ঢাকা রবিবার, মে ৫, ২০২৪
ছাত্রলীগের পদ পেতে মাদক কারবারির ছেলের দৌড়ঝাঁপ!
  • হাসিব খান, গাজীপুরঃ
  • ২০২৩-১০-২০ ১২:৪৬:৫৪
বাবা শাহিন মিয়া এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি। বেশ কয়েকবার র‍্যাব ও পুলিশের হাতে মাদকসহ গ্রেপ্তারও হন। শাহিন মিয়ার বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি শাহিন মিয়ার ছেলে রাসেদ খান মেনন এবার হতে চান ছাত্রলীগের সভাপতি। সম্প্রতি টঙ্গী পশ্চিম থানার কর্মীসম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে সিভি জমা দেন রাসেদ। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েকদিনের মধ্যেই ঘোষনা হতে পারে টঙ্গী পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি। কমিটিতে স্থান পেতে একাধিক প্রার্থী আলোচনায় থাকলে এরই মধ্যে সব কিছু ছাপিয়ে মাদক কারবারির ছেলে রাসেদের প্রার্থীতা নিয়ে নিজ সংগঠন ছাত্রলীগ ও স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ব্যপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সাধারণত কেউ ছাত্রলীগের প্রার্থী হতে চাইলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার থাকতে হবে ছাত্রত্ব, হতে হবে অবিবাহিত। এছাড়াও রয়েছে বয়সের সীমাবদ্ধতাসহ বেশ কিছু নির্ণায়ক। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে রাসেদের ছাত্রত্ব নেই। অসমর্থিত সুত্রে আরও জানা যায়, সম্প্রতি রাসেদ উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর এলাকার জয়া নামে একজনকে বিয়ে করেছেন। জয়া আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন দেওড়া মিত্তিবাড়ি এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি শাহিন মিয়া ওরফে কাউয়া শাহিনের একমাত্র ছেলে রাসেদ খান মেনন। বাবার উত্তরাধিকার সুত্রে ছেলে রাসেদও অল্প বয়সে রপ্ত করেছেন বিভিন্ন অপকর্মের কৌশল। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ছিনতাই, মারামারি ও কিশোর গ্যাংয়ের তিনটি পৃথক মামলা রয়েছে। তার নেতৃত্বে তাইজুল, রাকিব, রবিউল, দ্বীন মোহাম্মদসহ শতাধিক কিশোর মাদক ও ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত। এসব কিশোর গ্যাং সদস্যদের দিয়ে এলাকায় কেউ বাড়িঘর নির্মাণ করতে গেলেই বাধা দেন রাশেদ। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিন র‍্যাব সদরদপ্তরসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়াও গভীর রাতে টঙ্গী পশ্চিম থানার সামনে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও সাংবাদিকের মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটেন রাসেদ। টঙ্গীর চাঞ্চল্যকর শিমুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামীও রাসেদ খান মেনন। এতো অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও রাসেদ ছাত্রলীগের পদ পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। আর এ কাজে রাসেদকে সহযোগীতা করছেন গাজীপুরের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, একসময় শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার আসামি বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারের কর্মচারী ছিলেন রাসেদের বাবা শাহিন মিয়া। বেশ কয়েকবছর আগে নুরুল ইসলাম সরকারের ভাতিজা দিপু সরকারের মালিকানাধীন পোলার আইসক্রিমের ডিস্ট্রিবিউশনের ম্যানেজার পদে চাকরি নেন রাসেদ। বর্তমানে দিপু সরকার বিদেশে থাকায় ওই ব্যবসা সম্পুর্ণ নিয়ন্ত্রণ করছেন রাসেদ খান মেনন। কিছুদিন আগেও রাসেদ নুরুল ইসলাম সরকারের বাসভবনের ভেতরে আইসক্রিমের ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তবে ছাত্রলীগের প্রার্থী হওয়ার পর ঝামেলা এড়ানোর জন্য সেই অফিসটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন রাসেদ। তৃণমূলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দাবি, বৃহত্তর টঙ্গী থানা বিভক্ত হয়ে এই প্রথম টঙ্গী পশ্চিম থানা ছাত্রলীগের কমিটি হতে যাচ্ছে। নতুন কমিটিতে যেন মাদক সংশ্লিষ্ট কাউকে পদ দেওয়া না হয়। এছাড়াও দীর্ঘদিনের পরিশ্রমী ও ত্যাগীদের মূল্যায়নের দাবি তাদের। এবিষয়ে গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোস্তাক আহমেদ কাজলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্র মেনেই ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে আমরা সেসব অভিযোগ খতিয়ে দেখছি। মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাত্রলীগের কমিটিতে রাখা হবে না।
শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশীয় পণ্য বিশ্বব্যাপী সমাদৃত: আমির হোসেন আমু
হরতালের সমর্থনে ভোলায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল
ঝালকাঠি-১ আসনে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন মনির, জমবে ভোটের মাঠ
সর্বশেষ সংবাদ