যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনী সমাবেশ করতে গিয়ে শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় প্রাণঘাতী হামলার শিকার হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তার ওপর গুলি করা হয়। এতে ট্রাম্পের ডান কানের ওপরের অংশ ফুটো হয়ে যায়।
এ ঘটনায় মুখ খুলেছেন তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে একটি বিবৃতি শেয়ার করেছেন তিনি। এতে মেলানিয়া ট্রাম্প বলেন, আমাদের মনে রাখা উচিত মতামতের ভিন্নতা, নীতি, রাজনৈতিক খেলা কোনোটিই ভালোবাসার ঊর্ধ্বে নয়।
তিনি আরও লিখেছেন, ডোনাল্ডকে যখন গুলির আঘাতে পড়ে যেতে দেখছি তখন অনুভূতি হলো, আমার এবং ব্যারনের জীবনে বড়সড় পরিবর্তন আসতে চলেছে।
মেলানিয়া ট্রাম্প বলেন, আমরা সকলেই এমন একটি পৃথিবী চাই যেখানে সম্মান সর্বাগ্রে, পরিবার সবার প্রথমে থাকবে এবং ভালোবাসায় ভরা। পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করছে। যারা এই খারাপ সময়ে আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন, রাজনৈতিক গণ্ডি পেরিয়ে যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের ধন্যবাদ।
এদিকে হামলার ঘটনায় লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন প্রত্যাক্ষদর্শী। গ্রেইগ নামে ওই ব্যক্তি বিবিসিকে জানান, সমাবেশস্থল থেকে মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ ফুট দূরত্বে একটি ভবনের ছাদে এক ব্যক্তি আমার নজরে আসে। তার কাছে একটা বন্দুক ছিল। আমি তখনও ভাবছিলাম ট্রাম্প কেন এখনও বক্তব্য দিচ্ছেন। বিষয়টি নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক করার আগেই অনেকটা সিনেম্যাটিক স্টাইলে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকেন ওই হামলাকারী। আমি পাঁচটি গুলির শব্দ পেয়েছি।
গুলিবিদ্ধ হয়ে মঞ্চেই রক্তাক্ত অবস্থায় ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ হাত ওপরে তুলে বলে ওঠেন, ‘ফাইট, ফাইট, ফাইট!’ এরপর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার (সিক্রেট সার্ভিস) সদস্যরা ট্রাম্পকে দ্রুত একটি গাড়িতে তোলেন। ওই গাড়িতে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে দেওয়া হয়। চিকিৎসার পর ট্রাম্প এখন ভালো আছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্পকে যে রাইফেল দিয়ে গুলি করা হয়েছে তা এআর স্টাইলের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির। এটি দিয়ে কয়েক সেকেন্ডে ডজন ডজন গুলি ছোড়া সম্ভব।
হামলার পর ট্রাম্প সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে জানান, গুলিতে আমার ডান কানের ওপরের অংশ ফুটো হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে এটা অবিশ্বাস্য। ঈশ্বর আমেরিকার মঙ্গল করুন!
ট্রাম্পের ওপর এই হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের সহিংসতার কোনো জায়গা নেই। ফেডারেল এজেন্সিগুলো এই হামলার ঘটনার তদন্ত করছে।