সরকারের লাখ টাকার আবাসন প্রকল্প এখন শুধুই গোয়াল ঘর
- এইচ এম মোজাহিদুল ইসলাম নান্নু, পটুয়াখালী
-
২০২৩-০৩-০৬ ০৫:১১:৫৪
- Print
বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামের ০৭ নং ওয়ার্ডের হাওলাদার বাড়ির সামনের আবাসন প্রকল্প এখন পরিত্যক্ত প্রায়।
মানুষের জন্য তৈরি আবাসন পরিণত হয়েছে গোয়াল ঘরে, কয়েকটি আবার গোয়াল ঘরেরও অযোগ্য। ফ্লোর কাঁচা, লোহার এঙ্গেল ও টিন দিয়ে ৩০ টি পরিবারের থাকার জন্য ৩টি আবাসন তৈরি করা হয়েছিল। ৩টির এক একটিতে ১০টি পরিবার থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে আবাসনে খুব খারাপ অবস্থার কারনে অতি কষ্টে তিনটি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আবাসনের একটা পরিত্যক্ত ঘরে দুটি গরু বাধা ও খড়কুটো রাখা তার পাশেরটি গরু রাখার ও অযোগ্য কারন একদিকে লোহার এঙ্গেল ও টিন ঝুলে আছে যেকোন সময় যে কারও গায়ে পরে দূর্ঘটনা শিকার হতে পারে। অন্য ঘরে গিয়ে দেখা গেল সেখানে ১০ পরিবার থাকার কথা থাকলেও কোন ভাবে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে টিকে রয়েছে তিনটি পরিবার।
আবাসনের বাসিন্দা ফারুক শরীফের স্ত্রী সাজেদা বলেন তাদের যাওয়ার কোন যায়গা না থাকায় এখানে আছেন। বর্ষার মৌসুমে ঘর থেকে পানি পড়ে ঘরে থাকার অনুপযোগী হয়ে গেলেও তাদের থাকতে হয়। মাদকসেবী ও চোরের তান্ডবে এখানে কতদিন থাকতে পারবেন তা নিয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করেন।
আবাসনের অপর বাসিন্দা ফারুক বলেন আবাসন তৈরির পর থেকে এখানে থাকা শুরু করি কিন্তু বর্তমানে এখানের এতই খারাপ অবস্থা যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। একটা টিউবয়েল ছিল তাও চোরে নিয়ে গেছে। টয়লেটের দরজা ও বেড়ার টিন চোরে নিয়ে গেছে।
মো: আরিফ হাওলাদার জানান এখানে চোর ও মাদকসেবিদের উপদ্রপ খুব বেশি। আমরা স্থানীয় মেম্বারকে জানিয়েছি তিনি বলেছেন তিনি বিষয়টি দেখবেন।আব্দুল জব্বার বলেন এখানে আবাসনে থাকার মত গরিব মানুষ থাকলেও সুযোগ সুবিধা না পাওয়ার কারনে যারা ছিল তারাও চলে গেছে। তিনি আরো বলেন অন্যান্য জায়গায় দেখেছি আবাসনে বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয় কিন্তু এখানে কখনো সুযোগ-সুবিধা কেউ পেয়েছে বলে জানা নাই।
এখানে যারা থাকেন জীবিকার তাগিদে তাদের দূরে যেতে হয়, কিন্তু চলাচলের জন্য রাস্তা না থাকার কারনে তাদের খুব কষ্ট করতে হয় এবং মাদক সেবীরা ঘর থেকে বিভিন্ন জিনিস চুরি করে নিয়ে যায়।যেকারনে অনেকেই চলে গেছে।
এই বিষয়ে কথা হয়েছিলো আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেলী পারভিন মালা'র সাথে তিনি জানান আমি এই আবাসনের ব্যাপারে জানি এবং পূর্বের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে জানিয়েছি তিনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছিলেন, কিন্তু তিনি চলে যাওয়াতে আর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় নি। ইউনিয়ন পরিষদের থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানান।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম জানান বিষয়টি আমার জানা নেই এখন জানলাম, উক্ত স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখব এবং ব্যবস্থা নেব।
স্থানীয়দের দাবি বসবাসের অযোগ্য এই আবাসনকে ভেঙে পুনঃ নির্মাণ করা হোক।