শুক্রবার ঢাকায় শুরু হয়েছে দুদিনের ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ’। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণ ও জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত করার দাবিতে প্রথমবারের মতো এ সমাবেশের আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওয়াটারকিপার্স’সহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিমÐলে কর্মরত পরিবেশবাদী ২৭টি সংগঠন। জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৮) সামনে রেখে আয়োজিত এ সমাবেশে দেশি ও বিদেশি অংশীজনদের পাশাপাশি জলবায়ু সংকটের হুমকিতে থাকা দেশের প্রত্যন্ত এলাকার সাত শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।
সকাল ৯টায় সিদ্ধেশ্বরীতে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য র্যালির মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। এরপর সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন (ভার্চুয়াল) প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাতিনাজ ফিরোজ, জাপান থেকে আগত প্রতিনিধি মাকিকু আরিমা, নেপাল থেকে আগত প্রতিনিধি অর্জুন কারকি, ‘তারা ক্লাইমেট ফাউন্ডেশন’এর ডেপুটি রিজিওনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কাইনান হাউটন, ইউএনডিপি’র সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক, সিইআর প্রতিনিধি চৌধুরি মোহাম্মদ শাহরিয়ার আহমেদ, আইইইএফএ’র প্রতিনিধি শফিকুল আলম, কোষ্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চৌধুরী, সিপিআরপি’র প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, সুন্দরবন ও উপক‚ল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, রিভার বাংলার সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা প্রমুখ।
সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সমন্বয়ক লিডি ন্যাকপিল ও পরিবেশ সংগঠন ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশীদ। সঞ্চালনা করেন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল। এর আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে কম দায়ীরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছে। আবার যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ, জলবায়ু অভিযোজনে তাঁরাই সবচেয়ে কম সক্ষমতা সম্পন্ন। তাই এই সংকট মোকাবেলায় জলবায়ু ন্যায্যতার দাবি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিতকরণে ধনী দেশগুলোকে বাধ্য করতে সম্মিলিত অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
প্রথম দিন ‘জীবিকা, খাদ্য এবং স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব’ বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবসার এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সোহানুর রহমান, সেন্টার ফর পারটিসেপেটরি রিসার্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি)র শাসুদ্দোহা, ইনডিজিনাজ পিপলস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস (আইপিডিএস) এর সনজীব ড্রং। পরে ‘বিশুদ্ধ শক্তি, জল ও কর্মসংস্থানের অধিকার : জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পের সম্প্রসারণের প্রভাব’ এবং ‘বদ্বীপ বাস্তুতন্ত্রের ওপর প্রভাব’ শীর্ষক দু’টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন সেশনের মধ্যবর্তী সময়ে মনোজ্ঞ ও পরিবেশ সচেতসতামূলক নৃত্য পরিবেশিত হয়। আগামীকাল শনিবার বিকাল ৩টায় সমাবেশ মঞ্চে গৃহীত ঘোষণাপত্র পাঠের মধ্য দিয়ে দুদিনের সমাবেশ শেষ হবে।