নীলফামারীতে ব্যাটারি চালিত ভ্যান চালক আব্দুস সামাদ ওরফে আব্দুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে প্রাণের ফ্রুটো জুসে চেতনা নাশক ঔষুধ মেশানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া হত্যার ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার এবং ছিনতাই হওয়া ভ্যানও উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা।
সোমবার দুপুরে হত্যাকাণ্ডে রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতার নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের অবহিত করেন পুলিশ সুপার মোকবুল হোসেন।
এতে পুলিশ সুপার মোকবুল হোসেন বলেন, জরুরী প্রয়োজন এবং অতিরিক্ত ভাড়া প্রদানের কথা বলে ৮জুলাই সকালে জেলা সদরের রামগঞ্জ বাজার থেকে ভ্যান চালক আব্দুস সামাদকে ডোমার উপজেলার ধরনীগঞ্জ বাজারে নিয়ে যান বাবু মিয়া নামে এক ব্যক্তি।
পুর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাবু মিয়ার সহযোগী মফিজুল ইসলাম জুসের বোতলে চেতনা নাশক মিশিয়ে ভ্যান চালককে খেতে দেন। পথিমধ্যে সামাদ অচেতন হয়ে পড়লে তাকে সোনারায় ইউনিয়নের কলমদর এলাকার একটি শশ্মানে ফেলে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যান তারা।
একই দিন বিকেলে পরিবারের লোকজন সামাদকে সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯জুলাই রাতে মারা যান তিনি।
মামলার প্রেক্ষিতে ডিজিটাল ও এনালগ পদ্ধতিতে তদন্তকাজ শুরু করে পুলিশের কয়েকটি ইউনিট। এক পর্যায়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার সুত্র ধরে প্রথমে গ্রেফতার করা হয় বাবু মিয়াকে।
পুলিশ সুপার বলেন, বাবুকে গ্রেফতারের মাধ্যমে ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও তার সহযোগী মফিজুল ইসলাম এবং ভ্যান ও ব্যাটারি ক্রয়কারী রফিকুল ইসলাম এবং ফারুক হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
নীলফামারী থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম জানান, বাবু মিয়ার বাড়ি জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুটিপাড়া, মফিজুল ইসলামের বাড়ি ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের কুখাপাড়া এবং রফিকুল ইসলামের বাড়ি দিনাজপুর জেলার আলোকদিহি ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া ও চিরিরবন্দর উপজেলার উত্তর পলাশবাড়ি এলাকার ফারুক হোসেন।
হত্যার শিকার আব্দুস সামাদ জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের নিত্যানন্দি বর্মতল এলাকার বাসিন্দা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ও মোস্তফা মঞ্জুর, নীলফামারী থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেফতার চার ব্যক্তির মধ্যে বাবু মিয়ার নামে অন্তত ১৬টি মামলা রয়েছে। ব্যাটারি চালিত রিকসা ভ্যান কিংবা সিএনজি চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনায় আর কারা জড়িত তাদের সনাক্তে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে।