দিনাজপুরের খানসামায় কৃষক দেলোয়ার হোসেন বস্তায় আদা চাষ করি ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। পরিত্যক্ত জমিতে তার এই বস্তায় আদা চাষের সাফল্য এখন অনেকের অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই ছুটে আসছেন তার এই আদা চাষের সাফল্য সর জমিনে দেখতে।আদা রোপণের মাত্র তিন মাসের মাথায় গাছগুলোতে আদা হতে শুরু করেছে। খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি মৌলভী পাড়া গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, প্রথমে ইউটিউব এর মাধ্যমে বস্তায় আদা চাষের সাফল্যের কথা জেনে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হন তিনি।
প্রথমে ছাই, জৈব সার ও বালু মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করে বস্তায় রাখেন পরীক্ষামূলকভাবে ১০ শতাংশ জমিতে ১৩০০ বস্তায় সেই মাটি ভরে টবের মতো করেন তিনি। এরপর প্রতিটি বস্তায় দুইটি করে আদার চারা রোপণ করেন। রোপণের মাত্র এক মাসের মাথায় গাছ বড় হতে শুরু করে৷ এরপর মাত্র তিন মাসের মধ্যে গাছগুলোর গোড়ায় আদা ধরতে শুরু করেছে। তিনি জানান,এ ভাবে আদা চাষে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, পতিত জমিতে খুবই সীমিত খরচ আর অল্প শ্রমে চাষ করা সম্ভব। প্রতিটি বস্তায় প্রায় দুই কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, সীমিত খরচ, কম যায়গা আর অল্প শ্রমে এটি একটি লাভজনক চাষ। আদা গাছে পানির চাহিদা অনেক কম। আবার সার বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় খুবই কম। মাঝে মধ্যে পাতা মরা রোগ প্রতিরোধে কিছু ওষুধ স্প্রে করতে হয়। এর বাহিরে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। এভাবে বস্তা আদা চাষ করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।
প্রথম অবস্থায় অল্প পরিসরে চাষ করেছেন তিনি। এ বছর যদি লাভ ভালো হয়, তাহলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে আদা চাষ করবেন বলে জানান কৃষক দেলোয়ার হোসেন।
দেলোয়ার হোসেনের এ পদ্ধতিতে আদা চাষ দেখে এলাকার অনেক মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন গ্রাম থেকে আদা চাষ দেখতে আসেন অনেকে।
একই গ্রামের আলম ইসলাম জানান, এভাবে আদা চাষ এর আগে আমি দেখিনি। এটি দেখার পরে আমাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে এ এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক এভাবে আদা চাষ শুরু করেছেন। বস্তায় আদা চাষ খুবই সহজ। অল্প খরচে বেশি লাভজনক একটি ফসল।
উপজেলা কৃষি অফিসার ইয়াসমিন আক্তার জানান, এ পদ্ধতিতে আদা চাষে জমির চেয়ে রোগবালাইয়ের আক্রমণ হয় কম। বস্তায় আদা চাষে কীটনাশক এবং পানি লাগে অনেক কম। ফলে যে কোনো স্থানে এভাবে আদা চাষ করা সম্ভব৷ পাশাপাশি কেউ চাইলে বাসার সাদে, বেলকুনিতে , এবং বাড়ির সামনে পরিত্যক্ত স্থানেও চাষ করতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে যদি কেউ চাষ না করতে চায়, নিজেদের আদার চাহিদা মেটানো সম্ভব। কেউ যদি এভাবে আদা চাষ করতে চায়, তাহলে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হবে।