ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
নলকূপের যন্ত্রাংশ চুরি, হাত-পা বেঁধে কিশোরকে নির্যাতন !
  • আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট
  • ২০২৩-০৪-০৬ ০৩:৫৭:০২
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে চুরির অভিযোগে হাত-পা বেঁধে সোহান মিয়া নামের এক কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য শামসুল হকের বিরুদ্ধে । এ ঘটনায় ওই ইউ-পি সদস‌্যকে গত বুধবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতনের শিকার সোহানকে দেখতে আসেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এর আগে গত রোববার শামসুল হকের নেতৃত্বে সোহানকে নির্যাতন করা হয়। ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, প্লাস দিয়ে সোহানের শরীরের চামড়া তুলে জখম ও বাঁশের মাঝে পা রেখে ডলা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সোহানের মামা আনিছার রহমান মামলা করলে বুধবার ভোরে উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শামসুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি জামিরবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল বলেন, রোববার দুপুরে গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন সোহান একটি নলকূপের যন্ত্রাংশ চুরি করেছে। পরে ইউপি সদস্য শামসুল হকের নেতৃত্বে তাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগীর মামার মামলায় ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আরও চার-পাঁচজন জড়িত। তারা বর্তমানে পলাতক। তাদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ আহত সোহানকে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে বুধবার বিকেলে উন্নত চিকিৎসার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্থানীয়রা জানান, সোহান ভোটমারী ইউনিয়নের উত্তর জামিরবাড়ি গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে। তার যখন ৫-৬ বছর বয়স, মানসিক প্রতিবন্ধী মা মোসলেমা বেগম নিখোঁজ হন। এখনও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি। পরে বাবা বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকে সোহান মামার কাছে থাকেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার চর দিয়ে হেঁটে জলঢাকা থানার কৈমারী খালার বাড়ি যাওয়ার পথে ভোটমারী ইউনিয়নের জামিরবাড়ি ব্যাঙ্গেরহাট এলাকায় নলকূপের একটি সকেট মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে কুড়িয়ে নেয় সোহান। কিন্তু এটি সে চুরি করেছে অভিযোগ দিয়ে ইউপি সদস্য শামসুল হকের নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াব মিয়া (৫০), শিক্ষক তাপস চন্দ্র রায় (৩৫), রানা মিয়াসহ (৩২) কয়েকজন আটক করে নির্যাতন করেন। খবর পেয়ে মামা তাঁকে উদ্ধার করেন। সোহানের মামা আনিছার রহমান বলেন, আমার বোন মানসিক প্রতিবন্ধী। ভাগনের অল্প বয়সে সে নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপর থেকে সোহান আমার বাড়িতেই থাকে। সে চুরির সঙ্গে জড়িত হতে পারে না। সে কখনও চুরি করেনি। অথচ চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্নগুলো স্পষ্ট। আমি নির্যাতনকারীদের বিচার চাই। সোহান মিয়া বলে, চোর বলে তারা আমাকে ধরেই মার শুরু করে। বাঁশ ডলা দেয়, প্লাস দিয়ে চামড়া টেনে তোলে। গলায় ছুরি ধরে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। আমার তো কেউ নেই। মামার বাড়িতে থেকে আইসক্রিম ও ঘাস বেঁচে চলি। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশের অসাদাচরনের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
 শিশু রুকাইয়া রহমান আনহাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন
নীলফামারীর চিলাহাটিতে পেকিন হাঁস  পালন বিষয়ক খামার দিবস অনুষ্ঠিত