ঢাকা শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
সিরাজগঞ্জে ২৫ বছরেও এমপিও হয়নি মুক্তিযোদ্ধা উচ্চ বিদ্যালয়: শিক্ষক কর্মচারীদের মানবেতর জীবন যাপন
  • নাজমুল হোসেন, সিরাজগঞ্জ
  • ২০২৩-০৩-০৬ ০৫:০৮:৫৮
সিরাজগঞ্জে সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নে গজারিয়ায় প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা উচ্চ বিদ্যালয় এমপিও না হওয়ায় ৬ শিক্ষক কর্মচারীদের মানবেতার জীবন যাপন করছে। ফলে বিদ্যালয়ের ২৫০ জন শিক্ষার্থীর পড়ালেখার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ টিনের ঘরে চলছে পাঠ দান। বিদ্যালয়ের মেঝে কাঁচা, মাটিখুরে ইঁদুরের ছোটাছুটি মাকড়শার চাদরে আবদ্ধ। ছিদ্র টিনের ঘরে চলছে ক্লাসের কার্যক্রম। লেখার জন্য নেই তেমন কোন ভালো ব্লাকবোর্ড। কথা হয় স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী মারজানা খাতুনের সঙ্গে সে বলে, মানীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাবান্ধব শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেক কিছুই করছে। আমরা চাই আমাদের এ প্রতিষ্ঠানটি অতিদ্রুত এমপিও ভুক্তকরে আমাদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিবেন। ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী আয়শা সিদ্দিকা নীলা ও রতন বলেন, আমাদের শ্রেনী কক্ষগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ বসার জন্য ব্রেঞ্চ নেই , বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র গরম সময়ে ক্লাস করতে খুবই কষ্ট হয় । এছাড়াও বৃষ্টি দিনে টিনের চালা দিয়ে পানি চুয়ে পরার কারণে বই খাতা ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শারীরিক শিক্ষক উম্মে সালমা বলেন, ১নং রতনকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান বিদ্যালয়টির ৮১ শতাংশ ভূমি দান করেন। পরে সেই জমির উপর মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর, সাবেক জাতীয়পরিষদ সদস্য, সাবেক জেলা গভর্ণর, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি, বর্ষীয়ান জননেতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় মরহুম মোতাহার হোসেন তালুকদার ১৯৯৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন । প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীরা বিগত ২৫ বছর ধরে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। জানাযায়, উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নে দেশ গঠনের অগ্রণী ভূমিকা যাদের। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বসবাস এই এলাকায় অনেক বেশি রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি মুক্তিযোদ্ধা উচ্চ বিদ্যালয়ে নামকরণ করা হলেও আজও এমপিও করণ হয়নি। ২০০৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট চারবার দেশে পর্যায়ক্রমে হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও করণ হলেও অদৃশ্য কারণে এই প্রতিষ্ঠানটি এমপিও হয়নি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫০জন, শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে ৬ জন। কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীরা না পাচ্ছে কোন বেতন ভাতা, না পায় সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা। অনেকেই শিক্ষাকতার পাশাপাশি বিকল্প ছোট খাটো কাজ করে পরিবার পরিজন নিয়ে কোন রকমে দিন -যাপন করছে। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারী সহ এলাকাবাসীর একটাই কথা আর কতবছর অপেক্ষা করলে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও হবে! এমপিও ভুক্তির বিষয়টি এখন অত্র এলাকার মানুষের প্রাণের দাবী। প্রধান শিক্ষক আবুসামা বলেন, রাজশাহী বোর্ডের সকল নিয়ম অনুযায়ী স্কুলটি ২০২৩ হতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত হাল নাগাদ সকল তথ্য ও নিবন্ধন(নিম্ন মাধ্যমিক) করা হয়েছে। বর্তমানে এক জন মহিলা সহকারী শিক্ষক এবং দুই জন পুরুষ সহকারী শিক্ষক, এছাড়া এক জন অফিস সহকারী ও পিয়ন কাম গার্ড রয়েছে। ৬ষ্ঠ হতে ৮শ্রেণি পর্যন্ত ২ শত ৫০ জন শিক্ষার্থীদেরকে পাঠদান করানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর হতে অধ্যবধি ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে আসছে। এখানে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি ও পাশের হার যথেষ্ঠ সন্তোষ জনক। তিনি অতিদ্রুত স্কুলটিকে এমপিও ভুক্ত করার জন্য সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানান। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নাজমা খাতুন এ বিষয়ে মুঠোফোন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি দায়িত্ব ভার গ্রহণ করা পর থেকে নিষ্ঠার সাথে আমি শ্রম ও মেধা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী দিনে এই প্রতিষ্ঠান এমপিও বিষয়ে আমার প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে। এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজি সলিম উল্লাহ বলেন,আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত ভালভাবে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। প্রতিষ্ঠাটিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করবো।
শ্রমিকদের ধর্মঘটে অচল আশুগঞ্জ নদী বন্দর
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে  একজনের মৃত্যু
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে সকল সুবিধা দিত হাসিনা:  আলতাফ হোসেন চৌধুরী