করোনা মহামারীর কাছে ধরা পড়েছে গোটা বিশ্ব। জনজীবন থমকে আছে। এর মধ্যে বিশ্বের অন্তত ১০০টি দেশে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যয়ন কার্যক্রম। তাই বলে কি আটকে থাকবে পড়াশুনা! অনেকেই আবার দেশের বাইরে গিয়ে পড়তে চান, কিন্তু চলতি বছরে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না।
এ মুহূর্তে অনলাইনে বিনা মূল্যে কোর্স করার সুযোগ দিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কোর্স শুরু হয়েছে মে মাসে আবার কিছু কোর্স শুরু হচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বরে। তবে অন্য সময়ে কোর্সগুলো চালু থাকলেও করোনাকালে সুযোগটা বেশিই থাকছে।
এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগ্রহীরা ভর্তিও হয়েছেন। ক্লাসও করছেন। কোর্স শেষ হলে পরীক্ষা, তারপরই সনদ। আর বিশ্বব্যাপী চাকরির বাজারে সেই সব বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদের বেশ গুরুত্ব আছে।
নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি
করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা বন্ধ থাকায় কিছুটা সময় বেশি হলেও হাতে থাকছে শিক্ষার্থীদের। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে-হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, আরিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি, কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, ডিউক ইউনিভার্সিটি, জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, জনস হপকিন্স, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো, স্ট্যানফোর্ড, ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান, ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা প্রভৃতি। এগুলোর পাশাপাশি আরও আছে- ব্রিটেন, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, জার্মানি, চীন, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ মোট ৫০টি দেশের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়। যেগুলোতে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোর্সে অংশগ্রহণের সুযোগ। তালিকায় আছে ডিগ্রি কোর্সও। তবে সব কোর্সই কিন্তু বিনামূল্যের নয়। বেশ কিছু কোর্সের জন্য টাকা জমা দিতে হচ্ছে।
বিনামূল্যের অনলাইন কোর্সগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ডেটা সায়েন্স, কম্পিউটার সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, সোশ্যাল সায়েন্স, ইনফরমেশন টেকনোলজি প্রভৃতি। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এখানকার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট কলেজগুলোতেও এসব কোর্সে অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো
তবে প্রশ্ন হচ্ছে- এ কোর্সগুলো কতটা কাজে লাগবে, প্রভাব ফেলবে পেশাগত জীবনে। শিক্ষাবিদরা বলছেন- এ কোর্সগুলো কাজে লাগবে পেশাগত জীবনে। এ কোর্সগুলো সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর যোগত্য বাড়ায়। এগুলো বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জনেও কাজে লাগে। কোর্স শেষে শুধু যে নামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ জুটছে, তা কিন্তু নয়। যে সংস্থার হাত ধরে কোর্সগুলো হচ্ছে তার সঙ্গে গাঁটছড়া আছে বিশ্বের প্রথম সারির কোম্পানিগুলোর।
কোর্সেরা (www.coursera.org) আর এডেক্সের (www.edx.org) মতো ওয়েবসাইটগুলো অনলাইন কোর্স করার জন্য দারুণ জনপ্রিয়।
নিজেকে জানতে যে কোর্স: https://bit.ly/39F2R9h
কম্পিউটার বিজ্ঞান: https://bit.ly/2x4rDT3
ব্যবসায় শিক্ষা: https://bit.ly/2X8wNZ2
ভাষাশিক্ষা ও যোগাযোগ দক্ষতা: https://bit.ly/2UImFo6
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দ্য আর্ট অব পারসুয়েসিভ রাইটিং অ্যান্ড পাবলিক স্পিকিং’ কোর্সের মাধ্যমে ৮ সপ্তাহে দক্ষ বক্তা হয়ে ওঠার কৌশল শিখতে পারছেন। কোর্সের ঠিকানা: https://bit.ly/3dYcmnI
চাকরির জন্য যেসব দক্ষতা প্রয়োজন সে সম্পর্কেও এডেক্সের মাধ্যমে শিখতে পারবেন। বিজনেস কমিউনিকেশন, টিমওয়ার্ক ও কলাবুরেশন, ক্রিটিক্যাল থিংকিং ও প্রবলেম সলভিং, ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশনসহ নানা দক্ষতার বিভিন্ন কোর্স চালু আছে রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির। একেকটি কোর্স তিন সপ্তাহের করে। ঠিকানা: https://bit.ly/34bQ3Gv
কারিগরি শিক্ষা: https://bit.ly/2xRS3HC
এ ছাড়া মাইক্রোসফট এক্সেল, ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন সফটওয়্যারের ওপর অনলাইনে কোর্স শেখার সুযোগ আছে। ঠিকানা: https://bit.ly/34hccmU
যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে-
প্রতিদিন এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় বরাদ্দ করলে খুব সহজেই এসব কোর্সগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা যায়। সব অনলাইন কোর্সের ভাষা ইংরেজি। তাই ইংরেজি ভাষা প্রাথমিকভাবে বোঝার দক্ষতা থাকা বেশ জরুরি। সব অনলাইন কোর্সই বিনামূল্যে পড়ার জন্য নাম নিবন্ধন করতে পারবেন। সনদ নিতে চাইলে বাড়তি অর্থ আপনাকে জমা দিতে হবে। (সংকলিত)