ঢাকা শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
ফুলবাড়ীতে যমুনা নদী বেদখল: ময়লা-আবর্জনার স্তুপ
  • শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর
  • ২০২৩-০৩-১১ ১১:১৭:০২

প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাচ্ছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে যমুনা নদীর দু'পাড়ে জমি । কিন্তু দেখার কেউ নেই। এতে বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের।

 সরকার নদী রক্ষায় ও নদী খনন প্রকল্প হাতে নিলেও দিনাজপুরের ফুলবাড়ী শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীটি খনন না করায় পূর্ব দিকে পলি মাটি জমে চর জেগে গেছে। নদীর দু'ধারে যাদের বাড়ী ঘর রয়েছে তারা অনেকে প্রভাবশালী।  সুযোগ বুঝে প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা নদীর জায়গা দখল করে বাড়ী-ঘর,প্রতিষ্ঠান নির্মান করছেন। এতে নালায় পরিনত হয়ে গেছে নদী। এভাবে যমুনা নদীর জায়গা দখল হয়ে গেলে নদী আর থাকবে না বলে মনে করছেন নদী বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদরা।  

স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও ফুলবাড়ী যমুনা নদীর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটি খনন না করায় নালায় পরিনত হয়ে। চর পরে এখন আর নদী নাই। ফুলবাড়ী যমুনা নদীটি এখন মরা নদী হিসেবে পরিনত হয়েছে। নদীটি খনন করা হলে সাড়া বছর নদীতে পানি ধরে থাকলে কৃষিতে উৎপাদন বাড়বে। কিন্তু কারো কোন খবর নেই এই নদীটি রক্ষার্থে। এখন আর এই নদী নদী নাই যার যার ইচ্ছা মতো জায়গা দখল করে বাড়ী ঘর নির্মান করছে। নদীতে নামার একসময় রাস্তা ছিলো। সেই রাস্তা বন্ধ করে প্রভাবশালীরা বাড়ী-ঘর নির্মান করে ফেলেছে । জনৈকো এক চৌধুরী স্বাধীনতার পর প্রভাব খাটিয়ে বেশ কিছু জায়গা দখল করে নিয়েছে, সেই জায়গা দিয়ে রাস্তা ছিলো নদীতে নামার।  জনসাধারন নদীতে নেমে গোসল করতো । হিন্দু-সম্প্রদায়ের পরিবারেরা প্রতি বছর সেখানে নেমে  ঘাট পূজা করতো তাও তাদের নামার জায়গা টুকু নাই । সেখানে হিন্দ- সম্প্রদায়ের পূজা করার একটি মন্দির ছিলো। এখন সেই মন্দিরও সেখানে নেই। দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালী চৌধুরীরা। হয়তবা আর এই নদীর জায়গা যারা দখল করে নিয়েছে উদ্ধার সম্ভব নয়। পরিবেশবাদীরা নদী রক্ষার্থে  আন্দোলন করলেও তেমন কোন সাড়া মেলে না। হাতে গনা দেশের কয়েকটি নদীর পাড় উদ্ধারের অভিযান হলেও ফুলবাড়ীর যমুনা  নদীর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর পাড় দখল কবে উদ্ধার হবে কেউ জানে না ? এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী বাসী  অতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য প্রশাসনের আসু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নদীতে ফুলবাড়ী পৌরসভার আবর্জনা ফেলায় পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। ফুলবাড়ী পৌরসভায় আর্বজনা ফেলার নির্দিষ্ট কোন জায়গা না থাকায় আবর্জনা ফেলার যমুনা নদীই যেনো একমাত্র ভরসা।পৌরসভার আর্বজনা ফেলায় পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। ফুলবাড়ী পৌরসভা প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়ায় জনসাধারন তেমন কোন পৌর সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। রাস্তা ঘাট, লাইটিং, পানি নিস্কাশন বিশুদ্ধ পানির অভাবতো রয়ে গেছে । এরপর  ফুলবাড়ী পৌর শহরের উপর দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করায় ধুলায় বালির শহর পরিণত হয়েছে।

 ১৯৮৩ সালে ফুলবাড়ী পৌরসভা স্থাপিত হলেও ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও কাংখিত উন্নয়ন হয়নি। যার যার মতো পৌরসভাটি পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমান বাসাবাড়ি, হোটেল রেস্তোরার আর্বজনা গুলি ব্রীজের নিচে ফেলে  দেওয়ায় সেখানে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আবার মাঝে মাঝে কেবা কাহারা আগুন জালিয়ে পুুড়িয়ে দিচ্ছেন। এখন ব্রীজের নিচে আর্বজনায় নদী ভরাট হচ্ছে। বর্ষা কালের এই আর্বজনা গুলি নদীতে জমে গিয়ে  জমাট বেধে থাকছে। যেহেতু নদীতে পানি চলাচল প্রায় বন্ধ। নদীর চর গুলি এখন চাষাবাদ করছে কৃষক। ফুলবাড়ী পৌর শহর এখন পরিবেশের বিপর্যয়ে নেমেছে।

এবিষয়ে ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র মাহমুদুল আলম লিটনের সাথে কথা বললে তিনি যমুনা নদীতে আবর্জনা ফেলার বিষয়টি অস্বীকার করেন।বলেন,'আমরা পৌরসভার কিছু পরিত্যক্ত স্থানে ময়লা- আবর্জনা ফেলি। নদীতে নয়। হয়তো ময়লা-আবর্জনা গড়িয়ে নদীতে যায়। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা শীঘ্রই তা সমাধানের ব্যাবস্থা নিবো।'

এ বিষয়ে স্থানীয় পরিবেশ কর্মী নুরুজ্জামান উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান,'নদীর পরিবেশ বিপর্যয়ে নেমে এসেছে। শহর পরিষ্কার কল্পে পৌর মেয়রের সদ ইচ্ছা থাকলেও শহরের  আর্বজনা কোথায় ফেলানো হবে তার কোন  নির্দিষ্ট কোন স্থান নেই । গভীর রাতে ব্রীজের দুই ধারে, র্ঊব্বশী হলের পিছনে ব্রীজের নিচ্ছে আর্বজনার স্থুপ জমা হচ্ছে। ফুলবাড়ী শহরের বিভিন্ন এলাকায় এখন আর্বজনার শহর হিসেবে গড়ে উঠছে। নদীতে প্লাসটিক জমে ভরে গেছে নদীর মূল ভূখন্ডে এতে কারো মাথা ব্যাথা নেই।' এদিকে স্থানীয় প্রবীন সাংবাদিক আফজাল হোসেন জানান,ফুলবাড়ী পৌরসভায় বিভিন্ন এলাকায় ধুলা বালি যাতে না উড়ায় সেজন্য পানি দেওয়ার ব্যাস্থা ছিলো এখন তা নেই। ফুলবাড়ী পৌরসভার অভিভাক থাকলেও  এখন এসব দেখার  দায়িত্ব কার? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।'

এব্যাপারে পৌর বাসি পরিবেশ রক্ষার্থে প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

শ্রমিকদের ধর্মঘটে অচল আশুগঞ্জ নদী বন্দর
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে  একজনের মৃত্যু
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে সকল সুবিধা দিত হাসিনা:  আলতাফ হোসেন চৌধুরী