ঢাকা শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
নির্বাচনী ইশতেহারে হয়রানিমূলক মামলা নিরসনের আশ্বাস স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুজ্জামানের
  • মজিবুর রহমান খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  • ২০২৩-১২-৩১ ০৬:৪০:৪০
নির্বাচনী ইশতেহারে হয়রানিমূলক মামলা নিরসনের আশ্বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) সংসদীয় আসনের হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাসিরনগর সদরের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন একরামুজ্জামান। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একরামুজ্জামান বলেন, 'বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ বিএনপির বিরুদ্ধে আবার বিএনপি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। যারা ক্ষমতায় আছে তারা এসব মামলা করছে। এসব রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা। এসব মামলা থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতে চাই।' পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধামকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা অনেক সময় বলি জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো। আসলে এটা আগুন জ্বালানোর জন্য না। তবে কেউ যদি প্যাসিফিক কাউকে উদ্দ্যেশ্য করে কিছু বলেন সেটা অন্য বিষয়।' এ সময় তিনি বলেন, 'মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের আত্মপ্রত্যয় ও উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী, অসাম্প্রদায়িক, প্রযুক্তি নির্ভর, বেকারমুক্ত, বৈষম্যহীন, সুশিক্ষিত নাসিরনগর প্রতিষ্ঠায় বিগত বিশ বছর যাবৎ আমার যে স্বপ্ন ও রাজনৈতিক অভিপ্রায় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপনাদেরকে সাথে নিয়ে সারা বাংলাদেশের জন্য অনুকরণীয় নাসিরনগর প্রতিষ্ঠা করবো।' এ সময় তিনি নাসিরনগরের শিল্প কারখানা গড়ে ৫০ হাজার যুবক যুবতীকে চাকরির ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেন।  ইশতেহার  শতভাগ মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি মাধ্যমিক ও মাদ্রাসাসহ অন্যান্য শিক্ষায় গুনগত মান নিশ্চিত করা হবে। জাতীয় নীতি মেনে সকল ইউনিয়নে নির্দিষ্ট দূরত্বে প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। নাসিরনগর কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স চালুর পাশাপাশি নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হবে। নাসিরনগর উপজেলায় বিশ্বমানের একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে যেখানে ধনী গরীব নির্বিশেষে সকলের চিকিৎসার পাশাপাশি এই হাসপাতালকে কেন্দ্র করে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরের পাশাপাশি, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করে গরীব রোগীদের জন্যে ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।  শিক্ষিত যুবসমাজ ও বেকারদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করে একটি বেকারমুক্ত নাসিরনগর উপহার দেব। পাশাপাশি কৃষক, শ্রমিক ও জেলে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর, বাস্তবমুখী ও মানসম্মত কর্মসূচি গ্রহন করা হবে। কৃষিতে সরকারি ভর্তুকির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। অনগ্রসর ব্যক্তি ও পরিবারকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। যে অসহনীয় যন্ত্রনা ও কষ্ট বুকে নিয়ে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় জর্জরিত হয়ে আপনারা দিনের পর দিন চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তা নিরসন করা হবে। বিগত বছরগুলোতে সারা দেশে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তাতে নাসিরনগর অনেক পিছিয়ে। এই শূন্যতাকে আমি আগামী পাঁচ বছরে পুরণ করে নাসিরনগরকে উন্নয়নের মহাসড়কে শামিল করার জন্য এলাকায় বাজার, রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হবে। উপজেলার সাথে সকল ইউনিয়ন বিশেষ করে ভাটি অঞ্চলের সাথে উপজেলা সদরের দ্রুত ও সহজ যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হবে। নদী ভাঙন রোধ ও নদীর গতি প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাতলপাড় বাজারকে আধুনিক নদী বন্দরে রূপান্তরের উদ্যোগ নেয়া হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নাসিরনগর কলেজ মোড় থেকে গোকর্ণ পূর্বভাগ- মাধবপুর সড়ক সম্প্রসারণ ও পুন:নির্মাণ করা হবে। উপজেলায় একটি আধুনিক ক্রিকেট ও ফুটবল ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি সকল ইউনিয়নে খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা হবে।  নাসিরনগরের সকল মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সর্বনাশা মাদকের বিস্তার রোধ ও মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি ও রাজনৈতিক কর্মীদের নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নাসিরনগরের সকল নদী ও জলাশয় জেলে সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত রেখে জেলে সমিতির মাধ্যমে মাছ ধরার ব্যবস্থা করা হবে। মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও বরাদ্দ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে। পরিবেশ ও জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষা করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করার জন্য ক্ষুদ্র, কারিগরি, মৎস্য ও কৃষিভিত্তিক উৎপাদনমুখী শিল্প গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হবে। পরিকল্পিত বনায়ন ও নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। নারী সমাজকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য শিক্ষার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের জন্য নানামুখী প্রশিক্ষন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।  স্থানীয় সরকারের সমস্ত বিভাগের সাথে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করে নাসিরনগরকে একটি মডেল উপজেলায় রূপান্তর করা হবে। শতভাগ স্যানিটেশন, সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সকল ইউনিয়নে কবরস্থান ও শ্মশান নির্মাণ ও সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য এবং সৌন্দর্যকে উপজীব্য করার প্রয়াসে নাসিরনগরের জলরাশিকে পর্যটন শিল্পে রূপান্তরের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশী উদ্যোক্তাদেরকে আগ্রহী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
শ্রমিকদের ধর্মঘটে অচল আশুগঞ্জ নদী বন্দর
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে  একজনের মৃত্যু
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে সকল সুবিধা দিত হাসিনা:  আলতাফ হোসেন চৌধুরী