৫ বছরের মধ্যে সরকার পরিবেশ ও বায়ুদূষণ রোধে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে- তানভীর শাকিল জয়, এমপি
- নিজস্ব প্রতিবেদক:
-
২০২৪-০৩-২২ ০৭:১৮:১৮
- Print
২০ মার্চ সকালে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সেমিনার কক্ষে শিশু ও যুব ফোরামের আয়োজনে বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় সেভিং দ্য লাইফ অফ এলডারলি এন্ড ইয়ং চিলড্রেন থ্রু মিটিগেশন অফ এয়ার পল্যুশন এন্ড এনশিউরিং ‘ ফ্রেশ এয়ার ফর ব্রিদিং” শীর্ষক একটি অংশীজন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের সভাপতিত্বে উক্ত জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাসিক (দক্ষিণ)-এর পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো: হায়দার আলী (যুগ্মসচিব) এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা।
তানভীর শাকিল জয় বলেন, “আগামী ৫ বছরের মধ্যে সরকার পরিবেশ দূষণ ও বায়ুদূষণ রোধে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে। শুধুমাত্র পানি ছিটিয়ে বায়ুদূষণ রোধ করা সম্ভব নয়। আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি কার্যকরী সমাধানের জন্য কাজ করতে হবে, আমাদের বায়ুদূষণের উৎসগুলোকে বন্ধ করতে হবে। বর্জকে সম্পদের পরিণত করতে হবে যার আর্থিক মূল্য থাকবে, ফলে মূল্যবান বর্জ্য কেউ পুড়িয়ে লোকসান করবে না।
আন্তদেশীয় বায়ুদূষণ ইস্যুতে তিনি বলেন, এটি কেউ চাইলে সহজে নিরসন করতে পারবে না, বায়ু প্রবাহ কোন বাধা মানে না এটি প্রাকৃতিক নিয়মে চলে, জিওপলিটিক্যাল দূষণগুলো নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। পরিবহনের বায়ুদূষণ কমানোর জন্য তিনি জীবাশ্ম জ্বালানীভিত্তিক পরিবহন পরিহারের পরামর্শ দেন এবং পরিবেশবান্ধব ইলেক্ট্রিক ভিহিকল ব্যবহারের প্রতি উৎসাহিত করেন। তিনি আরও বলেন বর্তমান সরকার ইলেক্ট্রিক ভিহিকল নিয়ে কাজ শুরু করেছেন, এই খাতে ভ্যাট ট্যাক্স কমিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জৈব জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হচ্ছে যা বায়ুর গুণগত মান নষ্ট করছে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করা গেলে সবার জন্য নির্মল বায়ু এবং জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো: হায়দার আলী (যুগ্ম সচিব), বলেন, বায়ুদূষণ রোধের জন্য প্রাপ্ত বরাদ্দ সমূহ সঠিকভাবে তদারকি করতে হবে এবং তার যথাযথ ব্যবহার ও নিশ্চিত করতে হবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা বলেন, “বায়ু দূষণ রোধে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনুমোদনবিহীন যানবাহন রাস্তায় চলাচল না করতে পারে সেজন্য বিআরটিএ এবং ট্রাফিক পুলিশকে সমন্বিতভাবে কাজ কাজ করতে হবে”।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, “ব্যক্তিগত পর্যায়ের উদ্যোগসমূহ সরকারি কাজকে ত্বরান্বিত করতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে। আমরা সবাই কাজ করবো কিন্তু নেতৃত্ব দিবে সরকার”।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এর আইনজীবি এডভোকেট রাশেদুজ্জামান মজুমদার বলেন, “দূষণমুক্ত জীবন নাগরিক অধিকার, সংবিধানের ১৮ক তে এই অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকারের পক্ষে প্রতিজনকে ধরে ধরে আইন মান্য করানো সম্ভব নয়, জনগণকে নিজ উদ্যোগে এসব আইন সম্পর্কে জানতে হবে এবং মেনে চলতে হবে”।
পরিবেশ উদ্যোগ-এর গবেষণা সমন্বয়ক ইঞ্জি. মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী “পারিপাশ্বিক বায়ুদূষণ কমানোর পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে গৃহ অভ্যন্তরীণ বায়ুদূষণ হ্রাসের জন্য পরিবারিক পর্যায় থেকেই কাজ করার জন্য শিশু ও তরুণদের আহ্বান জানান”।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান নির্মল বায়ু আইন যেটি পূর্বে খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে তা অতিশীঘ্রই চূড়ান্ত প্রণয়নের জন্য তিনি দাবি জানান।
ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ডেপুটি ডিরেক্টর- ফিল্ড প্রোগ্রাম অপারেশন মঞ্জু মারীয়া পালমা বলেন- “সরকার, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসহ সকল সমমনা সংস্থাগুলোকে একসাথে কাজ করার জন্য যথাযথ পদ্দক্ষেপ নিতে হবে”।
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন প্রাইমারী, মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ে বায়ুদূষণ বিষয়টি পাঠ্যবইয়ের যুক্ত করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন”।
অনুষ্ঠানের আরও উপস্থিত ছিলেন, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর সহকারী অধ্যাপক মাহমুদা ইসলাম ও হুমায়ুন কবির, ক্যাপসের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মারজিয়াত রহমান, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর ডেপুটি ডিরেক্টর- ফিল্ড প্রোগ্রাম অপারেশন মঞ্জু মারীয়া পালমা, সিনিয়র ম্যানেজার আরবান প্রোগ্রাম- জোয়ানা ডি'রোজারিও, ডা. সন্তোস কুমার দত্ত, ডমিনিক সেন্টু গোমেজ, মীর রেজাউল করিম, মানস বিশ্বাস, জোনাস ক্লেরি কস্তা, শিশু ও যুব ফোরামের সদস্যবৃন্দ সহ অন্যান্য পরিবেশবাদী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।