নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে গ্রেফতার করেছে শিবপুর মডেল থানা পুলিশ। শনিবার (১১ জানুয়ারী) বিকেলে তাকে নরসিংদীর আদালতে প্রেরণ করেছে। আদালত জামিন মঞ্জুর না করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। শিবপুর থানা থেকে আদালতে নেওয়ার সময় দেখা যায় অন্যান্য আসামীর ন্যায় বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারের হাতে হ্যান্ডকাফসহ কোমড়ে রশি বাঁধা। হ্যন্ডকাপসহ রঁশি বাধা অবস্থায় আদালত প্রাঙ্গণ থেকে আবু ছালেক রিকাবদারের বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করে হাতে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে আবার কোমড়ে রশি দিয়ে বেধে আদালতে প্রেরণ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিবপুরের বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ, স্থানীয় রাজনীতিবিদগণ, সুশিল সমাজ ও সাধারণ জনগন। রাজনৈতিক মামলায় যে কেউ গ্রেফতার হতেই পারেন, কিন্তু তিনি কোন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, চোর-ডাকাত, কিংবা খুনিও নন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ফলে তাকে কেন হাতে হ্যন্ডকাফ পড়ানোর পরও কোমরে রশি বাধা হলো সেই প্রশ্ন এখন শিবপুরের সর্ব মহলে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মোতালিব খান বলেন, আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ভাবে কোমড়ে রশি বেধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে যাহা খুবই দু:খ জনক।
শিবপুর থানার যুদ্ধাকালীন কমান্ডার প্রফেসর আব্দুল মান্নান খান বলেন, আবু ছালেক রিকাবদার একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। তাকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করে হাতে হ্যান্ডকাফসহ কোমরে রঁশি বেধে ন্যাক্কার জনক কাজ করেছে। এতে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। আমি এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার দু:খ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মুহসীন নাজির বলেন, এটা খুবই দু:খ জনক। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ছালেক রিকাবদার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ওনাকে গ্রেফতারের বিষয়টি উপজেলা আওয়ামীলীগ অবগত নয়। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে হ্যান্ডকাফ পড়ানোর পরও কোমড়ে রশি বাঁধা হয়েছে যাহা খুবই লজ্জার।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশীদ খান বলেন, রাজনৈতিক মামলায় কাউকে গ্রেফতার করতেই পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে রাজনৈতিক মামলার কারণে হাতে হ্যান্ডকাফ থাকার পরও কোমড়ে রশি বাধা খুবই দু:খ জনক। আবু ছালেক রিকাবদার একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
একজন বীরমুক্তিযোদ্ধার কোমড়ে রশি বাধা সম্পর্কে জানতে চাইলে শিবপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, রাজনৈতিক মামলায় আবু ছালেক রিকাবদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে কোমড়ে রশি বাধার বিষয়টি আমার জানা নেই, তার সাথে যারা ছিল তারা বলতে পারবে।
উপজেলা বিএনপি ও পরিবার সূত্রে জানাযায়, শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) সারা দেশে বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচী পালন করেছে। আর এই কর্মসূচী শিবপুরে যাতে বাস্তবায় না হয় সে জন্যই আতংক সৃষ্টি করার লক্ষে শুক্রবার রাত ৯টারদিকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে শিবপুরের নিজ বাসার সামনে থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। থানা পুলিশ জানায়, পূর্বে আবু ছালেক রিকাবদারের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তাকে গ্রেফতার করেছে।