ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশা চালক হত্যা মামলায় যুবকের মৃত্যুদন্ড
- মজিবুর রহমান খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
-
২০২৩-০৩-০৬ ১০:৪৪:১৩
- Print
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় অটোরিকসা চালক সাইদুর রহমান-(১৯) হত্যা মামলায় মো. রানা মিয়া-(২২) নামে এক যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। সোমবার (০৬ মার্চ) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এই রায় ঘোষনা করেন। নিহত সাইদুর রহমান কসবা উপজেলার কাঞ্চনমুড়ি গ্রামের হুমায়ূন কবিরের ছেলে। মৃত্যুদন্ড পাওয়া রানা মিয়া একই গ্রামের মো. দানু মিয়ার ছেলে। রায় ঘোষনার সময় আসামী রানা মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাঞ্চনমুড়ি গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকসা চালক সাইদুর রহমানকে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ধারীরা যেতে বলেন। পরে সাইদুর রহমান তার মাকে জানায়, সে পাশের গ্রামের একটি মাহফিলে যাচ্ছে। এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি করেন। সাইদুরের মা তার কোনো সন্ধ্যান না পেয়ে ঘটনার দুইদিন পর ৩১ ডিসেম্বর কসবা থানায় একটি জিডি করেন।
পরে পুলিশ জিডির সূত্র ধরে নিখোঁজ সাইদুরকে খুঁজতে থাকেন। পরে ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি কাঞ্চনমুড়ি গ্রামের মারকাজুল কোরআন ক্যাডেট মাদরাসার পরিত্যক্ত একটি বাথরুমের সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে সাইদুরের জবাই করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
৩ জানুয়ারি পুলিশ সাইদুরের মায়ের জিডিটি মামলাটি হিসেবে গ্রহন করে। পরে পুলিশ ঘটনার অনুসন্ধ্যান করে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার দায়ে একই গ্রামের রানা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
পরে রানা মিয়া হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
জবানবন্দিতে রানা মিয়া জানায়, একটি মোবাইল ফোন নিয়ে বিরোধের জের ধরে সাইদুরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে তথ্য প্রমান উপস্থাপন করেন। আদালত মামলাটি অধিকতর শুনানি শেষে সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে আসামী রানা মিয়াকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন।
এই রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও নিহতের সাইদুরের মা হনুফা বেগম। আদালত প্রাঙ্গনে তিনি বলেন, আমি আমার ছেলের হত্যাকান্ডের রায় পেয়েছি। আমি দ্রæত এই রায় বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দ্বীন ইসলাম জানান, এই রায়ের মধ্য দিয়ে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হত্যা করে যে কেউ পার পায় না এটাই এর সর্বশেষ প্রমান।
অন্যদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম জানান, এই মামলায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা এই হত্যাকান্ডের ঘটনার পেছনে পরিকল্পনাকারী হিসেবে শারমিন বেগম নামে এক মহিলাকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু তাকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আসামী রানা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।