ঢাকা শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
দিনাজপুরের তরুনী অপহরন এবং পালাধর্ষন চাঞ্চল্যকর মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার
  • শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর:
  • ২০২৩-১১-১৯ ০৬:০৬:৫৬

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে তরুনী অপহরন এবং পালাধর্ষন মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে আইন প্রয়োগকারি সংস্থা।

আজ রবিবার (১৯: নভেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ এনিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে প্রেস ব্রিফিং করেছেন।

তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীর অবস্থান সনাক্ত করে র‍্যাব-৬ এর সহায়তায় শনিবার  ১৮ নভেম্বর ভোরে বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন নরেন্দ্রপুর মোল্লাপাড়া গ্রাম হতে এজাহার নামীয় ২নং আসামী আল-আমিন (২৬)  এবং চিরিরন্দরের রেলকলোনীতে মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে ( এজাহারে নাম নেই)  রুবেল ইসলাম (৩০) পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

এজাহার নামীয় আসামিসহ জড়িতরা আত্বগোপন করেছে বলেও পুলিশ জানায়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, ঘর বাঁধার স্বপ্নে গত ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে প্রেমিকের সাথে পাড়ি জমানোর সময় চিরিরবন্দরের ঘুঘরাতলীতে প্রেমিকসহ তরুনীকে আটক করে অপহরন করে স্হানীয় কয়েকজন যুবক। এসময় উভয়কে ভ্যানে তুলে ৫নং আব্দুলপুর ইউনিয়নের সরকারপাড়াস্থ মাঝাপাড়া পুরাতন জামে মসজিদ সংলগ্ন একটি নির্মানাধীন ভবনে নিয়ে যায় তারা।সেখানে প্রেমিককে আটকে রেখে তরুনীকে ধর্ষনের চেষ্টা চালানোর সময় দ্বীতল ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়।আহত কাতর অবস্থায় ওই তরুনীকে ধানক্ষেতে রাত সাড়ে ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত পালাকরে গণধর্ষন করে অপহরনকারিরা।পরে অপরাধীরা বীরদর্পে চলে যায়।

পরে জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে ফোন কোলে প্রেমিকসহ ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে চিরিরবন্দর থানা পুলিশ।  ধর্ষিতাকে প্রথমে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য  পরে তাকে রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। তরুনীর ভাষ্য মতে তাকে ৫জন ধর্ষন করেছে। তবে বোনকে ধর্ষনের ঘটনায় থানায় ৪জনকে আসামি করে পরদিন ১৫ নভেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ এর ৭/৯(৩)/৩০ এর ধারায় মামলা করেছেন ধর্ষিতার বড় বোন সালমা আক্তার মামলা নম্বর ১৬। 
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে চিরিরবন্দরের রেলকোলনীর আনছার আলীর ছেলে (পেশায় একজন প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার ব্যক্তিগত গাড়ী চালক  মুবিন (২৩),  মাঝাপাড়ার আব্দুল গনি দুলুর ছেলে আল-আমিন (২৬), রেল কোলনীর আসাদুল হকের ছেলে সাব্বির হোসেন (২৭) এবং হাবিবুর রহমান হবির পালিত ছেলে রাব্বি (২৬)।
 
প্রেস ব্রিফিং এ আরো জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষন ঘটনাটির দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মমিনুল করিম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মাসুম,সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ জিন্নাহ আল মামুন, চিরিরবন্দর থানার ইনচার্জ ইনচার্জ বজলুর রশিদ,  মামলার আইও পুলিশ পরিদর্শক জাকির শিকদার, উপ পরিদর্শক  জাহাঙ্গীর বাদশা রনিসহ অন্যান্যরা সমন্বিত পরিকল্পনায় অভিযানে নামেন। ঘটনা তদন্তে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ জিন্নাহ আল মামুনকে প্রধান করে একটি তদন্ত গঠন করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে চিরিরবন্দরে নান্দেড়াই গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে ভ্যান চালক মতিউর রহমান (৩৫) এবং পঞ্চগড় সদরের মাগুড়া এলাকার বাসিন্দা ধর্ষিতা তরুনীর প্রেমিক মাসুদ রানার (২৪) আদালতে আগাম স্বাক্ষ্য রেকর্ড করানো হয়েছে। 

 অন্যদিকে জড়িত প্রকৃত অপরাধিদের বিচারের আওতায় আনতে আন্দোলনে নেমেছে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ মহিলা পরিষদের নেতাকর্মীরা।এনিয়ে শনিবার বিক্ষোভ ও  মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে তারা।  আজ রবিবার তারা পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছেন। এ সময় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি কানিজ রহমান এবং আন্দোলন সম্পাদক গৌরী চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।

ধর্ষনের সাথে চিরিরবন্দরের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আলিম সরকারের ছেলে নুর আলম ও তার ব্যক্তিগত গাড়ী চালক মুবিনের সহযোগিতায় ওই তরুনীকে অপহরন এবং ধর্ষনে জড়িত থাকলেও নেতার ছেলের নাম মামলায় বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জড়িতদের প্রভাবশালীর ছেলেকে আইনের আওতায় আনতে দাবি জানিয়েছেন তারা।

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বাবরসহ ৬ আসামি খালাস
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমানসহ সব আসামি খালাস
ইসকন নিষিদ্ধ হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: হাইকোর্ট
সর্বশেষ সংবাদ