ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নে পারিবারিক সম্পতি সক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ষ্ঠ্যাম্প জালিয়াতি ও ভূমি সহকারি কর্মকর্তার যোগসাজসে বেআইনীভাবে ১১জন ওয়ারিশকে মধ্যে ১০জনকে বাদ দিয়ে কোন রকম বন্টননামা ছাড়াই নামজারি করে সম্মত্তি দখলের অভিযোগ করা হয় এক ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ইব্রাহিমপুর পূর্বপাড়ার মৃত মোঃ শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগমসহ ১০ ওয়ারিশ এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের ভাই এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে এ জালিয়াতির অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে ওই ১০ ওয়ারিশের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. তমিজ উদ্দিন।
সুত্র জানায়,ওই গ্রামের মৃত শাহজাহান মিয়ার বসতভিটিসহ জমির পরিমান ২৮৫ শতাংশ। উক্ত সম্মত্তি বিধি মোতাবেক ১১ ওয়ারিশের মধ্যে বন্টন করলে প্রত্যোকে ভিটিবাড়িসহ জমি পবে ৩৫.৬ শতাংশ। এরশাদ মিয়া কোন রকম বন্টননামা ছাড়াই ষ্ঠ্যাম্প জালিয়াতি মাধ্যমে ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনের সহযোগিতায় বসতভিটি ও রাস্তা সংলগ্ন উর্বর ৫৫ শতাংশ জমি নামজারি করে নেয়।
লিখিত বক্তব্য জানানো হয়, ২০২১ সালে অক্টোবরে পারিবারিক ঝগড়ার একটি শালিশ বিচারের রায় মানার স্বাক্ষরিত খালি ষ্ঠ্যাম্পে শালিশকারকদের ম্যনেজ করে অন্যান্য ওয়ারিশগন তাকে উক্ত সম্পত্তি দেয়া হয় বলে লিখে নেয়া হয়। শালিশে উপস্থিত ছিলেন উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মোছা, মুক্তিযোদ্ধা সামছুল আলমসহ এলাকার ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তি। মৃত শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগম ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে গিয়ে এরশাদ মিয়ার এ জালিয়াতি দেখে গত ১৭ অক্টোবর/২৩ নামজারী বাতিলের জন্য সহকারি কমিশনার(ভূমি)বরাবর আবেদন করেন। সংবাদ সম্মেলনে মৃত শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী রীনা বেগম, ওয়ারিশ মো. বাবু মিয়া, ফাতেমা বেগম,পারুল বেগম, হালিমা বেগম, নূরুন্নাহার বেগম, আকলিমা আক্তার, তাজলিমা বেগম, হক মিয়া বক্তব্যে বলেন তাদের ন্যয্য হক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তারা এরশাদ মিয়া ও এ জালিয়াতির সাথে জড়িত গ্রাম্য শালিশকারক ও ভূমি কর্মকর্তার বিচার দাবি করে নাম জারি বাতিলের জন্য কৃর্তপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ ব্যাপারে এরশাদ বিদেশ থাকায় তার সাথে কথা বলা যায়নি তবে তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম বলেন, আমার স্বামী ১৪ বছরে বিদেশ যায়, এসকল সম্পত্তিতে আমার স্বামীর অবদান রয়েছে, আমার শশুড় মৌখিক ভাবে এ সম্পত্তি উনাকে দিয়ে যান, গ্রামের শালিশ দরবারেও এটি প্রমানিত হওয়ায় সকলের সম্মত্তিতে উক্ত সম্পত্তি উনাকে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আবু মোছা ম্যানেজ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই সভাটা ছিল তাদের সম্পত্তি সক্রান্ত পারিবারিক দ্বন্দ্বের শালিশ সভা। এরশাদকে তার বাবা মৌখিকভাবে ওই সম্পত্তি দান করেছিলেন সেটা সভায় প্রমানিত হওয়ায় এলাকার বিশিষ্টজন ও তাদের সম্মতিতেই এর রায় করা হয়।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন সহকরি ভূমি কর্মকর্তা জাকির হসেন অনৈতিক সুবিধা গ্রহনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমার স্বরণ নেই, এটা দেখতে হবে, যদি কোন ক্রুটি হয়ে থাকে সেটা আপিল করলে সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে সহকরি কমিশনার মাহমুদা জাহান বলেন, নামজারি বিষয়ে কোন অনিয়মের সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করে শুনানি মাধ্যমে বিধিসম্মত ভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা গ্রহনের বিষয়টি তদন্তে প্রমানিত প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।