বিশ্বের অন্যান্য দেশকে পেছনে ফেলে যখন রাশিয়া নিজেদের বিশেষজ্ঞদের দ্বারা কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার কথা জানলো তখনই নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে নানা মহলে। করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের বিষয়ে রাশিয়ার দাবি খারিজ করে দিয়েছে কানাডা।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো স্পুটনিক-৫ নামের এ ভ্যাকসিন অনুমোদন দেয়নি। ডব্লিউএইচওর মতে, বাজারজাতকরণের আগে সুরক্ষার পাশাপাশি যাবতীয় তথ্য সর্বোচ্চ খতিয়ে দেখতে হবে। নয়তো মহাবিপত্তির আশঙ্কা থেকেই যাবে।
এ ভ্যাকসিন নিয়ে এখনও কোনো ক্লিনিকাল ট্রায়াল প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি রাশিয়া। সাধারণত, শেষ ধাপে নানা বয়সী হাজারো মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার নিয়ম রয়েছে। তার ফলাফল সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পরই ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। আর ছাড়পত্র দেয়ার আগে সুরক্ষা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যের বিচার করার বিষয়টি দেখভাল করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
তবে মস্কোর দাবি, তারা কয়েক হাজার লোকের ওপর ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালিয়েছে। মস্কোভিত্তিক অ্যাসোাসিয়েশন অব ক্লিনিকাল ট্রায়ালস অর্গানাইজেশন চলতি সপ্তাহেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছিল, এ ভ্যাকসিন নিয়ে তাড়াহুড়ো না করতে।
অন্যদিকে ভ্যাকসিন আবিষ্কারে বিশ্বের শতাধিক দেশ কাজ করে যাচ্ছে। এক একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষা-পর্ব সারতেই সাধারণত বছরের পর বছর সময় লেগে যায়। তবে কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে তা ১২ থেকে ১৮ মাসে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
আমেরিকার প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি সম্প্রতি বলেছিলেন, চীন ও রাশিয়া মানবদেহে ভ্যাকসিন দেয়ার আগে তা ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখবে। আরেক বিশেষজ্ঞ পিটার ক্রমসনারের মতে, এ ভ্যাকসিন নিয়ে দীর্ঘ পরীক্ষা দরকার। তা না করে বাজারে ছাড়া হলে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
রুশ ভ্যাকসিনের সুরক্ষার দিকটা নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ আরও কয়েকটি দেশ। তারা বলছে, তাড়াহুড়ো না করে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে এর কার্যকারিতা কতটুকু।