দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে যৌন নিপিড়নের মামলা দায়ের
- মামুনুর রশিদ, পার্বতীপুর(দিনাজপুর)
-
২০২৩-০৩-০৪ ০৪:৫৭:৫৪
- Print
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ইউপি সদস্য মাহাবুব আলম শাহ এর বিরুদ্ধে এক দশম শ্রেনির ছাত্রীর উপর যৌন নিপিড়নের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত মাহাবুব আলম উপজেলার ৭নং মোস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ও কুতুবপুর গ্রামের জব্বার আলী শাহ এর পুত্র।
এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা আনোয়ার হোসেন সুবিচার ও শাস্তির দাবী জানিয়ে ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আজ শনিবার সকালে পার্বতীপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ০৭।
মামলার লিখিত বিবরন ও বাদী আনোয়ার হোসেনের ভাষ্যমতে জানা যায়, মাহাবুব আলম একজন মুখোষধারী সিরিয়াল যৌন নিপিড়ক। যৌন লালসা মেটাতে সে দরিদ্র পরিবারের সুন্দরী মেয়ে গৃহবধুদের টার্গেটে পরিনত করে। অর্থ সাহায্য, ভরনপোষনের প্রলোভন ও মিথ্যা মামলার ফাদে ফেলে অসহায়দের উপর যৌন নিপিড়ন, যৌনকর্মে জড়িত করার চেষ্টা তার দীর্ঘদিনের স্বভাবজাত নেশা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ২৩ ফেব্রæয়ারী সকাল ১১টার দিকে ওই যৌন নিপিড়ক মাহাবুব আলম মামলার বাদী আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে প্রবেশ করে তার মেয়েকে একাকি পেয়ে কুপ্রস্তাব দেয় ও যৌন নিপিড়নের চেষ্টা চালায়। মেয়েটি ডাক চিৎকার দিয়ে দ্রæত ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লে মাহাবুব আলমও স্থান ত্যাগ করে। এর আগেও একবার মেয়েটিকে জাপটে ধরে তার উপর যৌন নিপিড়ন করে মাহাবুব আলম। এসব এঘটনা তার বাবা মাকে জানালে বিষয়টি নিয়ে গ্রামে একাধিক শালিশ বৈঠক হলেও সুবিচার না পাওয়ায় বাদী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে মামলার বাদী আনোয়ার হোসেন বলেন, থানায় সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে যৌন নিপিড়নের মামলা দায়ের হলেও প্রকৃত ঘটনা ছিল এর চেয়েও জঘন্য। তিনি গত শুক্রবার রাতে ও আজ শনিবার দুপুরে এ প্রতিনিধিকে মুঠোফোনে জানায়, তিন বছর পূর্বে কর্মের সন্ধানে তিনি স্বপরিবারে ঢাকা শহরে যাওয়ার সিন্ধান্ত নিলে ইউপি সদস্য মাহাবুব আলমের কুটচালে ফেসে যায় তার মেয়ে। মাহাবুব আলম তার পুত্রবধু করার আশ্বাস ও লেখাপড়ার খরচ চালানোর প্রলোভন দেখিয়ে আনোয়ার হোসেনের মেয়েকে নিজের বাসায় রেখে দেয়।
অতপর আনোয়ার হোসেন স্বস্ত্রীক ঢাকা চলে গেলে মাহাবুব আলম তার মহানুভবতার মুখোষের ভেতরে লুকিয়ে রাখা যৌন লালসার দানবীয় কর্মে লিপ্ত হয়। তার অমানুষিক নির্যাতনের ফলে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। লেখাপড়ায় মন বসেনা। তার উপর পাশবিক নির্যাতনের কথা মনে পড়লে মেয়েটি ডুকরে ডুকরে কেদে ওঠে।
মেয়েটির বাবা আনোয়ার হোসেন আরও জানায়, মাহাবুব আলম আমাকে চুরি, ডাকাতির মামলায় ফাসিয়ে জেল খাটাবে। সব সময় সে আমার মেয়েকে এমন হুমকি দিত। এ কারনে আমার সরলপ্রান মেয়েটি বাধ্য হয়েই মাহাবুব আলমের দ্বারা বারবার পাশবিক নির্যাতনের শিকারে পরিনত হয়।
গত ২৩ ফেব্রæয়ারীর ঘটনার পর মেয়েটি তার মায়ের নিকট সব কথা খুলে বলেন বলে মামলার বাদী এ প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেন। এসব ঘটনা বর্ননা করতে গিয়ে আনোয়ার হোসেন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
তিনি আরও জানান, আমার মেয়ের উপর গত তিন বছর যাবত যেসব পাশবিক নির্যাতন চালায় মাহাবুব আলম এতদিন পর সেসব লোম হর্ষক ঘটনার মেডিকেল আলামত পাওয়া যাবেনা বলেই মামলায় আমি সেসব ঘটনা উল্লেখ করিনি। তবে তার মুখোশ উন্মোচন করতে আমি সেসব ঘটনাসমুহও পত্রিকায় তুলে ধরতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করছি।
এ বিষয়ে পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইন্চার্জ আবুল হাসনাত মানবকন্ঠকে বলেন, সাংাবদিকদের নিকট বাদী কি বলেছে তা পুলিশের জানার বিষয়না। বাদী থানায় যৌন নিপিড়ন ও উত্যক্ত করার অপরাধের অভিযোগে মামলা মামলা দায়ের করার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেন।