ঢাকা বুধবার, মে ৮, ২০২৪
নেছারাবাদে ভাতার কার্ড বাবদ দশ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ
  • নেছারাবাদ ও কাওখালি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি:
  • ২০২৩-০৩-৩০ ০৭:৪১:৩৫

নেছারাবাদ উপজেলায় রতন বেপারী (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সংরক্ষিত আসনের  নারী ইউপি সদস্য কানক প্রভার বিরুদ্ধে। ওই প্রতিবন্ধী ব্যাক্তি একটি অসচ্ছল পরিবারের মানসিক প্রতিবন্ধী। উপজেলার সারেংকাঠি ইউনিয়নের গয়েসকাঠি গ্রামের ১ নং ওয়ার্ডের নিরঞ্জন বেপারীর ছেলে।

অভিযুক্ত ব্যক্তি সারেংকাঠী ইউনিয়নের সংরক্ষিত এক দুই ও তিন নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য। এ ঘটনায় ওই এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঐ অভিযোগ কিছুটা অস্বীকার করে ইউপি সদস্য কানক প্রভা বলেন, এতো টাকা নেয়া হয়নি। অফিসের খরচ সহ এবং আসা-যাওয়া বাবদ সামান্য কিছু খরচের টাকা নেয়া হয়েছে।

বিষয়টি শুনে ইউপি চেয়ারম্যান মো: নজরুল ইসলাম বলেছেন কনক প্রভা অনেকটা লোভী প্রকৃতীর লোক। তার বিরুদ্ধে আমি এর পূর্বেও অনেক অভিযোগ পেয়েছি।

ভুক্তভোগী ওই মানষিক প্রতিবন্ধীর আপন ভাই বিপ্লব বেপারী অভিযোগ করেন, আমার বাবা একজন বয়স্ক মানুষ। ছোট ভাই রতন প্রতিবন্ধি। সংসারে আমার স্ত্রী ও দুই বাচ্চা আছে। পরিবারের উপার্জন ক্ষম ব্যক্তি বলতে আম। আমি একজন সামান্য আয়ের দিনমজুর। তাই এত লোকের ভরণ পোষণ টানতে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ভাই রতনের কথা ভেবে আমাদের ইউপি সদস্য কনক প্রভার কাছে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড চেয়েছি। মেম্বার আমাকে নানা কথা বলে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি কার্ড দিতে রাজি হয়। বৃদ্ধ বাবার জমানো ৭০০ টাকা সহ ধার দেনা করে দশ হাজার টাকা মেম্বার কনক প্রভার কাছে দিয়েছি। টাকা পেয়ে মেম্বার আমার ভাই রতনকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছে। তবে সে কার্ডে এখনো কোন ভাতার টাকা আসেনাই।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কনক প্রভা বলে," বিপ্লবের ভাই রতন একজন প্রতিবন্ধী লোক। এজন্য বিপ্লব তার ভাই রতনের জন্য একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিতে বলছে। এজন্য বিপ্লবের কাছ থেকে সমাজসেবা অফিসের খরচ বাবদ মাত্র এক হাজার টাকা নিয়েছি।

ওই গ্রামের একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন,ইউপি সদস্য কনক প্রভা টাকা ছাড়া কোন কাজ করেন না। টাকার বিনিময়ে শালিশ বাণিজ্য, প্রতিবন্ধী কার্ড ও মাতৃত্বকালীন কার্ড করিয়ে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, অভিযুক্ত কনক প্রভা বলেন, সব মিথ্যা কথা ষড়যন্ত্র। আমি তিন বারের মেম্বার। আমি ১৫টি প্রতিবন্ধী কার্ড ও পাঁচটি মাতৃত্বকালীন কার্ড পেয়েছি। যে ব্যক্তি কার্ড চেয়েছে তাকেই কার্ড দিয়ে দিয়েছি। তবে অফিসের খরচ বাবদ এবং আমার আসা-যাওয়ার জন্য ১০০০ টাকা নিয়েছি।আপনারা চাইলে আমি ঐ এক হাজার টাকা ফেরত দিয়ে দিবো।

ওই গ্রামের বিপ্লব ব্যাপারীর প্রতিবেশী তপন মন্ডল বলেন, " আমি একজন মোটরসাইকেল চালক। ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাই। বিপ্লবের পরিবার খুবই অস্বচ্ছল। বিপ্লবের ভাই রতনের কার্ডের জন্য মেম্বার কনক প্রভাকে ছয় হাজার টাকা দিয়েছ।ঐ টাকা দেওয়ার সময় আমি সাথে ছিলাম। আমার সামনেই কানন প্রভকে টাকা দিয়েছে ।  পরে মেম্বারকে আর কোন টাকা দেয়া হয়েছে কিনা তা আমি জানিনা"।

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা তপন বিশ্বাস বলেন 'কোন ভাতার কার্ডে অফিসে কোন প্রকার টাকা নেয়া হয়না। ওই ইউপি সদস্য যা বলেছেন, সব মনগড়া কথা বলেছন। সব মিথ্যা কথা বলেছেন। কার্ডের জন্য কেন অসহায় মানুষের কাছে তিনি টাকা নিচ্ছেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমি দেখবো এবং এর ব্যবস্থা নেয়া হবে'।

ইউপি চেয়ারম্যান মো: নজরুল ইসলাম বলেন, 'ইউপি সদস্য কনক প্রভা লোভী প্রকৃতীর লোক। এর পূর্বেও তার বিরুদ্ধে আমি একাধিক অভিযোগ শুনেছি। তাকে হাত নাতে ধরতে পারছিনা। যে লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে সে আমার কাছে অভিযোগ দিলেই আমি ওই টাকা আদায় করে দিব'।

নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, ' একটি লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ি যথার্থ ব্যবস্থা নেয়া হবে'। 

নীলফামারীতে ৪৫তম জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
দিনাজপুরে পিকআপসহ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ৪ জন সদস্য গ্রেফতার
অর্ধ কোটি টাকা লোপাটের পর এবার ইউসিসি’র পকেট কমিটি গঠন!
সর্বশেষ সংবাদ