ভারতের অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের কাজ খুব দ্রুতই শুরু হতে যাচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৫ আগস্ট অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এ মন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চিড় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
বিষয়টি নিয়ে সোমবার (২৭ জুলাই) ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা এ সম্পর্কিত খবরটির শিরোনাম করেছে, ‘রামমন্দির ঘিরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চিড় দেখছে বাংলাদেশ?’। অপর সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ কড়া শিরোনাম করেছে। তারা লিখেছে, ‘অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের ঠিক আগে ভারতকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিল বাংলাদেশ’। তবে উভয় গণমাধ্যমে প্রায় একই রকম তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
আনন্দবাজার, নিউজ১৮ ও দ্য হিন্দুর প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, রাম মন্দির নির্মাণের উদ্যোগের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া উচিত নয়, যা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্কে আঘাত করতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ৫ আগস্ট অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের সূচনা, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরোধীদের হাতে নতুন রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল। রাম মন্দির ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের এমন কোনও কাজ করা ঠিক নয়, যা বাংলাদেশের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব ও সম্পর্ককে নষ্ট করে দেবে।
দ্য হিন্দু-র প্রতিবেদনে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্যে বলা হয়েছে, তিনি বলেন, ‘আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আঘাত হানতে এই বিষয়টি (রাম মন্দির নির্মাণ) অনুমোদন করব না। তবু আমি এখনও ভারতের কাছে দাবি জানাচ্ছি, এমন কিছু যেন না-করে, যাতে ভারত-বাংলাদেশের সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। দু’পক্ষেরই উচিত কোনও রকম বিবাদ ও বিতর্ক হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকা।'
তবে সম্প্রতি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেলিফোনে কথা হয়েছে। তা নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক উড়িয়ে দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, একেবারেই সৌজন্যমূলক কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ে কথা হয়েছে। তবে ইমরান খান কাশ্মীর প্রসঙ্গে তুলেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ সে বিষয়ে চুপ ছিল। কোনও কথা বলেনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভারত 'টু-নেশন থিওরি'-র দিকে এগোচ্ছে। রাম মন্দির নির্মাণ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মানুষের ভাবাবেগে প্রভাব ফেলতে পারে।