ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
নেছারাবাদে সুপারির খোল দিয়ে তৈরি হচ্ছে ওয়ানটাইম প্লেট
  • নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
  • ২০২৩-০৫-২৪ ০৫:৫৯:০১
জলে জঙ্গলে পড়ে থাকা সুপারি খোল এখন আর খেলনা নয়, এটা একটি অর্থকারি পন্য হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রতিটি সুপারি খোলের মূল্য ১ টাকা। এভাবে হ্যান্ড মাইক হাতে আকরাম হোসেন উজ্জ্বল এলাকায় ঘুরে ঘুরে সুপারি খোল সংগ্রহ করার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পিরোজপুরে নেছারাবাদ উপজেলার মাহামুদকাঠিতে সুপারি গাছের শুকনো খোল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ওয়ানটাইম প্লেট তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আকরাম হোসেন উজ্জ্বল।সে স্বরূপকাঠি উপজেলার ৪নং আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার। জানা যায়, আকরাম হোসেন উজ্জ্বল তার এক বন্ধুর মাধ্যমে এ কাজে উৎসাহিত হন। এবং খুলনা থেকে মেশিন সংগ্রহ করে ওয়ানটাইম প্লেট তৈরির কারখানা চালু করেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে উপজেলার স্বরূপকাঠি কুড়িয়ানার সড়কের পাশে মাহমুদকাঠি হাসপাতালের কাছেই গড়ে তোলেন "এ আর ন্যাচালার প্লেট" নামে ছোট্ট একটি কারখানা।তার কারখানায় এখন ৮ জন কর্মচারী রয়েছে। স্থানীয় লোকজন তার কারখানায় এসে সুপারির খোল বিক্রি করে যায়। এছাড়াও সুপারি খোল সংগ্রহের জন্য আলাদা কর্মী নিয়োগ দেয়া আছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ঝড়ে যাওয়া সুপারি খোল প্রতিপিচ ১টাকা করে ক্রয় করে নিয়ে আসেন। পরে ঐ খোল দুই দিন রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। এরপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের তৈজস পত্র বা ওয়ান টাইম প্লেট । যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, থালা, বাটি, নাস্তার প্লেট এবং ট্রে সহ নানা রকমের আইটেম। এসব পণ্য এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। ভবিষ্যতে বিদেশেও রপ্তানি করার পরিকল্পনা রয়েছে উজ্জ্বলের। স্থানীয়রা জানায়, তাদের এলাকায় এ ধরনের কারখানা হওয়ায় তারা আকরাম হোসেনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। প্লাস্টিকের তুলনায় সুপারি পাতার তৈরি এসব তৈজসপত্র অনেক ভালো। শুকনো সুপারি পাতার খোল দিয়ে ওয়ান টাইম প্লেট সহ বিভিন্ন তৈজসপত্র তৈরি করায় তারা খুশি। পরিবেশের জন্য সহায়ক হওয়ায় উদ্যোক্তা আকরাম হোসেন কে ধন্যবাদ জানান। ওয়ানটাইম প্লেট তৈরির বিষয়ে উদ্যোগতা আকরাম হোসেন উজ্জ্বল জানান, আমি মনেকরি পরিবেশ সুরক্ষায়, আমাদের এলাকায় এরকম আরো কারখানা গড়ে গড়ে তোলা দরকার। এবং এরকম কারখানা তৈরিতে বেকার যুবকরার এগিয়ে আসলে তারা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কোন রকম রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াই ঝড়ে পড়া সুপারির খোল থেকে এসব তৈজসপত্র তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছি। এবং ঝড়ে যাওয়া সুপারি গাছের খোলে শতভাগ পরিবেশ বান্ধব। এই প্লেট ব্যবহারের পর ফেলে দিলে পঁচে যাবে। এই পণ্য তৈরিতে শুধু আয়ের উৎসই হবে না পরিবেশ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমি আশা করছি এক সময় প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে মানুষ এই পণ্য ব্যাপক হারে ব্যবহার করবে এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই উদ্যোক্তা। উজ্জ্বল আরো জানান, এ পর্যন্ত আমি এখানে পনের লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছি তবে কারখানা বড় করতে হলে আরো বিশ থেকে ত্রিশ লক্ষ্ টাকার প্রয়োজন।সরকারি ভাবে যদি কম সুদে আর্থিক সহযোগীতা পাই তাহলে কারখানাটি বড় করার ইচ্ছা আছে আমার। স্বরূপকাঠি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার জানান, স্বরূপকাঠিতে এই প্রথম সুপারির খোল দিয়ে ওয়ান টাইম পণ্য সামগ্রী উৎপাদন করায় তাকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এ খাতে এলাকার বেকার যুবকের কর্ম সংস্থান সৃষ্টি হবে এবং আয়ের নতুন একটা পথ সৃষ্টি হবে। আকরাম হোসেন উজ্জ্বলের এই পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সব সময় একজন ভালো উদ্যোক্তাদের সর্ব দিক থেকে সহযোগিতা করে থাকেন। সেদিক থেকে তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিধি মোতাবেক আর্থিক সহযোগিতা ও করার চেষ্টা করবো। তার কারখানায় উৎপাদিত পণ্য ব্যবহার করায় পরিবেশ দূষণ অনেক কমে আসবে তাই সর্বসাধারণকে ব্যবহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।
পুলিশের অসাদাচরনের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
 শিশু রুকাইয়া রহমান আনহাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন
নীলফামারীর চিলাহাটিতে পেকিন হাঁস  পালন বিষয়ক খামার দিবস অনুষ্ঠিত