বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে কটুক্তির অভিযোগ নব্য আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে
- শাহেদ উল্লাহ শাহেদ, সাতক্ষীরাঃ
-
২০২৩-১০-১০ ১১:৫৯:৩০
- Print
ইউনেস্কোর স্বীকৃত বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে। গত ২ অক্টোবর সোমবার সাতক্ষীরা ভোমরা ইমিগ্রেশনের গোল ঘরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে দল থেকে তাকে বহিস্কারের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্ধ।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন দেবহাটা উপজেলার সভাপতি এস এম শফি আহম্মেদ অভিযোগ করে বলেন, সোমবার সাতক্ষীরা ভোমরা স্থল বন্দর ইমিগ্রেশনের এক কর্মকর্তা আমাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনানোর জন্য অনুরোধ করেন। আমি ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুরু করলেই সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জনতা অপটিক্স এর স্বত্বাধিকারী মনিরুল হোসেন মাসুম আমার ভাষণ থামিয়ে দিয়ে বলেন, 'পুরোনো কাসুন্দি ঘেঁটে কি লাভ, থামো।' ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতোবাক হয়ে যাই।
ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, ২০০৪ সালেও তখন চার দলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায়। তখনও আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটুক্তি করেছিল মনিরুল হোসেন মাসুম। এই মাসুমের দেওয়া বক্তব্য সম্পর্কে সবাই জানে। এটা তো নতুন কিছু নয়। তখন ফিংড়ী ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরিষদের সামনে একটি মঞ্চে প্রকাশে জনসম্মূখে জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমানের জনসভায় বলেছিল আওয়ামী লীগ একটা গুয়ের মাছি। এভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল করে বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে কটুক্তি করেছিল। বিষয়টি ইউনিয় পরিষদ মোড়ে যে কারো কাছে শুনলেই এ ঘটনা আপনাকে বিস্তারিত জানাবে। ফিংড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান সামছু রহমান জানান, মাসুম তখন জামায়াত নেতা হাবিবুর রমমানের সাথে সাথে থাকত এবং জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। তাই আওয়ামী লীগকে ওই ধরনের নুংড়া কথা উল্লেখ করে কুটক্তি করেছিল। আজ ২০২৩ এসে আবারও শুনতে পেলাম বঙ্গবন্ধুর ভাষন নিয়ে কুটক্তি করেছে। এটা খুব দুঃখ জনক ঘটনা। মাসুম এখন আওয়ামী লীগ করেন। আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে কুটক্তি করা তার শোভা পায় না। এঘটানর চরম নিন্দা জানাচ্ছি।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল হোসেন মাসুম জানান, 'বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে কোন কটুক্তি আমি করিনি। এঘটনা সম্পুর্ন সড়যন্ত্র ও মিথ্যা। আমি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল চাচাকে ভোমরায় রাখতে গিয়েছিলাম। এসময় শফি সাথে দেখা হয়। আমি তাকে অনেক আগে থেকে চিনি ও আমার নিকট টাকা চায়। মানুষকে স্যালুট করা,বক্তব্য দেয়া এসব করে বিভিন্ন মানুষের নিটক থেকে ৫০/১০০ টাকা নিয়ে থাকে শফি। আমি প্রসাব করতে গিয়েছিলাম। পরে আসামাত্রই সে তখন আবারও টাকার ইঙ্গিত করলে আমি বলি থামো পুরাতন কাসন্দি ঘেটে লাভ নাই। কিন্তু আমি একবারও বঙ্গবন্ধুর ভাষন নিয়ে কুটক্তি করেনি। ২০০৪ সালে ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদের জনসভায় আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটুক্তি বক্তব্য বিষয়ে তিনি বলেন, 'মেম্বারের চালচুরি নিয়ে ফিংড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে একটি প্রতিবাদ সভা হয়। পরদিন তৎকালীন চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের আয়োজনে ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে পাল্টা একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আমাকে তিনি দাওয়াত দেন। তিনি আমার শিক্ষক তার সম্মান রক্ষার্থে আমি সেখানে যাই। পরবর্তীতে কিছু অসাধু মহল আমার বিরুদ্ধে অপ্রচার চালায়। যার কারণে আমার আব্বা আমাকে চার মাস বাড়িতে উঠতে দেয়নি । পরে তিনি ভুল বুঝতে পেরে আমায় বাড়িতে ডেকে নেন।' তবে আওয়ামী লীগের নেতা মাসুমের আপন বড় ভাই ফিংড়ী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদও মাসুমের করা কটুক্তি করার ওই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।