নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় সুস্বাদু মিষ্টি লটকনের চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলছে। জেলার শিবপুর, মনোহরদী ও বেলাব উপজেলার পরেই পলাশে সুমিষ্ট লটকন চাষে এগিয়ে এসেছে ফল চাষীগণ।
লটকন ফল খেতে পছন্দের তালিকায় সবার। তবে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কাছে খুবি আকর্ষনীয় একটি ফল। লাভজনক থাকায় ফল ব্যবসায়ীরাও লটকন বিক্রিতে ঝুকেছে। দোকানে দোকানে শোভা পাচ্ছে লটকন ফলের ঝুড়ি। দৃর্শমান আগের তুলনায় ক্রেতাদের কাছে লটকনের চাহিদা অনেক বেড়েছে।
উল্লেখ লটকন চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাচ্ছেন চাষিরাও। আর্থিক লাভের কারণে চাষিদের মধ্যে লটকন চাষে উৎসাহের পাশাপাশি প্রতি বছরই এখনে বাড়ছে বাগানের সংখ্যা। বর্তমানে উপজেলার জিনারদীর সমতল লালমাটি এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত মন লটকন ঢাকা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে যাচ্ছে।
২০ বছর আগেও লটকনের স্বতন্ত্র বাগান ছিল না। তখন অন্যান্য ফলগাছের সাথেই দু-একটি গাছ লাগানো হতো। লটকন চাষিরা জানান, পূর্বসময়ে লটকনের তেমন চাহিদা ছিল না, দামও ছিল কম, সে কারণে কেউ লটকনের স্বতন্ত্র বাগান করার চিন্তা করত না। বর্তমানে চাহিদা ও মূল্য দু’টিই বেড়েছে। উপজেলার রাবান, বরাবো, কুরইতলী, কাঁটাবের ও বরাবো এলাকায় ফল চাষীরা বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে তুলেছেন লটকন বাগান। এই সব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রায় সব জায়গায়ই গাছে লটকন ঝুলে আছে থোকায় থোকায়। গাছে গাছে পাকা কাঁচা লটকনের সমাহার। নয়নাভিরাম মনকাড়া এক সুন্দর দৃর্শ। লটকন চাষী সমির দাস জানান, আম, কাঁঠাল আর আনারসের সাথে লটকন এখন আমাদের আর একটি অর্থকড়ি ফল। গ্রীষ্মকালীন ফল হিসেবে লটকন আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন এনে দিয়েছে।
অন্যান্য ফলের চেয়ে লটকনের ফলন অনেক বেশি হয় বলে কৃষকেরাও অধিক লাভবান হচ্ছেন। লটকন গাছের কান্ডে এবং ডালপালায় ফলে। গাছের পুষ্টির সুষমতা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গাছের গোড়া থেকে প্রধান কান্ডগুলোতে থোকায় থোকায় এত বেশি ফল আসে যে, তখন গাছের কান্ড বা ডাল দেখা যায় না।
নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মদ জানান, এ বছর নরসিংদী জেলায় প্রায় এক হাজার ৩৬৯ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ হয়েছে। মওসুমে এখানে প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিকটন লটকন উৎপাদন হয়, যার আনুমানিক দাম ৪০-৪৫ কোটি টাকা।