স্বামী ঘরে চৌকির নিচে ভিন্ন পুরুষ দেখে ফেলায় স্ত্রী লজ্জায় গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এই সময় পরকীয়া পুরুষ গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যা করতে চাইলে তাকে উদ্ধার করে পুলিশে দিয়েছে,জনতা। এ চাঞ্চল্যকর হূদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে দিনাজপুরের। কোতোয়ালি থানাধীন ২ নং সুন্দরবন ইউনিয়নের বেলবাড়ি গ্রামে।
দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,ওই গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন সাজুর আধাপাকা টিনের বসতবাড়ির ভিতরে তাঁর মায়ের শয়ন ঘরে তার স্ত্রী রাইসা আক্তার রূপন্তি (২১) আত্মহত্যা করেছে।
স্বামী সাজ্জাদ হোসেন সাজু বেলবাড়ি বাজার হতে ওয়াজ মাহফিল শুনে তার চাচাতো ভাই মঞ্জুরুলকে সাথে নিয়ে বাড়িতে আসে। বাড়ির মূল লোহার কেচি গেইট তালাবদ্ধ পায়। তখন সাজ্জাদ তার স্ত্রীকে দরজা খোলার জন্য ডাকলে তাঁর স্ত্রী রাইসা আক্তার রূপন্তি (২১) কোন সারা শব্দ না করায় তখন সাজ্জাদ তাঁর মোবাইল হতে স্ত্রীকে মোবাইলে ফোন করে। এতেও তার স্ত্রী ফোন রিসিভ না করে চুপ থাকে।কিছুক্ষণ পর স্ত্রী রুপন্তিভ ঘরের দরজা খুলে কেচি গেটের সামনে আসে ভিতর হতে স্বামী সাজ্জাদকে ১০০ টাকা দিয়ে বাচ্চার খেলনা গাড়ি কিনে একবারে বাড়িতে আসতে বলে। তখন সাজ্জাদ বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করার জন্য কেচি গেট খোলার জন্য রাগারাগি করলে এক পর্যায়ে তার স্ত্রী কেচি গেট খুলে দেয়। সাজ্জাদ তার শয়ন ঘরে ঢুকতে চাইলে তার স্ত্রী বাধা প্রদান করে। সাজ্জাদ জোর করে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে শয়ন ঘরের খাটের নিচে রেজাউল ইসলাম নামে একজনকে দেখতে পায়। স্ত্রী রাইসা আক্তার রূপন্তিকে স্বামী সাজ্জাদ হোসেন সাজু জিজ্ঞেস করে যে, রেজাউল ইসলাম তার শয়ন ঘরে খাটের নিচে কেন? এর সঠিক উত্তর না দিয়ে স্ত্রী রাইসা আক্তার রূপন্তি তার পাশের শাশুরীর শয়ন ঘরে গিয়ে লোহার দরজা লাগিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে সাজ্জাদ রেজাউলকে মারধর শুরু করলে মাথা ফেটে যায়। তখন সাজ্জাদ পাশের ঘর হতে তাঁর স্ত্রীকে বাহির হওয়ার জন্য বললে কোন সারা শব্দ না পেয়ে তার চাচাতো ভাইসহ লোহার দরজা ধাক্কা ধাক্কি করে। সাজ্জাদের চেঁচামেচিতে পাশের বাড়ির আতিকুর তার বাড়িতে প্রবেশ করে।এরপরও সাজ্জাদের স্ত্রী ঘরের দরজা না খুললে তারা দুরমুজ দ্বারা লোহার দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায় স্ত্রী রাইসা আক্তার রুপন্তী (২১) ঘরের সিলিং ফ্যানে সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। তখন সাজ্জাদ, মঞ্জুরুল ও আতিকদের মনোযোগ তার স্ত্রীর দিকে গেলে এই সুযোগে রেজাউল ইসলাম (১৯) সাজ্জাদের শয়ন ঘরের দরজা লাগিয়ে দেয়। তখন সাজ্জাদ অন্যান্যদের সাথে নিয়ে দ্রুত দূর-মুচ দিয়ে স্বয়ংঘরে দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে। তারা দেখতে পায় যে রেজাউল ইসলাম উক্ত ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে শাড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছে। সাজ্জাদসহ অন্যরা রেজাউলকে উদ্ধারের পর আটক করে রাখে। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হলে পুলিশ রাইসা আক্তার রূপন্তির মরদেহ উদ্ধার করে সুরত হাল শেষে ময়না তদন্তের জন্যে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
অন্যদিকে রেজাউলকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে আজ বুধবার দুপুরে জেল-হাজতে প্রেরণ করেছে।