রায়পুরায় পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ
- বিনা আক্তার, রায়পুরা (নরসিংদী)
-
২০২৩-০৫-২০ ০২:১৬:৩২
- Print
নরসিংদীর রায়পুরা পৌরসভার শ্রীরামপুর উত্তর পাড়া এলাকার মৃত ডাঃ আব্দুল আলীর ছেলে মোঃ শাহরিয়ার মাহমুদ (সুমন) কে তার আপন চাচাতো ভাই মোঃ হাবিবুর রহমান গং এরা পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় শাহরিয়ার মাহমদ (সুমন) এর সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে বললে তাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং সম্পত্তি বঞ্চিত মোঃ শাহরিয়ার মাহমুদ (সুমন) এর পরিবারে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ আর হতাশা।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সরেজমিনে জানা যায়, পঁচা বোয়ালিয়া মৌজায় আর. এস ২২৩ খতিয়ানে ২১টি দাগে জাফর আলী নিজে ৫ একর ০৫ শতাংশ ভূমির মালিক হন। তার ৩ ছেলে ডাঃ আব্দুল আলী, মোঃ ওয়ারিশ আলী, ডাঃ হোসেন আলী এবং একমাত্র কন্যা মোহাঃ বেগমের নেহা কে ওয়ারিশান রেখে মারা যান। সেই মোতাবেক ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে সম্পত্তির ওয়ারিশদার হোন। মৃত জাফর আলীর বড় ছেলে ডাঃ আব্দুল আলী ১৯৯১ সালের জুলাই মাসে মারা যান। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে শাহরিয়ার মাহমুদ (সুমন) উক্ত সম্পত্তিতে ওয়ারিশ হন। সকল রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে মুসলিম ফরায়েজ মোতাবেক আর.এস পর্চার জোত-২৮৫০ খতিয়ান নং-১৭৮৪ একাধিক দাগে ৩৩ দশমিক ০৪ শতাংশ সম্পত্তি রেকর্ডমূলে মালিক হয়ে নিজ নামে নামজারী করে সরকারের খাজনাদি পরিশোধ করেন তিনি। এতে চাচাতো ভাই হাবিবুর রহমান গংদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা তার খারিজ বাতিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়পুরা বরাবর আবেদন করেন। যাহার নং-৮০/২২। পরে ভুক্তভোগী শাহরিয়ার মাহমুদ ভাইদের বিরুদ্ধে আদালতে আইনের আশ্রয় নিয়ে রায়পুরা সহকারী জজ আদালতে দলিল বাতিলের মামলা দায়ের করেন। যাহার নং- ৩৯/২০২৩। উক্ত দলিলখানা গত ১৮/১০/২০০০ সালে ১১৪১৫ নং দলিল হিসেবে রায়পুরা সাব-রেজিস্টার অফিসে রেজিষ্ট্রি করেন। দলিল দাতা শাহরিয়ার মাহমুদ ওইসময় নাবালক ছিলেন। বিধায় কেনো নাবালক ব্যক্তি সম্পত্তি হস্তান্তর করত তাহলে নাবালক তাহার অভিভাবক নিযুক্ত ক্রমে অভিভাবকের মাধ্যমে বা আদালতের মাধ্যমে দলিল রেজিষ্ট্রি করত বলে আরজিতে উল্লেখ করে তা বাতিলের আবেদন করেন। বর্তমানে মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে। ১৬ মে (বুধবার) ভুক্তভোগী শাহরিয়ার মাহমুদ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাবিবুর রহমান গংদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৫ ধারা নালিশ করেন। আদালত বাদীর কথায় সন্তুষ্ট হয়ে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নালিশা ভূমিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সার্ভেয়ারকে দখল ও মালিকানা বিষয়ক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মোঃ শাহরিয়ার মাহমুদ (সুমন) বলেন, আমি আমার পরিবার নিয়ে ছোট থেকেই নরসিংদীতে বসবাস করে আসছি। আমার বাবা ৩২ বছর হয় মারা গেছেন। এই সুযোগে আমার আপন চাচাতো ভাই হাবিবুর রহমান, শওকত আলী, মিজানুর রহমান, বজলুর রহমান গংরা আমার প্রাপ্ত সম্পত্তি দখল করে আছে। সম্পত্তির হিসাব বুজিয়ে দিচ্ছে না। প্রতিনিয়ত আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি নাবালক থাকাকালে আমার ভাইয়েরা আমাকে মিথ্যা কথা বলে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি লিখে নেয়। আমি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে আইনের আশ্রয় নিয়ে আইনী লড়াই করে যাচ্ছি। যতই হুমকি-ধমকি, মিথ্যা মামলা করুক। তাতে আমি ভয় পাইনা। ইনশাআল্লাহ আল্লাহর রহমতে আমি জয়ী হবো। আমি সাংবাদিক বান্ধব মানুষ। সাংবাদিক হচ্ছে সমাজের আয়না। সাংবাদিকদের উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। গত বুধবার (১৭ মে) বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও পত্র-পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমার বিরুদ্ধে কখনও কোনো থানায় মামলা দায়ের হয়নি। তারপরও আপনাদের চোখে আমি সন্ত্রাসী। পৈত্রিক সম্পত্তি আদায় করা কি অন্যায়? আপনারা দয়া করে কোনো বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে শুধুমাত্র একপক্ষের কথা শুনে সংবাদ প্রকাশ করবেনা। একপক্ষের মিথ্যা তথ্য শুনে আমাকে সন্ত্রাসী বানিয়ে মিথ্যা ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশিত করে আমার ব্যক্তিগত জীবন ও সমাজে হেয় করে সমাজ সংসারে ছোট করা। সত্য খবর মানুষের সামনে তুলে ধরুন। এতে দেশ ও মানুষের কল্যাণ বয়ে আনবে।
এবিষয়ে হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তা তিনি রিসিভ করেননি। ফলে ওনার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।