ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত কয়েক দিন ধরে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ১২ ঘণ্টায় ২১ সেন্টিমিটার বেড়ে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইসঙ্গে তীব্র ভাঙন দেখা দেখা দিয়েছে কিছু এলাকায়। এরই মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে শত শত ঘরবাড়ি।
এ ছাড়া যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার সকল নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। এতে প্রতিদিনই চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে কৃষকের শাকসবজি, বীজতলা ও রোপা আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, পানি বাড়লেও এই মুহূর্তে ভারী বন্যার আশঙ্কা নেই। পানি কয়েক দিন বাড়ার পর আবার কমতে থাকবে।
তিনি আরও জানান, আজ সকাল ৬টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৯১ মিটার। গত ১২ ঘণ্টায় ২১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৯০ মিটার)। অপরদিকে, কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৬০ মিটার। ১২ ঘণ্টায় ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৪.৮০ মিটার)।
এদিকে যমুনায় দ্রুত পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন, কাজিপুরের খাসরাজবাড়ি ইউনিয়নের সানবান্ধা ঘাট হতে বিশুরি গাছা ঘাট ও শাহজাদপুরের জালালপুর ইউনিয়নের পাঁচিল, হাট পাঁচিল, জালালপুর ও সৈয়দপুর গ্রামে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। কোনো কিছুতেই তার ভাঙন ও লন্ডভন্ড তাণ্ডব থামছে না। যমুনার তীব্র ভাঙনে জেলার তিনটি উপজেলার শত শত বসতবাড়ি ও হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জ পাউবো’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত পানি বাড়বে, তারপর কমার সম্ভাবনা রয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে কিছু এলাকায় ভাঙন রোধে জিও টিউব ফেলা শুরু হয়েছে। কাওয়াকোলার যে চরে ভাঙন শুরু হয়েছে ওই চ্যানেলে কাজ করার সুযোগ নেই। এ ছাড়া পানি বাড়া ও কমার সময় সাধারণত সব সময়ই ভাঙন দেখা দেয়।