দিনাজপুরে গন্ধমুক্ত পাঙ্গাস মাছ চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন সুশান্ত চৌহান। ছোট পরিসরে শুরু করলেও বর্তমানে তিনি ৯একর জমির ৪টি পুকুরে গন্ধমুক্ত পাঙ্গাস,রুই,কাতল,.মৃর্গেল,সিলভারকাপ,চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতি মাছের চাষ করে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আরো ৩/৪টি পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তার সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকে মৎস্য চাষে ঝুকছেন।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার নিজ গ্রাম চাকলায় ২০১৭ সালে একটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন,ইলেক্ট্রেশিয়ান সুশান্ত চৌহান। পরের বছর নিজের জমি কেটে আরো দু’টি পুকুরে রুই,কাতলা,মৃগেল, সিলভারকার্প,সাদাপুটি,তেলাপিয়া মাছের চাষের পরিথি বাড়ান তিনি।২০০০ সালে নিজের দুই একর জমিতে আরো একটি পুকুর তৈরি করে গন্ধমুক্ত পাঙ্গাস মাছের চাষ শুরু করেন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সুশান্ত চৌহানকে। বর্তমানে তিনি নিজ গ্রামসহ পার্শবতী এলাকার ৯ একর জমিতে ৪টি পুকুরে গন্ধমুক্ত পাঙ্গাস.রুই,কাতল,.মৃর্গেল,সিলভারকাপ,চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতি মাছের চাষ করছেন। এ মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি। তার সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকে মৎস্য চাষে ঝুঁকছেন।
মৎস্য চাষি সুশান্ত চৌহান (৪০)জানান, ‘তিনি এখন সব খরচ বাদ দিয়ে বাঃসরিক তিন থেকে সাড়ে তিনি লাখ টাকা লাভ করেন। এতে তার অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তিনি নিজের পাশাপাশি আরো কয়েকজনের কর্মসংস্থান করতে পেরে খুশি।পুকুরের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা করছেন বলেও জানান।’
ছেলে ইলেক্ট্রেশিয়ান সুশান্ত চৌহানের সংগ্রামী জীবনের সাফল্য দেখে পিতা মাধব লাল চৌহানও অন্যপেশা ছেড়ে ছেলেকে সহায়তায় এগিয়ে আসেন।পুকুরগুলো তত্বাবধায়নে কাজ করছেন তিনি।
এাধর লাল চৌহান (৬২) জানান, ‘এখন আর তাকে অন্য কোন কাজের সন্ধান করতে হয়না। ছেলের পুকুর দেখা-শোনা করেই তার দিন পার হয়ে যায়। এজন্য ছেলে তাকে ন্যায্য পারিশ্রমিকও দেয়।এই টাকা জমিয়ে তিনি জমি ক্রয় করেছেন। সেই জমিতেও পুকুর তৈরির পরিকল্পনা চলছে।’
সুশান্ত চৌহানের পুকুর থেকেই পাইকারেরাা হাট-বাজারে বিক্রির জন্য ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন, গন্ধমুক্ত পাঙ্গাস মাছ।
পার্বতীপুর নতুন বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন জানালেন, অফ ফ্লেভার অর্থাৎ গন্ধমুক্ত পাঙ্গাস মাছের বাজার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। নিদির্ষ্ট গ্রাগকেরা এমাছ প্রায় খোঁজেন। বেশি দান দিয়ে হলেও ক্রয় করে নেন। এ মাছ বিক্রিতে আমাদের লাভ ভালো থাকে। তাই পুকুর থেকেই মাছ ক্রয় করে নিয়ে যাই।’
সুশান্ত চৌহানকে এবিষয়ে প্রথম থেকেই সহায়তা করে আসছে, মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র-জিবিকে এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন নামে দু’টি প্রতিষ্ঠান।
গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র-জিবিকের মৎস্য কর্মকর্তা মো.জাহেদুল হক জানান,সুশান্ত চৌহানের সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকে মৎস্য চাষে অগ্রুহী হয়ে উঠেছেন।তার মাছের খামার দেখার জন্য ছুঁটে আসছেন অনেকেই। কম মূল্যে হওয়ায় ‘গরিবের মাছ’ হিসেবে পাঙ্গাস মাছের বেশ চাহিদা রয়েছে হাট-বাজারে। কিন্তু রান্নার পর পাঙ্গাস মাছের স্বাদে একটু আলাদা গন্ধ অর্থাৎ ফ্লেবার থাকায় তা অনেকের পছন্দ নয়। তাই, গন্ধমুক্ত পাঙ্গাস মাছের বেশ চাহিদা রয়েছে। ভোক্তাদের কাছে অফ ফ্লেবার পাঙ্গাস মাছ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।’
সুশান্ত চৌহান মাছ চাষ করে অল্প সময়ে সফলতা পেয়ে জীবনের মোড় ঘুরিয়েছেন।এমন দৃষ্টান্ত দেখে স্থানীয় অনেক বেকার যুবক মাছ চাষে ঝুঁকছেন। এরই মধ্যে অনেক যুবক সফলতাও পেয়েছেন।