নরসিংদীর পলাশে গরমে বিক্রি বেড়েছে গ্রীষ্মকালের পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ তালের শাঁস। প্রচন্ড গরমে পলাশ উপজেলা ও গ্রামের মানুষের কাছে এ ফলটি খুবই প্রিয়। বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ্যে মাসের অর্ধেক পর্যন্ত এ দেড় মাস ধুমছে তালের শাঁস বিক্রি চলে। বিক্রেতারা স্থানীয় ভাবে এগুলো সংগ্রহের পাশাপাশি দেশের নানা জায়গা থেকে আমদানিও করেন।
এ ফল খেতে শুধু সুস্বাধু নয়, এতে রয়েছে অবিশ্বাস্য পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্যের উপকারিতা। তালের শাঁসের গুনাগুন সম্পর্কে পুষ্টিবিদদের মতে, ১০০ গ্রামের একটি তালের শাঁসের ৯২.৩ শতাংশই থাকে জলীয় অংশ,ক্যালরি থাকে ২৯, শর্করা ৬.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৩ মিলিগ্রাম, খনিজ ০.৫ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি থাকে ৪ মিলিগ্রাম। মৌসুমি ফল হিসেবে তালশাঁস মানবদেহকে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
শনিবার সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, গ্রাম গঞ্জের মোড়, রাস্তাঘাট, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, সুস্বাধু এ ফলটির বিক্রেতারা ধারালো দা দিয়ে তাল কেটে তালের শাঁস বের করছেন। আর ক্রেতারাও অনেক আগ্রহ নিয়ে এগুলো কিনছেন। মৌসুমি অনেক ফলের সাথে এ ফলের কদর বেড়েছে। যার ফলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে খেতে দেখা যায় এ সুস্বাধু তালের শাঁস।
জিনারদীর চরনগরদী বাজারের সামনে তালশাঁস বিক্রেতা কফিল বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে, তখন বাজারে এটা পানি তাল হিসেবেই বিক্রি হয়। কেউ বলে তালশাঁস আবার কেউ বলে তালের চোখ, কেউ বলে তাল আশাড়ী।
তিনি বলেন, প্রতিটি তালের ভিতর দুই থেকে তিনটি শাঁস থাকে এবং প্রতিটি তাল গড়ে ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিটি তালের পাইকারি কেলা দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা। গরম পড়লে তালের শাঁস অনেক বেশি বিক্রি হয়। প্রতি বছর আমি এ মৌসুমে তালের শাঁস বিক্রি করে থাকি।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন তিনি ২ থেকে ৪ শতাধিক তাল কেটে বিক্রি করেন। এ বছর প্রচন্ড তাপদাহে মানুষ শরীরের ক্লান্তি দূর করতে তালের শাঁস খাচ্ছেন। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বেশি বিক্রি হচ্ছে।
তালশাঁস কিনতে আসা তানিয় খাতুন, আওলাদ হোসেনসহ কয়েকজন জানান, অনেক ফল যখন ফরমালিনের বিষে নীল, তখন তালের শাঁসে ফরমালিনের ছোঁয়া লাগেনি। এজন্য প্রতি বছর আমরা ও আমাদের পরিবারের সকলেই খায়। এগুলো খেতে নরম ও সুস্বাধু এবং শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর।