ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
ইউটিউব চ্যানেলের সুবাদে দিনাজপুর কাহারোলের কলেজ শিক্ষক সেলিম রেজা কমলা চাষে সফল উদ্যোক্তা
  • সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর
  • ২০২৩-০১-১৫ ১২:১৭:০৫

ইউটিউব চ্যানেলের সুবাদে দিনাজপুরের কাহারোলে কলেজ শিক্ষক সেলিম রেজা নিজস্ব মেধা আর কঠোর পরিশ্রমে মাত্র এক একর জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে কমলা চাষ করে এখন পুরোপুরি সফল কমলা চাষী হিসাবে আত্ম প্রকাশ করেছেন। 

গত ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসে ৪‘শ টি কমলার চারা বোপন করে এক বছরের মাথায় প্রতি কমলার গাছে থোকায় থোকায় কমলা এসেছে। যা দেখে মন ভরে যায়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারীতে প্রতিটি কমলার গাছে ফুল আসে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মসেই কমলা হারভেষ্টিং করেছেন। সঠিক পরির্চচায় কারনেই মাত্র এক বছর, ১০ মাসের মধ্যেই তিনি কমলার  হারভেষ্টিং করতে পেরেছেন। প্রতিটি কমলার গাছে চায়না জাতের কমলা থোকায় থোকায় ঝুলছে । যা দেখার জন্য প্রতিদিন তার কমলার বাগানে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা দেখার জন্য ভীর করছেন। প্রতিটি চায়না জাতের কমলা আকারে বেশ বড় ও সুমিষ্ট এবং দেখার মত রঙ হওয়ায় কমলার বাগানের পরিধি আরও ৫ একর জমি বৃদ্ধি করছেন।

দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার ৬ নং রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের সরনজা গ্রামের নিজবাড়ী পার্শ্বেই এক একর জমিতে প্রভাষক সেলিম রেজার কমলার বাগান । দুই বছর পূর্বে এক নিকট আত্মীয়র বাড়ীতে কমলার গাছে কমলা দেখে শখের বসে তিনি কমলা চাষ শুরু করেন । তার কমলার আশাতীত সাফল্য পাওয়ায় এখন অনেকে বাণিজ্যিকভাবে এগিয়ে আসছেন কমলা চাষে। 

সেলিম রেজার কমলার গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে গাছে-গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে ফিকে হলুদ রঙের সুস্বাদু মিষ্টি কমলা। বাতাসে কমলার টক-মিষ্টির গন্ধ চারদিক জড়িয়ে পড়ছে। প্রতিটি কমলার গাছে ২০ থেকে ২৫ কেজি কমলা ঝুলছে । ব্যবসায়ীরা কমলার বাগান থেকেই ১৫০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে । উৎপাদিত এসব কমলা স্বাদে মিষ্টি এবং আকারেও বড়। বাসা-বাড়ির আঙিনার পাশাপাশি ফসলি জমিতেও চাষ হচ্ছে কমলা। কমলা চাষ করে আশাতীত সাফল্য পাওয়ায় কমলার চাষ কৃষকদের মাঝে আশার সঞ্চারণ জাগিয়েছে।

কমলা চাষী সেলিম রেজা বলেন , ইউটিউব চ্যানেলের সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা থেকে কিছু কমলার চারা সংগ্রহ করি । এরপর আরোও কিছু কমলার চারা দেশের আরোও কয়েকটি অঞ্চল থেকে কমলার চারা সংগ্রহ করা হয়েছে । এর আগে কমলার জমি প্রস্তুত করা হয় । কমলার গাছে যেন পানি জমে না থাকে সে জন্য কমলার গাছ একটু উচু জায়গায় রোপন করা হয় । এরপর বাগানের চারদিক নেট দিয়ে বেড়া তৈরী করতে হয়েছে । নিজের কমপোষ্ট জৈব সার প্রয়োগ করেই উচু জমিতে কমলার কলম চারা রোপন করা হয়েছে  প্রথমবার কমলা চাষে সফল হওয়ায় কমলা চাষী সেলিম রেজা বলেন, নতুন করে দার্জিলিং কমলা, চায়না কমলা, পাকিস্থানী কমলা, ভুটানী কমলা ও শষা কমলা নিয়ে আরোও  ৫ একর জমিতে কমলা চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রভাষক সেলিম রেজার বাবা মাইনুল হক বলেন, প্রথম প্রথম আমি ধারনাও করতে পারিনি যে আমাদের এই জমিতে কমলার চাষ হবে । ছেলে কমলার চাষ করবেই জেদ ধরে পরে আমি এক একর জমি নিদিষ্ট করে দেই । সেই জমিতে সেলিম রেজা  নিজের মত করে জমি প্রস্তুত করে । নিদিষ্ট দুরুত্ব রেখেই কমলার চারা রোপন করে । যখন কমলার ফুল থেকে ফল আসে । কমলার ফল যখন বড় হতে থাকে । কমলার রঙ স্বাদ, রস, গন্ধ দেখে সত্যি আমি অভিভুত হয়ে যাই। কমলা খেয়ে আমি নিজেও বিশ্বাস হচ্ছে না যে এটা আমাদের বাগানের কমলা।

সেলিম রেজার  ছোট ভাই ডালিম রেজা ও জুয়েল পারভেজ বলেন , বড় ভাই সেলিম রেজার দিক নির্দেশনার কমলার বাগানে চারা রোপন, জৈব সার প্রয়োগ ও পরিচর্চার কাজ করছি। সত্যি এখন আমাদের বাগানের কমলা দেখে আমরাও অভিভুত হয়ে যাচ্ছি । আমাদের এই কমলা জেলার বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে । সত্যি আমরা এখন সেলিম রেজার ভাই পরিচয় দিতে পেরে গর্ব রোধ করছি।  

প্রতিবেশি অপু কুমার রায় বলেন , সেলিম রেজার এক একর জমিতে কমলার বাগান করায় আমাদের গ্রামকে এখন নতুন ভাবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। আমাদের  গ্রাম  এখন কমলার গ্রাম হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। রসে ভরপুর  কমলা খেয়ে আমির কমলার চাষ করতে আগ্রহী হয়ে পড়েিেছ। আমাদের  গ্রামে অনেকেই এখন সেলিম রেজার মত কমলা চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছে।        

প্রতিবেশি ওমর ফারুক রকি বলেন, সেলিম রেজার এই কমলার চাষ দেখে আমার মত অনেকেই এখন কমলার চাষে এগিয়ে এসেছে । সেলিম রেজার কমলার বাগানে যে পরিমান কমলা ধরেছে । যা দেখে যে কারও কমলার চাষে আগ্রহী হবেন।  

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ পরিচালক খালেকুর রহমান, দিনাজপুর ভৌগোলিক কারণে এ জেলায় কমলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। ৮ হেক্টর জমিতে জেলার এখন কমলা চাষ হচ্ছে । উপযুক্ত প্রশি¶ণের ব্যবস্থা করা গেলে বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে কৃষকরা সফলতা পাচ্ছে। ব্যাপক ভাবে কমলা উৎপাদন করা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমবে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে এবং দেশে উৎপাদিত কমলা দিয়ে পুষ্টির চাহিদা মেটানো হবে সম্ভব। 

পুলিশের অসাদাচরনের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
 শিশু রুকাইয়া রহমান আনহাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন
নীলফামারীর চিলাহাটিতে পেকিন হাঁস  পালন বিষয়ক খামার দিবস অনুষ্ঠিত