ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
দিনাজপুরে সর্ব্বৃহৎ ঈদের জামাতের প্রস্তুতি; মুসল্লিদের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা
  • শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর
  • ২০২৩-০৬-২৭ ০০:১১:১২

উপমহাদেশ অন্যতম বৃহত্তর  ঈদ-উল- আআজাহার জামাতের জন্য দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ ময়দানে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।এবারের ঈদুল আজহার জামাতে মুসল্লিদের অংশগ্রহণের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জামাত শুরু হবে ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৮ টায়। সুষ্ঠুভাবে ঈদের জামাত সম্পন্নের জন্য নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।

আয়োজকরা জানান, ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের জন্য দিনরাত কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মিনার সংস্কার ও রঙ করা, ধোয়ামোছা, মাঠে মাটি ভরাট, চুনের দাগসহ আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। পর্যাপ্ত মাইক লাগানো হচ্ছে মাঠে। এরই মধ্যে মাঠের বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যবেক্ষণের টাওয়ার। ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সুসজ্জিত প্রবেশদ্বারে সিসিটিভি ক্যামেরা, চার স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক বছর থেকেই দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ বড় ময়দান ও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে ঈদ জামাত নিয়ে দেখা দিয়েছে নানান তর্ক। বিশেষ করে কোন জামাত বড় এ নিয়ে।
তবে এবার দিনাজপুরে ৫ লাখ মুসল্লির অংশ গ্রহণে  জমায়েতের প্রত্যাশা করছেন আয়োজকরা। তাতে করে এটিই হতে পারে এশিয়া উপমহাদেশের  সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত।

 প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঈদগাহ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতি সভায় জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হুইপ,ইকবালুর রহিম বলেন,  "দিনাজপুরের ঈদগাহ জামাত দেশ ছাড়িয়ে ইতোমধ্যে বিদেশেও পরিচিতি লাভ করেছে। বিশাল এ জামাতে দিনাজপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুসল্লিরা আসেন নামাজে শরীক হতে। মুসল্লিরা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে খোলা মাঠে নামাজ আদায় করতে পারেন এজন্য সারা ঈদগাহ জুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।এবার বাইরের জেলা থেকে মুসুল্লিরা যেন জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন এজন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা থাকবে। ঈদের দিনে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জন্য পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর ও পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুরে বিশেষ ট্রেনটি চলাচল করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে দিনাজপুরের বাক-প্রতিবন্ধী চিত্রকর শিল্পী মোছা. আরিফা আকতার আখির  আকাঁ ছবি দিনাজপুর গোর-এ- শহীদ অবস্থিত এশিয়া  মহাদেশের সর্ব্বৃহৎ ঈদগা মিনার ও জামাতের দৃশ্য অন্তভুক্ত করেছেন।"

জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মমিনুল করিম, বিজিবির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল, পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, সিভিল সার্জন ডা. এএইচ এম বোরহান উল ইসলাম সিদ্দিকী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ইমদাদ সরকার ও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল সহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

 জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ জানান, ঈদুল আজহার জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।
ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের খতিব ইমাম মাওলানা সামছুল হক কাশেমী।

পুরো ঈদগাহ জুড়ে থাকবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা এমনটাই জানিয়েছেন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মমিনুল করিম। তিনি বলেন,চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবেন। সকাল ৭টা থেকে মুসল্লিরা মাঠের প্রবেশ পথ দিয়ে আসতে থাকেন। ১৭টি গেট মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে শুধুমাত্র জায়নামাজ ও ছাতা নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। থাকবে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।
তিনি জানান, ৩০টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো ময়দার মনিটরিং করা হবে। ১১০টি মাইক সংযোজন করা ছাড়াও ইমামকে সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসা থেকে ১৫০ মুক্কাবির নিয়োজিত থাকবেন বলেও জানানো হয়।

আয়োজকরা জানান, ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের জন্য দিনরাত কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মিনার সংস্কার ও রঙ করা, ধোয়ামোছা, মাঠে মাটি ভরাট, চুনের দাগসহ আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। পর্যাপ্ত মাইক লাগানো হচ্ছে মাঠে। এরই মধ্যে মাঠের বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যবেক্ষণের টাওয়ার। ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সুসজ্জিত প্রবেশদ্বারে সিসিটিভি ক্যামেরা, তিন স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ জানান, আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যরা পোশাকে ও সাদা পোশাকে নিয়োজিত থাকবেন।

২০১৫ সালে নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সাতটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে এ ঈদগাহে। করোনার কারণে দুই বছর নামাজ আদায় বন্ধ থাকায় দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত বছর ঈদুল ফিতরের নামাজ আবারও আদায় হয়। এর আগেও গোর-এ-শহীদ ময়দানের মিনারটি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদকার্ডে স্থান পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমেও জায়গা করে নিয়েছে ঈদগাহ মাঠটি।

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ ময়দানটি ২২ একর জমির ওপর অবস্থিত। মুসল্লিদের সুবিধার্থে ইতোমধ্যে মাঠের কোণে অবস্থিত স্টেশন ক্লাবটি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এবার ১২ একর জমি নামাজের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ৫১৬ ফুট দীর্ঘ সর্বোচ্চ ৬০ ফুট উচ্চতার দুটি গম্বুজসহ ৫২টি গম্বুজ রয়েছে। মিনারের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এর মাঝে আরও ২০ ফুট উচ্চতার ৫২টি গম্বুজ নিয়ে ৫১৬ ফুট প্রস্থের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ ময়দানের ঈদগাহ মিনারটি এখন ঐতিহাসিক মিনারে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি গম্বুজে দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি।

২০১৫ সালে মাঠের পশ্চিম প্রান্তে মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন দিনাজপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। তিনি বলেন, দৃষ্টিনন্দিত মিনারের পাদদেশে খোলা আকাশের নিচে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি এবং ঈদের দিনে নামাজ আদায়ের স্বপ্ন দেখেন। এবারের ঈদে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন বলেও তিনি জানান।

রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, টাঙ্গাইল, বগুড়া, রংপুর, নীলফামারী, জয়পুরহাটসহ আশপাশের প্রায় সব জেলার মুসল্লি অংশ নেন এ জামাতে।
জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে দুই দফায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদ জামাত প্রস্তুতি সভা। মাঠ পরিদর্শন করেছেন হুইপ ইকবালুর রহিমসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

এবার ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শামসুল হক কাসেমী।

পুলিশের অসাদাচরনের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
 শিশু রুকাইয়া রহমান আনহাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন
নীলফামারীর চিলাহাটিতে পেকিন হাঁস  পালন বিষয়ক খামার দিবস অনুষ্ঠিত