২০২২ সালের ২১ জুলাই রাতে ঝুনুর শাবলের আঘাতে তার স্বামীর মৃত্যু হয়; পরদিন ঝুনু থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় স্বামীকে হত্যার দায়ে এক নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মঙ্গলবার নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আ ন ম ইলিয়াস আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) খন্দকার হালিম।
দণ্ডিত ঝুনু বেগম (৩৩) শিবপুরের মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।
তার স্বামী নিহত মোফাজ্জল প্রধান (৩৮) একই এলাকার মৃত ওয়াজউদ্দিন প্রধানের ছেলে।
এপিপি খন্দকার হালিম জানান, মোফাজ্জল ও ঝুনু প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ২১ বছর আগে বিয়ে করেন।এর আগে ঝুনুকে জোর করে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়েছিলেন তার মা-বাবা। কিন্তু বিয়ের দুই দিনের মাথায় ওই স্বামীকে ছেড়ে মোফাজ্জলের কাছে চলে আসেন তিনি। এই দম্পতির ১৮ বছর বয়সি এক ছেলে রয়েছে।
মামলার বরাত দিয়ে এপিপি খন্দকার হালিম বলেন, ২০২২ সালের ২১ জুলাই রাতে জুয়া খেলার জন্য ঘরের আলমারিতে জমানো কিছু টাকা ঝুনুর কাছে চেয়েছিলেন মোফাজ্জল। ঝুনু ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ঘরে থাকা একটি শাবল নিয়ে আসেন মোফাজ্জল।ওই শাবল দিয়ে আলমারি ভাঙতে গেলে মোফাজ্জলকে বাধা দেন ঝুনু।
“পরে ওই শাবল নিয়ে ঝুনুর ওপর আক্রমণ করতে আসেন মোফাজ্জল। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তার হাত থেকে শাবলটি ছিনিয়ে নেন ঝুনু। উত্তেজিত অবস্থায় ওই শাবল দিয়ে তিনি স্বামীর মাথায় পরপর তিনটি আঘাত করেন।এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মোফাজ্জলের।”
তিনি আরও বলেন, সারারাত মোফাজ্জলের মরদেহের পাশে বসে থেকে সকালে ঘর তালাবদ্ধ করে শিবপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন ঝুনু।পরে ওই বাড়িতে গিয়ে মোফাজ্জলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় নিহতের বড়ভাই আলী হোসেন বাদী হয়ে ঝুনু বেগমকে একমাত্র আসামি করে করে মামলা করেন।পরবর্তীতে আদালতে জবানবন্দি দেন ঝুনু বেগম।
এপিপি হালিম জানান, রায়ে আদালত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আরিফুল ইসলাম উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।