দিনাজপুর কাহারোলে ২০২৩ সালের প্রকাশিত দাখিল পরীক্ষার পদার্থ বিজ্ঞান ব্যবহারিক বিষয়ে প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট ৮০০ দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় ৯ পরীক্ষার্থীকে ফেল করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল সুপার ও কেন্দ্র সচিবের বিরুদ্ধে।
আজ মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকালে লিখিতভাবে ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের হল সুপার ও কেন্দ্র সচিবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এর পরীক্ষ নিয়ন্ত্রক ও কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে আবেদন করেছেন দুটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠান প্রধান (সুপার)।
আথিক ভাবে অস্বচ্ছল থাকায় শিক্ষার্থীরা ৪০০ টাকা পরিশোধ করেছেন। তারপরও তাদেরকে ফেল নম্বর দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই শিক্ষার্থীরা অন্য বিষয়ে আশাব্যাঞ্জক নম্বর পেলেও পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করেছে। এ ঘটনা দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার পূর্ব সরঞ্জা দাখিল মাদ্রাসা ও চামদুয়ারি দাখিল মাদ্রাসার ৯ জন শিক্ষার্থীর ফলাফল শীট দেখে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। পদার্থ ব্যবহারিক বিষয়ে ২৫ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেখানে ৯ নম্বর পেলে শিক্ষাথীদের পাশ নম্বর হয়। সেই ক্ষেত্রে উক্ত ৯ পরীক্ষাথীকে ৬ নম্বর করে দেওয়া হয়েছে। ফলে তারা ফেল করেছে।
লিখিত আবেদনে পূর্ব সরঞ্জা দাখিল মাদ্রাসার সুপার তমিজুল ইসলাম জানান, এবার দাখিল পরীক্ষায় কাহারোল বাজার ফাজিল মাদ্রাসায় তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার কাদেরী কেন্দ্র সচিব হিসেবে এবং হাটিয়ারী দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার প্রধান লোকমান আলী হল সুপারের দায়িত্বে ছিলেন। পরীক্ষার্থীরা পদার্থ ব্যবহারিক পরীক্ষায় তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা প্রতি পরীক্ষাথী ৮০০ টাকা দিতে না পারায় ইচ্ছাকৃতভাবে ৪ জন শিক্ষার্থীকে ফেল নম্বর প্রদান করা হয়েছে। একইভাবে চামদুয়ারী দাখিল মাদ্রাসার সুপারও ৫জন পরীক্ষার্থীকে একই বিষয়ে ফেল করার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সুবিচারের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
অভিযোগের বিষয়ে কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, দুই মাদ্রাসা প্রধান বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। তাঁদেরকে লিখিত অভিযোগ করার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ হয়তো দিয়েছেন। এখনো দেখা হয়নি। অভিযোগ দেখে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
গত ২৮ জুলাই এসএসসি ও দাখিল সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এদিকে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করার বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানা সমালোচনা। জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে এক শিক্ষার্থীর নম্বরপত্রের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন পূর্ব সরঞ্জা ও চামদুয়ারী দাখিল মাদ্রাসার ৯ জন শিক্ষার্থী সব বিষয়ে ভালো ফলাফল করলেও পদার্থ বিজ্ঞান ব্যবহারিক পরীক্ষায় ২৫ নম্বরের ভিতরে ৬ নম্বর প্রদান করে অকৃতকার্য হয়েছে।
জাকির হোসেনের পোস্ট করা নম্বরপত্রে দেখা যায়, একজন শিক্ষার্থী কোরআন মাজিদ হাদিস শরীফ, আরবী (প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র), আকাইদ ও ফিকাহ, গণিত, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত বিষয়ে ‘এ প্লাস’ পেয়েছেন। বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ে পেয়েছেন ‘এ’ গ্রেড।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাহারোল বাজার দাখিল মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব আব্দুস সাত্তার কাদেরী মুঠোফোনে বলেন, ‘কেন এমন অভিযোগ করা হচ্ছে আমি জানিনা। ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরতো আমি দেইনি। এর জন্য আলাদা পরীক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। তারা কত নাম্বার দিয়েছে আমি জানিনা। টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি কোন টাকা নেইনি’।