ফরিদপুরে ওষুধ সিণ্ডিকেটের গলাকাটা বাণিজ্যে সাধারণ রোগীরা জিম্মি। রাজধানী সহ দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে ১০% থেকে ১২% কমিশনে ওষুধ বিক্রি হলেও অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীগণ সিণ্ডিকেট করে গায়ের দামে ওষুধ কিনতে ও বিক্রি করতে বাধ্য করেছে।
দেশের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে কমিশনে ওষুধ বিক্রয়ের রীতি চালু থাকলেও ফরিদপুরের মানুষ ভয়ঙ্কর ওষুধ সিণ্ডিকেটের কারণে সেই সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
সরকারের বা ওষুধ কোম্পানিগুলোর বেধে দেওয়া দামে ওষুধ বিক্রির অধিকার ব্যবসায়ীদের রয়েছে। এতে রাষ্ট্রীয় আইনের ব্যত্যয় ঘটে না।এটা যেমন চরম সত্য তেমনি প্রতিটি ভোক্তারও অধিকার রয়েছে প্রতিটি পণ্য রাষ্ট্রিয় নীতিমালা অনুসরণ করে তার নিকট পৌঁছচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া। এর ব্যতিক্রম হলে কোন ব্যবসায়ী পণ্য বিক্রয় করতে পারবে না, বা করলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে।
ওষুধ বিক্রয় নীতিমালার প্রথম শর্ত হচ্ছে বৈধ কাগজ পত্র, ওষুধ সংরক্ষণে তাপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকা। ভাল ভাবে খোঁজ নিলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়া আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
নীতিমালার ২ নম্বর শর্তানুযায়ী, ফার্মেসি পরিচালনার জন্য একজন রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্ট থাকতে হবে অবশ্যই। ফার্মাসিস্টের অনুপস্থিতিতে কোনো ওষুধ ডিসপেন্স বা বিক্রি করা যাবে না। কোন ভাবেই চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ বিক্রয় করা যাবে না। অথচ ফরিদপুরে অনেক ওষুধের দোকানে রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্ট নেই, বা থাকলেও তারা ৭ দিনের কোর্স করা সি ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট। কোন কোন দোকানে তাও নেই।
প্রতিটি ফার্মাসিতে ফার্মাসিস্টের রেজিস্টার্ড সনদ উন্মুক্ত স্থানে ক্রেতার নজরে পড়ে এমন স্থানে প্রদর্শন করা বাধ্যতা মূলক। ফার্মাসিস্ট পরিবর্তন হলে অবশ্যই তা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে।
কিন্তু সামান্য কিছু ফার্মাসি ছাড়া এ শর্ত কেউই মানে না। তাপনিয়ন্ত্রণে ফার্মেসিগুলোতে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকা বাধ্যতা মূলক থাকলেও সেদিকে তেমন কোন খেয়াল নেই। অথচ তাপ সংবেদনশীল নানা ওষুধ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখার বিধান আছে নীতিমালায়।
ফার্মেসি ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় বলা হয়েছে, সংবেদনশীল ওষুধ ফ্রিজে রাখতে হবে। ফ্রিজ ২৪ ঘণ্টা চালু রাখতে হবে। নির্ধারিত শেলফে ওষুধ সংরক্ষণ করতে হবে। পূর্ণ কোর্সে ব্যবস্থাপত্রে নির্দেশিত নিয়মে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে পরামর্শ দিতে হবে।
কিন্তু অনেক ফার্মেসিতে এসব মানা হয় না। এতশত অনিয়ম করে ঔষধ ব্যবসায়ীরা বর্তমানে সিণ্ডিকেটের মাধ্যমে মানুষকে জিম্মি কর ব্যবসা পরিচালনা করছে। আর এই সিন্ডকেটের হাত থেকে রক্ষা চায় ফরিদপুরবাসী।