ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
ডেঙ্গু ভেবে চিকিৎসা, মৃত্যুর আগে জানা গেলো ভিন্ন রোগের কথা
  • ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
  • ২০২৩-০৫-০৩ ১৩:১৪:৫৮
ডেঙ্গুর কোন লক্ষ্মণ ছিলোনা বরং শরীরে ছোপ ছোপ দাগের লক্ষ্মণ দেখে একজন শিশু বিশেষজ্ঞকে দেখানো হয়েছিলো। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষ্মণ দেখে চিকিৎসা দেন। তবে পরবর্তীতে ঢাকায় নিয়ে দেখা গেলো শিশুটির ডেঙ্গু হয়নি বরং রক্তের প্লাটিলেট তৈরি হচ্ছেনা। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় 'থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া'। আর এই অসুস্থতা প্রকাশের মাত্র এক মাসের মধ্যেই মারা যায় শিশুটি। গতকাল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে ঢাকার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। আদিব খান নামে চার বছরের এই শিশুটি ফরিদপুর শহরের রথখোলা মহল্লার বাসিন্দা তরুণ ট্রাভেলস ব্যবসায়ী কাইয়ুম খানের ছেলে। এক বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে আদিব ছোট ছিলো। তার বোন আকশা খান তারচেয়ে এক বছরের বড়। পারিবারিক সূত্র জানায়, গত রমজানের শুরুর দিকে আদিবের শরীরে ছোপ ছোপ দাগ দেখতে পেয়ে তার মায়ের মনে সন্দেহ হয়। এরপর ফরিদপুরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হলে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডেঙ্গু জ্বর সন্দেহে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। তবে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি না দেখে সামর্থ্যবান থাকায় অভিভাবকেরা বাচ্চাকে গত মাসের ৪ এপ্রিল ঢাকায় নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্বিবদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে বোনম্যারো টেষ্ট করার পরে আদিবের শরীরের রক্তে প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় বিষয়টি ধরা পড়ে। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চিকিৎসা বিদ্যা অনুযায়ী রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ার প্রধান কারণ দুটি। প্লাটিলেট ধ্বংস হয়ে যাওয়া আর নয়তো পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি না হওয়া। যখন রক্তের প্লাটিলেট কাউন্ট কমতে শুরু করে; তখন তাকে বলা হয় থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া। প্লাটিলেট রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। প্লাটিলেট কমে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে অতিরিক্ত সময় নেয়। শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা, রক্তের অক্সিজেন বহনক্ষমতা কমতে থাকে। তবে ফরিদপুরো এই রোগের চিকিৎসাতো দুরের কথা, পরীক্ষা-নিরীক্ষারও সুযোগ নেই। একারণে রক্তে প্লাটিনেট কমে যাওয়ার লক্ষ্মণকে সচরাচর ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষ্মণ ভেবে চিকিৎসা দেয়া হয়। ফরিদপুরের ওই শিশু বিশেষজ্ঞ বলেন, আমরা এসব জটিলতায় সামর্থ্যবানদের উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকি। আদিবের বাবা কাইয়ুম খান জানান, ঢাকায় নিয়ে তার সন্তানের বোনম্যারো টেষ্ট করানোর পরে চিকিৎসকেরা জানতে পারেন তার রক্তের প্লাটিলেট তৈরি হচ্ছেনা। সন্তানের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। পাসপোর্ট করাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা আর সময় পেলাম না। কাইয়ুম বলেন, ঢাকার বিএসএমএমইউ হাসপাতাল ছাড়াও আমরা ইবনেসিনা হসপিটাল এমনকি দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এভারকেয়ার তথা স্কয়ার হসপিটালেও ছুটে গিয়েছি। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়েছি। কিন্তু এই রোগের সুচিকিৎসার এখনো সঙ্কট রয়েছে দেশে। এদিকে, বুধবার সকালে শহরের পশ্চিম খাবাসপুরে শামসুল উলুম মাদ্রাসা মাঠে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়। আদিবের মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরিচিতজনেরা তার মাবাবাকে সহমর্মিতা জানাতে হাসপাতালে ছুটে যান। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বন্যা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যা করা উচিত
টাঙ্গাইলে বুরো হাসপাতালের শুভ সূচনা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিনামূল্যে ৩০০ জন দুস্থ রোগীর চক্ষু ছানি অপারেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন