে নুসরাত জাহান (১১) ও বরিশালের চরবাড়িয়া এলাকার নুরুল ইসলামের মেয়ে তৈয়বা আক্তার (১২)।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যায় বরিশালের জামিয়া ইসলামিয়া মাহমুদিয়া মাদ্রাসার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল ওই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী হাবিবা, নুসরাত ও তৈয়বা। এ সময় অপরিচিত কয়েকজন যুবক চকলেটের কথা বলে ইজিবাইকে করে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে আসে তাদের। পরে রাজধানী ঢাকায় পাচারের উদ্দেশে ওই তিন মাদ্রাসাছাত্রীকে যমুনা লাইন পরিবহনের বাসে ওঠায়। তখন মাদ্রাসাছাত্রী হাবিবা বুঝতে পারে চক্রটি তাদের অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় পাশে থাকা এক যাত্রীর মোবাইল থেকে কৌশলে হাবিবা তার বাবাকে কল দেয়। পরে হাবিবার বাবা হাবিবুর রহমান পুলিশের জরুরি সেবা ট্রিপল নাইনে কল দিয়ে বিষয়টি জানায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ডোমরাকান্দি এলাকায় যাত্রাবিরতি দেয় পরিবহনটি। এ সময় কৌশলে ওই তিন ছাত্রী দৌড়ে একটি ইজিবাইকে ওঠে টেকেরহাট বন্দরের দিকে আসে। পরে তাদের ধাওয়া দিয়ে ধরার চেষ্টা করে অপহরণকারীরা।
এদিকে, ওই তিন ছাত্রীকে উদ্ধারে নামে বরিশালের গৌরনদী, মাদারীপুরের মোস্তফাপুর ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশ। পরবর্তীতে ইজিবাইকযোগে ওই তিন ছাত্রী টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ডে আসলে সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে হাইওয়ে থানা পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে পরিবারের সদস্য ও বরিশাল থেকে পুলিশ আসলে তাদের কাছে মাদ্রাসাছাত্রীদের হস্তান্তর করা হয়।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ মো. খায়রুল আলম জানান, তিনটি হাইওয়ে থানা পুলিশ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসায়। পরবর্তীতে টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তিন শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ বলেন, ‘মেয়ে তিনটি উদ্ধারের ব্যাপারে থানায় কেউ কোনও সংবাদ জানায়নি। লোকমুখে শুনেছি বিষয়টি। যেহেতু বরিশালের ঘটনা এবং হাইওয়ে থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেবেন।’