মুক্তিযোদ্ধার কন্যাকে 'বীর নিবাসে' বসত গড়তে প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ
- মজিবুর রহমান খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
-
২০২৩-০৫-০৯ ০৯:২১:৩২
- Print
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্রয়াত এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে বীর নিবাসে বসতি গড়তে নানান ভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ তারুয়া গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল মোতালেবের ছোট কন্যা কান্তা ইসলাম আশুগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল মোতালিব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার খরমপুর কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। ব্যক্তি জীবনের তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। তার আখাউড়া একটি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। দুই কন্যা সন্তানকেও বিয়ে দিয়ে দেন। ২০১৯ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল মোতালিব মারা যান। তার দুই মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব মারা যাওয়ার পর বাড়িতে আর কোন বসতঘর ছিল না। সম্প্রতি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল মোতালেবের খালি জায়গায় তার ছোট মেয়ে কান্তা ইসলাম সরকারের পক্ষ থেকে বিল্ডিং 'বীর নিবাস' বরাদ্দ পান। শ্বশুর বাড়ি বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ দেখভাল করতে দুই মেয়ে মাঝে মাঝে আসেন। ছোট মেয়ে কান্তা জেলার নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রাম থেকে সম্প্রতি বাবা রেখে যাওয়া খালি জায়গায় বীর নিবাস নির্মাণ কাজের দেখভাল করতে আসা যাওয়া করছেন। বেশকিছু দিন আগে জমি ধান পেকে যাওয়ায় বাইরে থেকে হারভেস্টার মেশিন এনে ধান কাটেন। কান্তা গ্রামের বাইরে থেকে হারভেস্টার মেশিন আনায় মেনে নিতে পারেননি স্থানীয় আরেক হারভেস্টার মেশিনের মালিক স্থানীয় মফিজ উদ্দিনের ছেলে নাজমুল মিয়া (২৭)। নাজমুল বিষয়টি নিয়ে কান্তার উপর ক্ষোভ ঝাড়েন। এরপর থেকে কান্তার পিতার বরাদ্দ পাওয়া বীর নিবাস নির্মাণ করে বসত যেন না গড়তে পারেন নানান ভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যাচ্ছে। এই ঘটনায় প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার কন্যা মোসা. কান্তা ইসলাম গত ২৯ এপ্রিল আশুগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী মোসা. কান্তা ইসলাম বলেন, বীর নিবাস নির্মানকে কেন্দ্র করে নাজমুল আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ঝগড়া ঝাটি করার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে আমার নির্মানাধীন বীর নিবাসের সামনের মাটি অনুমতি ছাড়া কেটে নিয়ে যায়। সম্প্রতি জোরপূর্বক আমার ৫ শতক ধানের জমির প্রায় ৩ শতকের ধান নাজমুল মেশিনে কেটে ফেলে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে হুমকি ধমকি প্রদান করে। আমার কোন ভাই না থাকায় এসব কর্মকান্ড করছে। সে যে কোন সময় আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরনের ক্ষতি করার শঙ্কায় আছি। আমি যেন এই গ্রামে বসবাস করতে না পারি, সে এই কার্যকলাপ করে যাচ্ছে৷
এই বিষয়ে অভিযুক্ত নাজমুল মিয়া বলেন, আমি হারভেস্টার ও ট্রাক্টরের ব্যবসা করি। ভুলে তাদের জমির ধান কেটে ফেলা হয়েছিল। রাস্তায় বালু ফেলা ছিল, তা শুধু আমি সরিয়ে দিয়েছিলাম। আমি কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি না। অভিযোগ গুলো সত্য নয়৷
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বলেন, প্রতিদিন অনেকেই তো অভিযোগ দেন। সব গুলোর বিষয় তো মনে থাকে না। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছ থেকে জেনে অভিযোগটির বিষয়টি বিস্তারিত বলা যাবে।