দুর্গাপুরে গ্রাহকদের সাথে দূর্ব্যবহার ও অশালীন আচরন করায় ব্যাংকের ম্যানেজারের উদ্দেশ্যে জুতা ছুঁড়লেন
- মোবারক হোসেন শিশির, দুর্গাপুর, রাজশাহী
-
২০২৩-০৭-১৩ ০৯:৩৯:০৫
- Print
রাজশাহীর দুর্গাপুরে গ্রাহকদের সাথে জনতা ব্যাংক ম্যানেজারের দূর্ব্যবহার ও অশালীন আচরনের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ম্যানেজার আতিকুর রহমানের দূর্ব্যবহার ও অশালীন আচরনের স্বীকার এক নারী গ্রাহক জুতা ছুড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গ্রাহকদের সাথে ম্যানেজারের এধরনের অশালীন আচরনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ঘটনার সঠিক তদন্ত মারফত বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী সহ সচেতন মহল।
ম্যানেজার কর্তৃক দূরব্যবহার ও অশালীন আচরণের স্বীকার ব্যাংকের নারী গ্রাহক স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, দুর্গাপুর পৌর সদর সিংগা গ্রামের বাসিন্দা কাঠালবাড়িয়া শহীদ আবুল কাশেম স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক ও দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগ নেত্রী সারমিন আহম্মেদ পলি ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় জনতা ব্যাংক দুর্গাপুর শাখায় যান। জনতা ব্যাংক শাখায় তার ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে জমাকৃত অর্থ থেকে বছরে চারবার সার্ভিস চার্জ কাটা হচ্ছে। এ বিষয়ে বর্তমানে ব্যাকিং নিয়ম-কানুন জানতে ব্যাংকের সহকারী ম্যানেজারের নিকট আবেদন জানান। সহকারী ম্যানেজার এ বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগের জন্য ওই নারী গ্রাহককে পরামর্শ দেন। সহকারী ম্যানেজারের পরামর্শমতে বিষয়টি জানার জন্য ম্যানেজার
আতিকুর রহমানের নিকট গেলে ম্যানেজার গ্রাহককে বলেন বছরে দুইবারের বেশী ব্যাংক কোন গ্রাহকের টাকা কর্তন করা হয়না।
তখন গ্রাহক সারমিন আহম্মেদ পলি তার হিসাব নম্বেরর ষ্টেটম্যানটা বের করে দেখানোর জন্য বললে তিনি ব্যাংক স্টেটমেন্টের জন্য ফ্রি বাবদ ১২০ টাকা জমা দেওয়ার জন্য বলেন।
তাৎক্ষনাতিক স্টেটম্যান নিতে টাকা না থাকায় গ্রাহক শারমিন আহমেদ পলি ব্যাংকের নীচে এসে টাকা নিয়ে গিয়ে ব্যাংক স্টেটমেন্ট নেয়ার জন্য আবেদন করতে চাইলে ম্যানেজার গ্রাহক শারমিন আহমেদ পলি কে অকথ্য অশ্লীল অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাকে দেখে নেয়ারও হুমকি দিয়ে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যেতে বলেন ব্যাংক ম্যানেজার আতিকুর রহমান শারমিন আহমেদ পলি বের হওয়া কালীন পলিকে ইঙ্গিত করে কুৎসিত ভাষা প্রয়োগ করায় তবে শারমিন আহমেদ পলি তার ব্যবহৃত জুতাটি খুলে ম্যানেজারের উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে মারেন এবং তার এই ব্যবহারের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানাবেন বলে ব্যাংক থেকে চলে যান।
এই ঘটনার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে ব্যাংক ম্যানেজার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যাংকিং গ্রাহক, ও ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ সচেতন মহলের মাঝে তীব্র দেখা দেয়।
ব্যাংক ম্যানেজার আতিকুর রহমান গ্রাহকের সাথে তার এ ধরনের আচরণ করা উচিত হয়নি ভেবে দুপুর আড়াইটার দিকে ফোনের মাধ্যমে গ্রাহক শারমিন আহমেদ পলি কে ব্যাংকে ডেকে নিয়ে তার কাছে ভুল স্বীকার করে উভয়পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে নেন।
বিষয়টি মীমাংসা হলেও কর্মকর্তার গ্রাহকদের সাথে এ ধরনের অসভ্য অশালীন আচরণ করা এবং গ্রাহক ম্যানেজারের উদ্দেশ্যে জুতার ছুড়ে মারার বিষয়টি এখন ব্যাংকিং গ্রাহক, ব্যবসায়ী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সচেতন মহল সহ উপজেলার সকল পেশাজীবী জনসাধারণের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার পর থেকে এক ব্যবসায়ী বলেন, জনতা ব্যাংকের বর্তমান ম্যানেজারটি আসলেই গ্রাহকদের সাথে ভালো ব্যবহার করে না। আমি জনতা ব্যাংকের একজন নিয়মিত গ্রাহক ছিলাম আমার প্রতি সপ্তায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা লেনদেন হতো। ম্যানেজার আমার সাথেও খারাপ আচরণ করাই আমি ব্যাংক থেকে চলে গিয়ে অন্য ব্যাংকে এখন লেনদেন করি। গ্রাহকদের সাথে অশালীন আচরণকারী এই ম্যানেজারকে দ্রুত অন্য শাখায় বদলি না করলে গ্রাহক সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকবে বলে আমার ধারণা। এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক দুর্গাপুর শাখার ম্যানেজার আতিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ব্যাংকের গ্রাহক শারমিন আহমেদ পলির সাথে ব্যাকিং নীতিমালা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হলে গ্রাহক শারমিন আহমেদ পলির সাথে আমরা নিজেরা ব্যাংকে বসেই বিষয়টি নিষ্পত্তি করে ফেলেছি।
এ বিষয়ে অশালীন আচরণের শিকার গ্রাহক শারমিন আহমেদ পলি বলেন, জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার আমার সাথে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছে। পরে আমাকে ডেকে ম্যানেজার সাহেব এটা নিয়ে ভুল স্বীকার করে অনুতপ্ত হয়েছেন আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেছে। তবে ব্যাংক ম্যানেজার এ ধরনের ব্যবহার যেন আর কোন গ্রাহকের সাথে না করে সে বিষয়ে তার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।