দিনাজপুরে দুগ্ধ দিবসের আলোচনা সভায় শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য এক গ্লাস দুধের প্রয়োজন
- সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর
-
২০২৪-০৬-০৮ ১৭:৪৮:৩৫
- Print
ওয়ালিফিন জান্নাত রাফা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী প্রতিদিন দুধ খেতে পছন্দ করে। দুধ শারীরিক এবং মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে লেখাপড়ায় মনোযোগী করে এমন ধারণা থেকেই প্রতিদিন মায়ের হাতের এক গ্লাস দুধ তার চাই চাই। দিনাজপুরের সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত স্কুল মিল ফিটিং ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কথাগুলো শুনেই অনুপ্রাণিত হয়ে তাকিয়ে থাকেন দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড.আশিকা আকবর তৃষা।
আজ শনিবার দুপুর ২ টার দিকে দিনাজপুর সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় , বৈশ্বিক পুষ্টিতে দুধ অপরিহার্য, স্লোগানে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২৪ স্কুল মিল্ক ফিটিং ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. আশিকা আকবর তৃষা
প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায়ের উপস্থাপনায় অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্রী কুরআন থেকে তেলাওয়াত ও হিন্দু ধর্মালম্বী ছাত্রীর মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়েই অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।
চমৎকার কন্ঠে গান পরিবেশন বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। তারা নিজেরাই হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান পরিবেশন করেন।
দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তত্ত্বাবধায়ন ও বাস্তবায়নে বিদ্যালয়ের ৬ শতাধিক ছাত্রীদের মাঝে দুগ্ধ বিতরণ করা হয়। এবং দুধ মানুষের শরীর গঠন ও মানসিক বিকাশের যে অপরিসীম ভূমিকা রাখতে পারে এ বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা সভায় উঠে আসে।
আফরিদা তাসনিম নামে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীর সাথে কথা হয়। সে বলে দুধের যে এত পুষ্টিগুণ আছে আগে থেকে একটু জানলেও আজকে অতিথিদের মুখের বক্তব্য শুনে আরোও নিজের জ্ঞান সমৃদ্ধ হলো। দুধের বিকল্প যে অন্য কোন খাবার হতে পারে না। সেটি আজকে পরিষ্কার হয়েছে। প্রতিদিন খাবার তালিকায় দুধ রাখা হলেও আজকের পর থেকে বাধ্যতামূলক দুধের রাখার চেষ্টা করব।
প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায় বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ৬ শতাধিক ছাত্রী লেখাপড়া করলেও অধিকাংশ ছাত্রীর অভিভাবক দারিদ্র্য সীমার যারা নীচে বসবাস করেন। এই বিদ্যালয়ে বেশিরভাগ ছাত্রীরাই দারিদ্র পরিবার থেকে এখানে লেখাপড়া করে। তাই তাদের শরীর গঠনের জন্য পর্যাপ্ত দুধের প্রয়োজন হলেও অনেক পরিবার সেটি মেটাতে পারে না। দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে আজকে যে আমার বিদ্যালয়ের সকল ছাত্রীদের মাঝে দুগ্ধ বিতরণ করা হলো আমরা আসলে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ডঃ আশিকা আকবর তৃষা বলেন, দুধ অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। তাই আমাদের প্রতিদিন খাবার তালিকার মধ্যে অন্তত এক পেয়ালা দুধ রাখা প্রয়োজন। বিশেষ করে আমাদের কিশোর কিশোরীদের শরীর গঠন মানসিক বিকাশের জন্য দুধের গুরুত্ব অনেক বেশি। আমাদের দেশকে যারা আগামী দিনে নেতৃত্ব দিবেন। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আজকের এই শিশুরা আগামী দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তাই তাদের মানসিক এবং শারীরিক গঠন প্রয়োজন। তাই আমরা মনে করি দুধ অত্যন্ত পুষ্টিকর সমৃদ্ধ খাবার প্রতিটি ছেলেমেয়েদেরকে শরীর গঠনে উপযুক্ত সময়ের মধ্যেই দুধ খাওয়াতে হবে। তারা নিয়মিত খেলে শারীরিক এবং মানসিক পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসাবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে।
এই আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর সদর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার গোলাম কিবরিয়া। সারদেশ্বরী বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মোরসালিনাসহ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের আরোও কয়েকজন কর্মকর্তা।