ঢাবি’তেজলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উড়ি ধানের ব্যবহারিক প্রয়োগ’ সেমিনার অনুষ্ঠিত
- নিজস্ব প্রতিবেদক
-
২০২৩-১০-২০ ১২:৩১:০৭
- Print
১৮ অক্টোবর ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ কনফারেন্স কক্ষে ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উড়ি ধানের ব্যবহারিক প্রয়োগ’ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. জয়নাল আবেদীন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. আব্দুল মতিন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক।
প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. জেবা ইসলাম সেরাজ, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত জমিতে চাষাবাদের জন্য উড়ি ধানের সমূহ সম্ভাবনা সর্ম্পকে আলোকপাত করেন। উড়ি ধান বা “ধানি ঘাস” অন্যান্য চাষকৃত ধানের জাতের তুলনায় প্রায় পাঁচগুণ লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে।
প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য গবেষণা প্রকল্পটি হতে প্রাপ্ত ফলাফল উপকূলীয় কৃষকদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর হবে এবং ভবিষ্যতে এ প্রকল্পের গবেষণা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথিগণ গবেষণা প্রকল্পটির ফলাফল আমাদের সাধারণ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার পরামর্শ দেন এবং এই ধরনের গবেষণা প্রকল্প আরো বেশি বাস্তবায়ন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন।
বৈশি^ক জলবায়ু পরির্বতন আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, বিশেষত কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশের খাদ্যে স্বয়ংসর্ম্পূণতা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিজ্ঞানীগণ নিরলস গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের একদল গবেষক লবণ সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনে দীর্ঘদিন কাজ করে যাচ্ছে।
উড়ি ধানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি তার আশেপাশের পরিবেশ থেকে লবণ শোষণ করে পানি ও মাটির লবণের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। এই গুণ ব্যবহার করে আমরা উপকূলীয় অঞ্চলে শুকনো মৌসুমে পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারি যা কৃষকদের সকল ধরনের শস্য উৎপাদনে সহায়ক। উক্ত গবেষণার মাঠ পর্যায়ের কাজ সাতক্ষীরা, খুলনা ও নোয়াখালীতে সম্পাদিত হয়েছে। উড়ি ধানের মাধ্যমে পরিশোধনকৃত পানি দিয়ে চাষ করে লবণ সংবেদনশীল ধানের জাতের প্রায় পাঁচ গুণ ফলন পাওয়া গেছে। উড়ি ধানের বিশেষায়িত মূল থেকে গবেষক দল এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে যারা সাধারণ অণুজীবের চেয়ে দ্বিগুণ লবণাক্ততা লবণ সহ্য করতে সক্ষম। এ সম্পর্কিত তিনটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এ সকল ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস থেকে বায়োফার্টিলাইজার তৈরী করে একই সাথে ধান গাছের লবণ সহিষ্ণুতা এবং ফলন বাড়ানো সম্ভব।