ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, তদন্ত কমিটি গঠন; রূপগঞ্জে স্টিল মিলে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয
  • সাইফুল ইসলাম, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
  • ২০২৩-০৫-০৫ ১১:০৮:৩৬

নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের ভুলতার শাওঘাট এলাকায় অবস্থিত আরআইসিএল (রহিম ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড) নামের একটি স্টিল মিলের বাট্টিতে লোহা গলানোর সময় বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারজন।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই রি-রোলিং মিলের ভেতরে এ দূর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই নিয়ম নামে এক শ্রমিক মারা যান। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। 

নিহত চার শ্রমিক হলেন- শঙ্কর (৪০), মো. ইলিয়াস আলী (৩৫), নিয়ন (২০) ও আলমগীর (৩৩) । বর্তমানে রাব্বি, জুয়েল ও ইয়াছিন নামের আরও তিনজন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল হকের নেতৃত্বে প্রশাসন ওই কারখানায় গিয়ে গ্যাস এবং বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। এছাড়া ঘটনা তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। 

কমিটিতে আহবায়ক করা হয় ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুস্তাফিজুর রহমানকে, সদস্য সচিব করা হয় কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলামকে এবং সদস্য করা হয় নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ ২ এর ইঞ্জিনিয়ার আলতাফ হোসেনকে।

ইউনও ফায়সাল আলম বলেন, মিল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছি। ঘটনার তিন ঘন্টা পার হয়ে গেলেও ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ফায়ার সার্ভিস কে অবহিত করেননি মিল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত এবং সরকারি সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে।

এদিকে, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন জানান, আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ নিলয় মারা গে‌ছে। তিনি বলেন ‘নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকা থেকে দগ্ধ অবস্থায় ছয় জন আমাদের এখানে এসেছিলেন। তার ম‌ধ্যে নিল‌য়ের শরীরের ৯৭ শতাংশ দগ্ধ ছিল। এছাড়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা যান দগ্ধ ইলিয়াস আলী (৩৫)। তার শরীরের ৯৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিহত নিয়নের বাড়ি রাজবাড়ী সদর থানার রামকান্তপুর এলাকায়।

নাম না প্রকাশ্ শর্তে কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, গত ৩ মাস ধরে কারখানাটি চালু করা হয়েছে। কারখানাটিতে প্রাথমিকভাবে ২০-২৫ জন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কারখানাটি গত ৩ মাস ধরে চালু হলেও কারখানার ভেতরে কোন প্রকার অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থার সামগ্রী রাখা হয়নি। এছাড়া এ ধরনের ঝুকিপূর্ণ কাজ করার জন্য শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি কোন প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী। এতে করে এতোদিন পর্যন্ত শ্রমিকরা ঝুকি নিয়ে কারখানাটিতে কাজ করে যাচ্ছিল। এদিকে শ্রমিকরা কারখানা মালিকপক্ষকে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ও ঝুকিপূর্ণ কাজের সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করার কথা বলে আসছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ তাদের কোন প্রকার কর্নপাত না ঝুকিপূর্ণভাবে শ্রমিকদের কাজ করিয়ে যাচ্ছিল। এতে শ্রমিকরা মালিকপক্ষের প্রতি কিছু নাখোশ থাকলেও পেটের দায়ে শ্রমিক বাধ্য হয়ে কাজ করতে হতো।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, এখন পর্যন্ত নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা বা অভিযোগ দেননি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পক্ষ থেকে মামলা বা অভিযোগ না দিলে এই ঘটনায় দোষীদের অভিযুক্ত করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।

পুলিশের অসাদাচরনের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
 শিশু রুকাইয়া রহমান আনহাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন
নীলফামারীর চিলাহাটিতে পেকিন হাঁস  পালন বিষয়ক খামার দিবস অনুষ্ঠিত