ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে ইয়াছিন আরাফাত আবিদ (২১) নামের এক তরুনকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রেমিকাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আবিদ জেলা শহরের পশ্চিম পাইকপাড়ার ট্যাংকেরপাড় এলাকার হেলাল মিয়ার ছেলে। গত ২৩শে ফেব্রুয়ারী আশুগঞ্জের সোনারামপুরের একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় নিহত আবিদের বাবা হেলাল মিয়া বাদি হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরা গ্রামের মোবারক খন্দকারের মেয়ে নাহিদা আক্তার তৃষা (১৮) সহ ৭জনকে আসামী করে আশুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরমধ্যে তৃষাসহ ৪জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, ইয়াছিন আরাফাত আদিবের সাথে নাহিমা আক্তার তৃষার কথিত প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আদিবকে সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুক এর মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তৃষা অন্যান্য আসামীদের নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারী বেলা ১১টার দিকে সুকৌশলে ডেকে নিয়ে আটক করে। এরপর ২০ লক্ষ টাকা এনে দিতে চাপ প্রয়োগ করে। তাদের প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় পরদিন দুপুরে আদিবকে হত্যা করা হয়। এরপর আশুগঞ্জের সোনারামপুরের লাভিডা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হত্যা ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়। এনিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তৃষাসহ ৩জনকে আটক করে আশুগঞ্জ থানায় খবর দেয়।
আবিদের চাচা জাকির হোসেন জানান, মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে দেখি আবিদের মরদেহের পাশে একটি মেয়ে বসা । মেয়েটি জানায় সে আবিদের স্ত্রী এবং মৃত অবস্থায় আবিদের লাশ হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। সে আরও জানায়, আবিদ ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মেয়েটির কথা অনুযায়ী আমরা যে বাসায় তারা ছিল সেখানে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি ফাঁসিতে ঝুলানোর মতো ঘরে কিছুই নেই, শুধু দুইটি জানালা ছিল। আমরা ধারণা করছি আবিদকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। মেয়েটি নিজেকে আবিদের স্ত্রী দাবি করলেও এখনো কোন কাবিননামা দেখাতে পারেনি। পুলিশ তাদের দেয়া এজাহার পরিবর্তন করেছে বলে অভিযোগ করেন। তাছাড়া আসামীর বয়সও পরিবর্তন করা হয়েছে। আমরা অন্য আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানাই৷
আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান জানান, উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাশের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে ইয়াছিন আরাফাত আবিদ নামের এক তরুনের মরদেহ মেলে। হাসপাতালে লাশের সাথে তৃষা নামের এক তরুণী ছিল। প্রাথমিক ভাবে সে পুলিশকে জানায়, আবিদের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরিবারের অজান্তে বিয়ে করে পরিচিত এক বাসায় আশ্রয়ে ছিল। পরদিন সকালে তৃষা টয়লেট থেকে এসে দেখে আবিদ আত্মহত্যা করেছে। হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় তৃষাসহ ৪জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলায় জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী সব লিখা হয়েছে। আমরা ঘটনার রহস্য উদঘাটিত করতে ৫দিনের রিমান্ড আবেদন জানাব। পাশাপাশি ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছি।