ঢাকা শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
৫ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে রেষ্টুরেন্টে অভিযান, ১৯ বছর একই কর্মস্থলে এক কর্মকর্তা
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
  • ২০২৩-০৭-২৪ ০৪:৩৬:১১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি রেষ্টুরেন্টে উদ্দেশ্যেমূলক অভিযান পরিচালনার অভিযোগ পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই কর্মকর্তারা একত্রে অপকর্ম করছেন। অভিযোগ করা হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা দাবি করেন তারা। দাবিমতো চাঁদা না পেলে ওই প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার হুমকি দেন। এমনকি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত এই তিন কর্মকর্তা হলেন-- ব্রাহ্মণবাড়িয়া  ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মেহেদী হাসান, নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান ও কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল হক। এদের মধ্যে কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল হক একটানা একই কর্মস্থলে রয়েছেন গত ১৯ বছর ধরে।

রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কুমারশীল মোড়ের আমিন কমপ্লেক্সে স্থাপিত এএফসি রেস্টুরেন্টের সত্তাত্বাধিকারি মোহাম্মদ আরাফাত তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ৮ জুলাই ০১৬০৪৬৫৭৬০৫-এই মুঠোফোন নম্বর থেকে আতিক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি এএফসি রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক শাহীনের মুঠোফোনে কল করে দুপুরের খাবারের জন্য পাঁচ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর কথা বলেন। টাকা না দিলে মোবাইল কোর্ট করে পাঁচ গুণ জরিমানা আদায় করার হুমকি দেন। এরপর রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক বিষয়টি মালিক পক্ষকে জানালে তারা ওই নাম্বারে টাকা পাঠাননি। 

এ ঘটনার ১২ দিন পর গত ২০ জুলাই টাকা না পেয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে অভিযুক্ত ওই তিন কর্মকর্তা দুইজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে  রেস্টুরেন্টটিতে এসে মালিক ও স্টাফদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর তারা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৩ ধারার লংঘন হয়েছে দাবি করে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য্য করেন। ৪৩ ধারার কোন লংঘন না হওয়া সত্ত্বেও মালিকপক্ষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ করে দেন। জরিমানার টাকার বিপরীতে তাদের কাছে রশিদ চাইলে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং রেস্টুরেন্ট সিলগালা করার হুমকি দেন। ওই সময় রশিদ না দিয়েই তারা রেস্টুরেন্ট ত্যাগ করেন। পরে ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান তার অফিস সহকারীকে দিয়ে ওই রেস্টুরেন্টে জরিমানার রশিদ পাঠায়।

এ বিষয়ে রেস্টুরেন্টের সত্ত্বাধিকারি মোহাম্মদ আরাফাত বলেন, জেলা পর্যায়ের তিনজন সরকারি কর্মকর্তার এমন আচরণ কখনোই কাম্য নয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে সংঘবদ্ধভাবে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন। অনেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব দুর্বলতা থাকে বলে তারা প্রতিবাদ করেন না।‌ আমার প্রতিষ্ঠানে বেআইনিভাবে তারা জরিমানা করেছেন। এজন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের দ্বারস্থ হয়েছি। 

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, 'আমাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে এসবের প্রমাণসহ উপস্থাপন করা হলে জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেবেন। এর বাইরে এই নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।

কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, 'মোবাইল কোর্টের একজন সদস্য হিসেবে সেদিন আমি উপস্থিত ছিলাম। কিছু অনিয়ম পেয়ে এফসি রেস্টুরেন্টে জরিমানা করা হয়েছে। লিখিত যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে এসব আমার নলেজে নাই। এই অভিযোগের সঙ্গে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন-আমি এখনো অভিযোগ দেখিনি।ই-ফাইলে আছে। 

শ্রমিকদের ধর্মঘটে অচল আশুগঞ্জ নদী বন্দর
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে  একজনের মৃত্যু
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে সকল সুবিধা দিত হাসিনা:  আলতাফ হোসেন চৌধুরী