ভোলার মেঘনা নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে জেলেদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১৯ জন জেলে আহত হয়েছে। ১ ট্রলার ডুবি,নিখোঁজ রয়েছে ২ জন। এ খবর পেয়ে নদীর পারের স্থানীয় জেলেরা আহত জেলেদের নদী থেকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরের পরে ভোলার মেঘনার মদনপুর পয়েন্টে এই ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ড নদীতে টহলে রয়েছে।
আহত জেলেরা জানান, সকালে ধনিয়া তুলাতুলি ঘাটের বশীর মাঝির মালিকানাধীন একটি মাছ ধরার ট্রলার মদনপুর পয়েন্টে জাল পেতে মাছ ধরছিলেন জেলেরা।
এসময় স্থানীয় মদনপুরের চেয়ারম্যান নান্নুর মালিকানাধীন ট্রলারের জেলেরা সেখানে গিয়ে জাল পাতেন। একই জায়গায় জাল পাতা নিয়ে দু’পক্ষের জেলেদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায় সংঘর্ষে জড়ান দুই গ্রুপ। এসময় নান্নু চেয়ারম্যানের মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে ভুট্টুর নেতৃত্ব বশীর মাঝির ট্রলারে থাকা জেলেদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলার খবর শুনে বশীর মাঝি একটি ট্রলার নিয়ে পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে গেলে নান্নু চেয়ারম্যান ট্রলারের থেকে হামলায় বশীর মাঝিসহ ১৬ জনকে আহত করেন। আহত দুপক্ষের ১৯ জেলে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন।
আহতরা হলেন, আবুল কাশেম (৪০), আবু মুছা (৪৫), বাপ্পী (২১), শাকিল (২১), জিহাদ (২২), জুন্টু (২৫), রাসেল (২৬), নুরুউদ্দিন (২৮), মনজু (৩৫), বিল্লাল মাঝি (৫৮), শান্ত (১৯), জিয়া (২৫), ইব্রাহিম (৩০), বশির মাঝি (৪০), রিদন (১৫), ফারুক (৩৫), কাশেম মাঝি (৪০)। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ২ জন। তারা হলেন, নুরুউদ্দিন (৪৫) ও আশরাফ আলী (২০)।
ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মদনপুরের বর্তমান চেয়ারম্যান নান্নু মিয়ার ট্রলার থেকে দস্যু বাহিনীর প্রধান ভুট্টু মাঝি, হারুন মাঝি, রহিম মাঝি, রুহুল আমিন, আব্দুল মাঝি ও খালেক মাঝি সহ সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের অবস্থা গুরুতর রক্তাক্ত হয়ে পড়ে। আমাদেরকে আটকে রেখে নির্যাতন করতেছিলো সন্ত্রাসীরা। এ খবর পেয়ে আমাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে স্থানীয় বশির মাঝি। নৌকার মাঝি বিল্লাল জানায় এ ঘটনায় আমাদের নৌকা ও জাল সহ প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মালামাল সন্ত্রাসীরা নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু বলেন, জেলেরা জেলেরা মারামারি করছে এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। অভিযুক্ত ভুট্টু মাঝি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমি নোয়াখালী ছিলাম।
ইলিশা নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকতার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, মদনপুরের মেঘনায় যে মারামারি হয়েছে আমরা বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক ভোলা সদর থানা থেকে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।